বিশ্বের দূষিততম শহর দিল্লি, লকডাউনের প্রস্তাব দিয়ে ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট

দেশের রাজধানী দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এই বিপজ্জনক চিত্র উঠে এসেছে।

Must read

নয়াদিল্লি : দেশের রাজধানী দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এই বিপজ্জনক চিত্র উঠে এসেছে। এই সমীক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ১০টি শহরের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম নামটিই দিল্লির। আইকিউ এয়ার নামে সুইজারল্যান্ডের আবহাওয়াবিদদের একটি দল গবেষণা চালিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। গবেষণা সংস্থাটি রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য, আক্রান্ত তৃণমূল

দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত দূষণ নিয়ে শনিবার গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এরজন্য প্রয়োজনে রাজধানী দিল্লিতে দু’দিন লকডাউনের চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদলত।

প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না কটাক্ষের সুরে বলেছেন, দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, এখন বাড়ির ভিতরেও মাস্ক পরে থাকতে হচ্ছে। দূষণ যেভাবেই হোক, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে দু’দিনের জন্য লকডাউনের কথা ভাবুন। দূষণ রোধে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার জন্য কেন্দ্রকে বলেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন-Potato in Cold Storage: আলুর দর কমাতে হিমঘর খালি করার নির্দেশ

সুপ্রিম তোপের পর দিল্লি সরকারের ঘোষণা : সোমবার থেকে ৭ দিন বন্ধ স্কুল। সরকারি, বেসরকারি সংস্থার কাজ হবে অনলাইনে বাড়ি থেকে।

এদিন শীর্ষ আদালতে একটি শুনানি ছিল। শুনানিতে দিল্লি সরকার ও কেন্দ্র দূষণের জন্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের দায়ী করেন। দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছিল। দূষণ সম্পর্কে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কৃষকদের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করলে রুখে দাঁড়ান প্রধান বিচারপতি রামান্না।

আরও পড়ুন-নগরপালের ছবি নিয়ে প্রতারণা

তিনি বলেন, সব ব্যাপারে কৃষকদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দেওয়াটা যেন একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। আপনারা এমনভাবে বলছেন তাতে মনে হচ্ছে, শুধু ফসলের গোড়া পোড়ানোর কারণেই দিল্লির বাতাস দূষিত হয়েছে। যানবাহনের ধোঁয়া, বিভিন্ন কলকারখানা থেকে নির্গত বায়ু, এমনকী, বাজি পোড়ানোর কারণেও যে দূষণ হয়েছে সেটা কেউ বলছেন না। বাজির উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।

আরও পড়ুন-Bus Issue: সিএনজিতে বাস চালানোর উদ্যোগ

দীপাবলির সময় সেই নিষেধাজ্ঞা সকলে মানছে কি না তা আদৌ দেখেনি পুলিশ। কাজেই দিল্লির দূষণের জন্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনও সমানভাবে দায়ী। একই সঙ্গে এদিনের শুনানিতে বেঞ্চ জানায়, রাজধানীর বাতাসে গুণমানের মাত্রা কীভাবে ২০০ পয়েন্ট নামিয়ে আনা যাবে অবিলম্বে তার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে দু’দিনের লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে বলে বেঞ্চ জানায়।

তিন বিচারপতির বেঞ্চ আরও বলে, দেখেশুনে মনে হচ্ছে কেন্দ্রের কাজ হল শুধুমাত্র অন্য রাজ্যকে দায়ী করা। অন্যকে দায়ী না করে প্রথমেই দিল্লি প্রশাসনের উচিত, গোটা বিষয়টির উপর নজর দেওয়া। দিল্লি ও কেন্দ্র উভয় সরকারের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, আগামী সোমবার ১৫ নভেম্বর এই মামলার শুনানি হবে।

Latest article