মোয়ার শহরের মন জয় করে ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী

আবেগে ভাসছেন জয়নগরের জনতা৷ গঙ্গাসাগর থেকে কপ্টারে তিনি নামলেন মোয়ার জন্য বিখ্যাত জয়নগরের বহড়ুর দুর্গাপুরে।

Must read

নাজির হোসেন লস্কর জয়নগর: বাঁধভাঙা অপেক্ষা। আবেগে ভাসছেন জয়নগরের জনতা৷ গঙ্গাসাগর থেকে কপ্টারে তিনি নামলেন মোয়ার জন্য বিখ্যাত জয়নগরের বহড়ুর দুর্গাপুরে। মঞ্চের প্রায় এক কিমি দূরে অস্থায়ী এই হ্যালিপ্যাড। দীর্ঘক্ষণ ধরে যাঁর জন্য অপেক্ষা, সেই বাংলার রূপকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কপ্টার থেকে নেমে মঞ্চের উদ্দেশে রওনা দিলেন৷ ধৈর্যের অবসান।

আরও পড়ুন-গতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নীতি রাজ্যের

কুলপি রোডের দু’ধারে কাতারে কাতারে জনগণ হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাংলার মেয়ের ছোঁয়া পেতে৷ উৎসাহী মানুষের দিকে হাত নাড়তে নাড়তে তিনিও গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকলেন৷ রাস্তায় ছোট্ট শিশুকে দেখে আদর করলেন৷ বয়স্কদের দেখে একটু থমকালেন, জননেত্রীর মাথায় আশীর্বাদের হাত বাড়িয়ে দিলেন অশীতিপর৷ সুগন্ধে ম–ম করা মোয়ার আঁতুড়ঘরের রাস্তা ধরে প্রবেশ করলেন বহড়ুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠের অনুষ্ঠানে। এই মাটিতে ছেলেবেলা কাটিয়েছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মতো কিংবদন্তিরা৷ মঞ্চে প্রবেশের আগেই তিনি আদিবাসী নৃত্যে খানিক কোমর দুলিয়ে নেন৷ মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে পৌঁছতেই সভাস্থল থেকে উদ্বেলিত মানুষের কণ্ঠ ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে। ঢাকের আওয়াজ, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনির মধ্যে তাঁকে অভ্যর্থনা জানালেন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক আধিকারিকরা৷ ‘বাংলার জল, বাংলার মাটি…’ রাজ্য সঙ্গীত দিয়ে শুরু হল অনুষ্ঠান৷ পরিষেবা প্রদানে বাচ্চাদের হাতে টেডিবিয়ার, চকোলেট দিলেন খানিক মজা করে৷ মায়াময় হাতে উপভোক্তাকে পরিয়ে দিলেন চশমা৷ নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শুরু করলেন সম্ভাষণ৷ মঞ্চে উপস্থিত অতিথিদের পাশাপাশি জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের নাম মুখে নিতেই তাঁর সমর্থকরা চেঁচিয়ে উঠলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বাহ, বাহ খুব মজা, অন্যরাও আছে যে…৷ এদিন উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, দিলীপ মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি নীলিমা মিস্ত্রি বিশাল, জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত, সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী–সহ জেলার সমস্ত বিধায়ক, অন্য জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকরা৷

আরও পড়ুন-মালদ্বীপের ছবি পোস্ট করে বয়কটের ডাক! হাস্যকর কাণ্ড কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

এদিন জয় হো বলে জয়নগরের বিখ্যাত মোয়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সম্মানজ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। খোঁজ নিলেন কারা কন্যাশ্রী পাচ্ছে৷ প্রকল্পে সুবিধাপ্রাপ্তরা সভাস্থল থেকে হাত তুলে ইঙ্গিত দিলেন তাঁরা কন্যাশ্রী। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সারাজীবন পাবেন সেই বিষয়টিও মহিলাদের নিশ্চিত করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। জয়নগরের মানুষের কাছে আবদার করে খেতে চাইলেন জয়নগরের মোয়া, নলেন গুড়ও৷ জয় বাংলা, মা মাটি মানুষের জয়, মমতা বন্দোপাধ্যায় জিন্দাবাদ ধ্বনি শুনতে শুনতে মঞ্চ ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মানুষের মন জয় করে জয়নগর থেকে বের হলেন কলকাতার উদ্দেশে।

Latest article