মুর্শিদাবাদে তাঁকে সবাই বিড়ি কারখানার একজন গৃহবধূ হিসেবেই চিনতেন। ২০০৬ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর ছাত্রজীবন থেকে সোশ্যাল ওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। সেখান থেকে শুরু হয় মানুষের সেবা করার মানসিকতা। আর সেই কারণেই তাঁর রাজনীতিতে আসা। মা-মাটি-মানুষের সরকারের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মূল প্রেরণা। তাঁর আদর্শেই তৃণমূল কংগ্রেসের একজন একনিষ্ঠ সৈনিক রুবিয়া সুলতানা।
আরও পড়ুন-শাহের দলিত বিরোধী মনোভাব দেখেই বিজেপি ত্যাগের সিদ্ধান্ত, তেলেঙ্গানার নেতার ক্ষোভ
রাজনীতিতে প্রবেশ কীভাবে?
উঃ ২০১৮ সালে প্রথম জেলা পরিষদের সদস্য হই। তখন থেকেই রাজনীতিতে প্রবেশ।
দ্বিতীয়বার জেলা পরিষদের প্রার্থী-তালিকায় আপনার নাম ঘোষণা হওয়ার পর কেমন অনুভূতি হয়েছিল?
উঃ খুব ভাল অনুভূতি হয়েছিল। প্রথমেই মাথায় এসেছিল যে মানুষের দোয়া ও আশীর্বাদ কাজ করেছে।
জেলার আর কী কী উন্নয়ন করবেন?
উঃ আমাদের এখনও বোর্ড গঠন হয়নি। বোর্ড গঠন হওয়ার পর পুরো টিম নিয়ে আমি বসব। সার্বিকভাবে পুরো মুর্শিদাবাদ জেলায় কী কী কাজ করা যায় এবং সেগুলোর সমাধান একত্রভাবে আমরা করব এটাই ভেবে রেখেছি।
আরও পড়ুন-অশান্তি থামছেই না মণিপুরে, কুকি গ্রামে হামলায় হত ২
মুর্শিদাবাদ জেলার গঙ্গাভাঙন, পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যা রয়েছে। এগুলি কীভাবে সামলাবেন?
উঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগকে কখনও আটকানো যায় না। তবে হ্যাঁ, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন গঙ্গাভাঙনের জন্য। তবে আমরা যতটা পারব সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াব।
জেলায় একজন মন্ত্রী, ১৯ জন বিধায়ক, ২ জন সাংসদ, তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। কীভাবে সকলের মন জুগিয়ে চলবেন?
উঃ আমাকে ভাল কাজ করতে হবে। এবং তা যদি করতে যাই তাহলে বিধায়ক, সংসদ ও জেলা সভাপতিদের পরামর্শ প্রয়োজন হবে। কারণ ওঁরা আমার থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। ওঁরা ভালভাবে এই জেলাকে জানেন। এই জেলা ওঁদের নখদর্পণে রয়েছে। তাই ওঁদের পরামর্শ নিয়েই আমি আগামিদিনে চলব।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস
প্রথম দায়িত্ব কীভাবে দেখছেন? কী পরিকল্পনা?
উঃ পরিকল্পনা একটাই। জেলার সার্বিক উন্নয়ন। দায়িত্ব যখন পেয়েছি, সেই দায়িত্ব অবশ্যই পালন করব।
স্বামী ফারুক আহমেদ কীভাবে সাহায্য করেন?
উঃ সাহায্য তো করেনই। এই জন্যই গ্রামীণ সমাজ থেকে একজন বউ হওয়া সত্ত্বেও আজ রুবিয়া সুলতানা মুর্শিদাবাদ জেলার সভাধিপতি। স্বামীর ভূমিকা এক্ষেত্রে খুবই ভাল এবং সব সময় সাহায্য করেন।
রাজ্যে ফান্ড কম। সেক্ষেত্রে এত বড় জেলার কাজ কীভাবে করবেন?
উঃ মানুষের জীবনে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো তাে করতেই হবে। মানুষের স্বাস্থ্যের দিকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে।
২৬টি ব্লকের জন্য আলাদা আলাদা কী পরিকল্পনা করছেন?
উঃ আমার একটাই কথা, প্রতিটি ব্লকের সার্বিকভাবে উন্নয়ন।
আরও পড়ুন-যাত্রীদের নামাজের ব্যবস্থা করে বরখাস্ত : অপমানে আত্মঘাতী ইউপি-র বাসকর্মী
যাঁরা সহযোগী হবেন তাঁদের জন্য কী নির্দেশিকা থাকবে?
উঃ একে অপরের পাশে থেকে প্রত্যেককে সাহায্য করতে হবে।
উন্নয়নের ইস্যু নিয়ে বিরোধীরা কুৎসা ছড়াতে চায়, কীভাবে মোকাবিলা করবেন?
উঃ বিরোধীরা ওঁদের কথা বলবেন। সেই জন্যই তো ওঁরা বিরোধী। ওঁরা যদি বিরোধিতাই না করবেন, তাহলে তো ওঁরা বিরোধী হতেন না। তাই এটা মোকাবিলার কোনও ব্যাপার নেই। আমাদের কাজ আমরা চালিয়ে যাব।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য কী চিন্তাভাবনা করছেন?
উঃ ইতিমধ্যেই আমি সিএমওএইচের সঙ্গে আলোচনা করেছি। যেগুলো রুরাল হাসপাতাল আছে সেগুলো একইসঙ্গে পরিদর্শন করব। হাসপাতালের জন্য কিছু কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।
আরও পড়ুন-যাত্রীদের নামাজের ব্যবস্থা করে বরখাস্ত : অপমানে আত্মঘাতী ইউপি-র বাসকর্মী
কৃষকদের জন্য কী ভাবছেন?
উঃ ফসলের ন্যায্য প্রাপ্ত মূল্য তাঁরা পাবেন, ওঁদের যেভাবে সাহায্য করা যায় আমি করব।
বিগত বোর্ডেও আপনি জেলা পরিষদ সদস্য ছিলেন, এবার জেলার সভাধিপতির দায়িত্ব নিয়ে কী কী নতুন কাজ করবেন?
উঃ জেলার উন্নয়নকে ধরে রাখা এবং পড়ে থাকা কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার প্রধান লক্ষ্য।
আরও পড়ুন-বিশ্বভারতী-কাণ্ড: সুবিচার চেয়ে চিঠি নির্যাতিতা ৪ ছাত্রীর
দুই শিশুসন্তানের মা আপনি। সংসার আর জেলা সভাধিপতির গুরুদায়িত্ব কীভাবে পালন করবেন?
উঃ ছেলেমেয়ে একটু বড় হয়েছে, বুঝতে শিখেছে, বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন, অসুবিধা হয় না। সকালে বাড়িতেই থাকি। সেকেন্ড হাফে অফিস করি। দায়িত্ব যখন পেয়েছি ম্যানেজ হয়ে যাবে, আশা করছি।