মণীশ কীর্তনিয়া, মালবাজার: মঙ্গলবার মালবাজারে স্বজনহারা পরিবারের সকলকে চাকরি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিলেন, এই ঘটনায় দোষীদের চরম শাস্তি হবে। শুধু কথা রাখা নয়, মাল নদীতে বিজয়া দশমীতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে স্বজনহারা ৮টি পরিবারের একজন করে ব্যক্তিকে সরকারি চাকরির অফার লেটার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মাল আদর্শ বিদ্যাভবনে সংক্ষিপ্ত প্রশাসনিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আরও একবার মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
আরও পড়ুন-শুরু থেকেই শামি, চিন্তা রোহিতের ফর্ম, আজ সামনে নিউজিল্যান্ড
একইসঙ্গে সরকারি চাকরি পেলেন ওইদিন ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধারকারী যুবকরাও (যাঁদের চাকরির প্রয়োজন)। উদ্ধারকারী অসমসাহসী যুবকরা প্রত্যেকে পেলেন ১ লক্ষ টাকার চেক ও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাহসিকতার শংসাপত্র, যা তাঁদের হাতে তুলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্ধারকারী যুবকদের মধ্যে যাঁরা চাকরি চেয়েছেন এদিন তাঁদের নিয়োগের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারের যাঁরা চাকরি পেলেন তাঁদের সকলেরই পোস্টিং হবে মাল সাবডিভিশনে, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মঙ্গলবার তিনি বলেন, রাজ্য সরকার তদন্ত করছে, মাল নদীতে দুর্ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে প্রশাসন তাকে কঠোর শাস্তি দেবে। এক্ষেত্রে কেউ ছাড় পাবে না, সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
মঙ্গলবার বেলা ১টায় মাল আদর্শ বিদ্যাভবনে জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে চাকরি দেওয়ার কাজ সারেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, উদয়ন গুহ, বুলুচিক বরাইক, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মহুয়া গোপ, মাল পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা সহ অন্যরা।
আরও পড়ুন-কাল ইস্টবেঙ্গলের সামনে নর্থইস্ট, পাসিকে আড়াল করেই চলেছেন কনস্ট্যান্টাইন
বিজয়া দশমীর দিন যাঁরা প্রবল জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া মানুষদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচিয়েছিলেন সেই ৭ যুবকের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের প্রশংসা করেন, ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে মালবাজারের আদিবাসী নাচের দলের সদস্যদের সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেন তিনি (৫৩ জন)।
মালবাজারে থাকার জায়গার অভাব। মুখ্যমন্ত্রী নিজে মহেশতলার বিধায়ক দুলাল দাসের কটেজে উঠেছিলেন। পরিস্থিতি বুঝে তিনি জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, কম খরচে ৫-৬টা রুমের কটেজ তৈরি করতে। আগামী তিন মাসের মধ্যে যাতে কটেজ তৈরি হয় জেলা প্রশাসনকে তার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া কাকদ্বীপ-গোসাবা-বাসন্তী-সন্দেশখালিতেও রাত্রিযাপনের জন্য কটেজ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, দুলালদা আমায় মেয়ের মতো ভালবাসেন। তাঁর স্ত্রী বেঁচে থাকতে বহুবার বলেছেন এখানে থাকতে। আসা হয়নি। এবার এসে থাকলাম। এখানে থাকার জায়গা কম। অফিসাররা এসেছেন। মেয়েরা তো আর রাস্তায় থাকতে পারে না। যদিও আমার সামান্য জায়গা হলেই চলে যায়।
আরও পড়ুন-জরাসন্ধের কালীর পুজো হয় নন্দকুমারের বংশধরদের হাতে
বাংলাকে না জানিয়ে সঙ্কোশ নদীর জল ছাড়া নিয়েও এদিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, একদিকে সিকিম-ভুটান-নেপাল। না জানিয়ে জল ছাড়ায় সমস্যা হচ্ছে। মুখ্যসচিবকে বলব এটা নিয়ে কথা বলতে।