দেশের চার বাম দলকে সরাসরি চিনের দালাল বলে উল্লেখ করলেন প্রাক্তন বিদেশসচিব বিজয় গোখেল। ‘দ্য লং গেম: হাউ টু চাইনিজ নেগোশিয়েট উইথ ইন্ডিয়া’ নামে একটি বই লিখেছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব। ওই বইতে তিনি লিখেছেন, চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্যই ২০০৭ সালে ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছিল দেশের চার বামদল সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লক। এর পরিণতিতে ২০০৮-এর জুলাই মাসে তৎকালীন মনমোহন সিং সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল বামেরা। প্রাক্তন বিদেশসচিবের মতো দেশের শীর্ষস্তরের এক আমলার বইতে এধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য ও ব্যাখ্যায় স্বাভাবিকভাবেই তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি যথারীতি গোখেলের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
আরও পড়ুন-দু’বছরের বকেয়া স্কুল ফি-র ৫০ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে : হাইকোর্ট
গোখেল তাঁর বইতে লিখেছেন, ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই পরমাণু চুক্তি ছিল এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ২০০৫ সালে ইউপিএ- বাম সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়রের সঙ্গে তিনি একাধিক দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিল অসামরিক পরমাণু চুক্তি পুনর্নবীকরণ করার বিষয়টি। মনমোহন সিং ওই চুক্তি স্বাক্ষর করলে তার তীব্র বিরোধিতা করে বামদলগুলি। পরে কেন্দ্রের উপর থেকে সমর্থনও প্রত্যাহার করে বামেরা। আর জাতীয় রাজনীতিতে এই চাপ তৈরি ও বামেদের পদক্ষেপের পিছনে স্পষ্টভাবে ছিল চিনের ইন্ধন।
আরও পড়ুন-ঝাড়গ্রাম সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, যোগ দেবেন আদিবাসীদের অনুষ্ঠানে
উল্লেখ্য, মান্দারিন ভাষায় পারদর্শী গোখেল একসময় চিনে ভারতের রাষ্ট্রদূতের ভুমিকা পালন করেছেন তাই নয়, দেশের কূটনৈতিক মহল তাঁকে চিন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলেই মনে করে। দীর্ঘদিন তিনি চিন, তাইওয়ান সহ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করতেন। গোখেলের দাবি, বামেদের মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা সকলের কাছে পরিচিত। তবে, কেন এই বিরোধিতা, সে বিষয়ে বামেদের নিজেদের ধারণাও বোধ হয় খুব একটা স্পষ্ট নয়। মনমোহন সিংয়ের আগে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও। রাওয়ের আমেরিকা সফর নিয়েও তীব্র আন্দোলন করেছিল বামেরা। এমনকী, ২০০৭ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় বিল ক্লিনটন যখন ভারত সফরে এসেছিলেন সে সময়ও পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বামেরা।