অশান্তি থামছেই না মণিপুরে, কুকি গ্রামে হামলায় হত ২

নতুন করে অশান্ত মণিপুর। ফের সংঘর্ষে মৃত ২, আহত ৮। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সামাজিক মাধ্যমে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মৌনীবাবার ভূমিকাকে তীব্র কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, একদিকে অব্যাহত মণিপুরের হিংসা, অন্যদিকে অব্যাহত প্রধানমন্ত্রীর নিষ্ক্রিয়তা।

Must read

প্রতিবেদন : নতুন করে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর। চলছে গোলাগুলি, সংঘর্ষ। মঙ্গলবার রাতে মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুর জেলার মাঝে কোইরেনটাক অঞ্চলের কুকি অধ্যুষিত এক গ্রামে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। পাল্টা গুলি চালায় গ্রামরক্ষী বাহিনীও। গুলির লড়াইয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন-কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ মণিপুরের কুকি-জো গ্রামে হামলা করে দুষ্কৃতীরা। এলোপাথাড়ি গুলি চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী দল। পাল্টা গুলি চালায় গ্রামের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরাও। গুলিতে মৃত্যু হয় দু’জনের। তার মধ্যে ৩০ বছর বয়সি জাঙ্গমিনলুন গাঙ্গটে স্থানীয় বাসিন্দা। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

আরও পড়ুন-জলবায়ু পরিবর্তনে বড় সমস্যায় পানামা খাল, জোর ধাক্কা পড়ল বিশ্ববাণিজ্যে

এর আগে রবিবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোক তিনটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ওইদিনই রাত দুটো নাগাদ রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ডিরেক্টর কে রাজোর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা তিনটি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। যত্রতত্র জাতিবিদ্বেষের বৈরিতা থেকে এধরনের ঘটনা বারবার ঘটে চলেছে। রাশ টানতে পারছে না প্রশাসন। সংখ্যালঘু কুকি-জো সম্প্রদায়ের মানুষই বেশি আক্রমণের মুখে পড়ছেন। এদিকে, গত ৩ মে মণিপুরে অশান্তি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম বিধানসভার অধিবেশন বসে মঙ্গলবার। মাত্র ১১ মিনিটের অধিবেশনে শান্তি ফেরানোর জন্য আলোচনা এব‌ং সাংবিধানিক উপায়ে মীমাংসার পক্ষে প্রস্তাব পাশ করা হয়। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণে রাজধানী ইম্ফলে গিয়ে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেননি কুকি-জো গোষ্ঠীর ১০ বিধায়ক।

আরও পড়ুন-চাঁদের বুকে পা রেখে, সূর্যের দিকে চোখ

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই অশান্তির আগুন আর জাতিগত সংঘাতের সূচনা। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ভুক্ত কুকি, জো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতিদের সংঘর্ষে এখনও অশান্ত মণিপুর। ইতিমধ্যেই জাতিগত হিংসায় প্রায় দুশো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

Latest article