নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : সরকারপক্ষের সাংসদদের বিক্ষোভের জেরেই বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে লাগাতার অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে সংসদের উভয় কক্ষে। বিজেপি সাংসদরা পরিকল্পিতভাবে সভা ভণ্ডুল করে দিচ্ছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য, নানা ইস্যুতে বিরোধীদের কড়া প্রশ্নবাণ এড়িয়ে যাওয়া। যাতে অপ্রিয় প্রশ্নের জবাবদিহি করতে না হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের সমস্যা সংসদে তুলে ধরা যাচ্ছে না। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও সাংসদ সৌগত রায়। তাঁদের অভিযোগ—
আরও পড়ুন-আসন্ন ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাসের সতর্কতায় বৈঠকে অরূপ বিশ্বাস
দুই কক্ষের কোনওটিতেই ২০১৬ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নের উত্তর দেননি। অধিকাংশ বিল স্ট্যান্ডিং কমিটিতে যায় না। বিল এলে আলোচনা ছাড়া পাশ হয়ে যায়। এতদিন নেপথ্যে থেকে সংসদ বানচাল করত সরকার। এখন তা করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। সব সংসদীয় রীতিনীতি ভেঙে সংসদকে ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে পরিণত করার ভয়ঙ্কর চেষ্টা। এলআইসি, এসবিআই এবং আদানি নিয়ে তদন্ত চায় না কেন্দ্র। মোদি সরকার আদানিকে রক্ষা করতে চায়। ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, আমরা বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে তারা নিজেদের রাজ্যে আদানি গোষ্ঠীর অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করে৷ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ডেরেক জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত নেবে রাজ্য সরকার৷ তাঁর প্রশ্ন, ১৪০ কোটি মানুষের টাকা লুট করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে সিবিআই, ইডিকে কে আটকাচ্ছে?
আরও পড়ুন-মধ্যপ্রদেশে ৩৯ লক্ষ বেকারের মাঝে ২১ জনের চাকরি, জনপ্রতি খরচ ৮০ লক্ষ, তুলোধনা তৃণমূলের
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সাংসদ সৌগত রায় স্পষ্ট করে দেন, বারবার নিজেদের জোটসঙ্গী বদল করা কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, কংগ্রেস পার্টির লেটার হেডে আমাদের পক্ষে সই করা সম্ভব নয়। কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের নীতিগত লড়াই চলছে। বাংলায় কুস্তি আর দিল্লিতে দোস্তি এই নীতি নিয়ে চললে কংগ্রেসের সঙ্গে থাকা যায় না, স্পষ্ট মত তৃণমূল কংগ্রেসের।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের দেওয়া নোটিশ খারিজ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন-পথ হারিয়েছিল, পরীক্ষার্থীকে উদ্যোগ নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছল হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ড
সেই প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেন, আমি কয়েকদিন আগে একটি চিঠি দিয়েছিলাম লোকসভার স্পিকারকে। কেন্দ্রীয় এজেন্সি কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের হেনস্তা করার অভিযোগে। আমাকে সংসদ থেকে বলা হল, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, এই নোটিশ দেওয়া যাবে না। আমি আমার দীর্ঘ সংসদীয় জীবনে এমনটা দেখিনি বা শুনিনি যে একটা নোটিশ দেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ওপর সেন্সর করার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সাংসদরা। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা, সংসদ চালানোর দায় সরকারপক্ষের, বিরোধীদের নয়।
আরও পড়ুন-জমি বিবাদের জের, বুলডোজার চালিয়ে ফসল নষ্ট মধ্যপ্রদেশ পুলিশের
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এলআইসি, এসবিআইয়ে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের টাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়ান তৃণমূলের দুই সাংসদ। তৃণমূলের আশঙ্কা, এলআইসি, এসবিআই এবং আদানি নিয়ে তদন্ত করবে না কেন্দ্র। সেই জন্যই প্ল্যান করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।