সংবাদদাতা, হুগলি : সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের পথ ধরে এগিয়ে চলল মাহেশের রথ৷ মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে মহাপ্রভুর পূজা অর্চনা৷ ৫০ ফুট উঁচু ১২৫ টনের রথে সবমিলিয়ে ছিল ১২টি লোহার চাকা৷ তিনতলা রথের প্রতিটি তলে প্রাচীন ঐতিহ্যের সুস্পষ্ট প্রতিফলন৷ রীতি মেনে এবারও রথযাত্রার আগে বদলানো হয়েছে কাঠ৷ দেশের দ্বিতীয় প্রাচীনতম এবং বাংলার প্রাচীনতম এই রথযাত্রাকে ঘিরে এদিন সকাল থেকে ঢল নেমেছে মানুষের৷ পুরীর আদলেই মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে ধ্বজা লাগানো হয়৷
আরও পড়ুন-মহিষাদল রাজবাড়ির আকর্ষণ আম-কাঁঠাল মেলা
মাহেশের রথযাত্রা এবার ৬২৭ বছর পূর্ণ করল৷ বিকেল ৪টে নাগাদ বলরাম এবং সুভদ্রাকে নিয়ে জগন্নাথদেব রওনা দিলেন মাসির বাড়ি৷ তার আগে পুজো নিবেদন করলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মাহেশের রথের মেলা চলবে টানা একমাস৷ এই মন্দিরকে ঘিরে পর্যটন শিল্পও এবারে নিতে চলেছে এক নতুন মাত্রা৷ এই উপলক্ষে দূর-দূরান্তের মানুষ মাহেশে এসে উপস্থিত হন জগন্নাথ দেবের দর্শন করতে ও রথযাত্রা দেখতে। মন্দিরে প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার পুজো পর্ব চলে বেলা দুটো অবধি। তারপর বিকেল চারটে নাগাদ প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে নিয়ে মাহেশের সুবিশাল রথ জিটি রোড ধরে দেড় কিলোমিটার দূরবর্তী মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আরও পড়ুন-কাফলিং খুলে ট্রেন ছুটল ডালখোলায়
লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে রথের দড়িতে টান দেওয়া হয়। এদিন সাধারণ মানুষের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী থেকে অভিনয় জগতের মানুষরাও। এদিনের রথযাত্রা উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে জেলাশাসক, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের কমিশনার সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকরা দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছেন, প্রস্তুতি দেখে গিয়েছেন এবং মন্দির কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রশাসনিক সূত্র থেকে জানা যায়, প্রায় বারোশো পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে যাতে ৬২৭ বছরের মাহেশের রথযাত্রায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে এদিন পালিত হয় বিখ্যাত রথযাত্রা।