সাংসদদের টেনে-হিঁচড়ে বাসে তুলল বিজেপির পুলিশ

বিজেপির পুলিশের নির্লজ্জ হামলা তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের উপর।

Must read

প্রতিবেদন : বিজেপির পুলিশের নির্লজ্জ হামলা তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের উপর। দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরের বাইরে সাংবাদিক বৈঠকের পর ৪ এজেন্সি কর্তাকে সরানোর দাবিতে কমিশনের দফতরের বাইরে তৃণমূলের ১০ সদস্যের দল ২৪ ঘণ্টার ধরনা শুরু করলে মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ হামলা চালায় সেখানে। টেনে-হিঁচড়ে তাঁদের বাসে তোলা হয়। সাংসদ সাগরিকা ঘোষকে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় বাসে।

আরও পড়ুন-ধর্মনিরপেক্ষতা এখন কোথায়! সংখ্যাগুরুর দাপটে কাঁপছে শিক্ষা

দোলা সেন, ডেরেক ও’ব্রায়েনদেরও কার্যত চ্যাংদোলা করে বাসে তোলা হয়। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। বাসে করে প্রথমে এক ঘণ্টারও বেশি দিল্লির রাস্তায় ঘোরানো হয় তাঁদের। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরমার্গ থানায়। দলের নির্দেশে থানার ভিতরেই ধরনায় বসে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। নিরপেক্ষতার স্বার্থে ইডি, সিবিআই, এনআইএ এবং ইনকাম ট্যাক্স— এই ৪ কেন্দ্রীয় এজেন্সির প্রধানদের অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার তৃণমূলের ১০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল দিল্লির নির্বাচন সদনে গিয়ে এই দাবি জানায়। মোদি সরকার যে নির্লজ্জভাবে ভোটের মুখে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে এই ৪ কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করে চলেছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। এরপরেই বাইরে বেরিয়ে এসে ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে ধরনায় বসে পড়েন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ দোলা সেন এবং অন্যদের। তার আগে নির্বাচন কমিশনের বেঞ্চে তাঁরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে কীভাবে স্থানীয় থানায় আগাম না জানিয়েই গভীর রাতে ভূপতিনগরে বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে মহিলাদের সঙ্গে অভব্যতা করেছে এনআইএ। রাত ৩টে-সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিযান চালিয়ে পুলিশকে জানিয়েছে ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ। তৃণমূলের প্রশ্ন, ২০২২-এর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪-এর নির্বাচনের আগে হঠাৎ এই হানাদারি কেন এনআইএ-র?

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

এদিন স্মারকলিপি পেশ করে বেরিয়ে এসেই নির্বাচন সদনের সামনে ২৪ ঘণ্টার ধরনা-আন্দোলন শুরু করে দেন তাঁরা। দ্রুত পুলিশবাহিনী ছুটে এসে ধরনায় বসা আন্দোলনকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাপক ধস্তাধস্তি বেধে যায়। এদিন টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়েও কমিশনের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে কয়েকদিন আগে আচমকা টর্নেডোয় যে ১০০০-২০০০ ঘরবাড়ি ধুলোয় মিশে গিয়েছে, আশ্রয়হারা হয়েছে অজস্র পরিবার সে-ব্যাপারেও কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন কমিশনের বেঞ্চকে জানান, সেই রাতেই শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছে গিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু নির্বাচনের আগে মডেল কোড অফ কনডাক্ট চালু থাকায় দুর্গতদের জন্য নতুন ঘর তৈরি করা যাচ্ছে না। মানবিকতার খাতিরে আশ্রয়হীনদের দ্রুত পুনর্বাসনের জন্য গৃহনির্মাণে এই নির্বাচনবিধিতে কিছুটা ছাড় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় কমিশনকে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখেল, সাগরিকা ঘোষ, বিধায়ক বিবেক গুপ্ত, প্রাক্তন সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, অর্পিতা ঘোষ, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সুদীপ রাহা।

Latest article