নজরে প্রথম পক্ষের স্ত্রী, বিমার টাকা হাতাতেই কি খুনের ছক, বয়ানে অসঙ্গতি, গ্রেফতার রিয়ার স্বামী

পাশাপাশি প্রকাশের বাজারে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা দেনা পড়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেই সে রিয়ার টাকা নিয়ে একটি চার চাকার গাড়ি কেনে।

Must read

সংবাদদাতা, হাওড়া : দীর্ঘ জেরার পর ঝাড়খণ্ডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রিয়া কুমারী ওরফে ঈশা আলিয়াকে(৩০) খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামী প্রকাশ কুমারকে গ্রেফতার করল বাগনান থানার পুলিশ। প্রকাশের কথাবার্তায় প্রথম থেকেই বিস্তর অসঙ্গতি ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ জানিয়েছিল দুষ্কৃতীরা তাদের ঘিরে ধরে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে গাড়ি থেকে নেমে এসে বাধা দেন রিয়া। তখনই দুষ্কৃতীরা রিয়াকে খুব কাছ থেকে গুলি করে।

আরও পড়ুন-হলদিয়া ও পটাশপুরে সমবায় ভোটে জয়ী তৃণমূল

কিন্তু পুলিশ গুলির খোলটি গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার হয়। যা প্রকাশের বয়ানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এরপর বুধবার রাতে রিয়ার বাড়ির লোকেরা বাগনানে এসে প্রকাশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা ইউটিউবার রিয়া প্রকাশের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ছিলেন। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সারদার সঙ্গেও প্রকাশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। প্রকাশের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর বাবা-মা তার সঙ্গে থাকত। এই নিয়ে রিয়ার সঙ্গে প্রকাশের অশান্তি চলছিল। রিয়া তাঁদের আড়াই বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকতেন। রিয়ার নামে কোটি টাকা মূল্যের বিমা ছিল। সেই টাকা হাতানোর ছক কষেছিল প্রকাশ।

আরও পড়ুন-ভাঁওতার নাম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস

পাশাপাশি প্রকাশের বাজারে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা দেনা পড়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেই সে রিয়ার টাকা নিয়ে একটি চার চাকার গাড়ি কেনে। সেই গাড়িতেই তারা কলকাতায় আসছিল। এই গাড়ি কেনা নিয়েও তাদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। রিয়ার দাদা অজয় রানা জানান, ‘‘কিছুদিন আগে প্রকাশ ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী রিয়াকে খুনের হুমকি দিয়েছিল। তাকে মারধরও করত প্রকাশ। কলকাতায় নিয়ে আসার নাম করে প্রকাশই পরিকল্পিতভাবে রিয়াকে খুন করেছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাড়ি থেকে ৪০০ কিমি দূরে হাইওয়ের ধারে রিয়াকে খুনের পরিকল্পনা সম্ভবত কোনও ওয়েব সিরিজ দেখে নিয়েছিল প্রকাশ। তবে রিয়াকে যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রকাশ গুলি করেছিল সেটি এখনও পায়নি পুলিশ। প্রকাশ একাই পুরো খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে নাকি কোনও সুপারি কিলারের সাহায্য নিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশকে হাওড়া আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে শিশুকন্যাকে রিয়ার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরই সঙ্গে প্রকাশের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও তার বাবা-মায়ের কী ভূমিকা ছিল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হাওড়ার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া জানান, ‘‘প্রকাশই এই ঘটনার মূল চক্রী বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তদন্তে বেশ কিছু সূত্র হাতে এসেছে।”

Latest article