প্রতিবেদন : সামশেরনগরে ঝিঙাখালি রিজার্ভ ফরেস্ট লাগোয়া বনবিবির মন্দিরকে কেন্দ্র করে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের এই প্রান্তকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে হোমস্টে তৈরির কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদীকে সামশেরনগরের বনবিবি মন্দির পাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এই অঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজার কথা ঘোষণা করেন তিনি। অবিলম্বে এখানে বাসের সংখ্যা বাড়াতে বলেন।
আরও পড়ুন-নদীভাঙন : মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে সাড়া দিয়ে সর্বদল যাবে দিল্লিতে
মঙ্গলবার সকালে ডুমুরজলা থেকে হেলিকপ্টারে বসিরহাট পুলিশ জেলার সামশেরনগর হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে যান মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রীড়া ময়দানের সভায় যোগ দেওয়ার আগে বনবিবি মন্দিরে গিয়ে শাড়ি, ধুতি, ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। করেন বৃক্ষপুজোও। ছিলেন বসিরহাটের সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহান, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারের দুই বউ এসেছিলেন। তাঁরাও বনবিবির মন্দিরে পুজো দেন।
আরও পড়ুন-দুয়ারে সরকারের প্রশংসায় ইউনিসেফ
এরপর সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দারা হোমস্টে চালু করলে রাজ্য সরকার সাহায্য করবে। পর্যটকরা আসবেন। রোজগার বাড়বে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই পাহাড় থেকে সমতল— বিভিন্ন জায়গায় হোমস্টে চালুর বিষয়ে রাজ্য সরকার সাহায্য করেছে। এবার সুন্দরবনেও সেই পরিষেবা চালু করতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এইসব এলাকায় হোমস্টে চালু করুন। নিজেদের বাড়ির একট ঘর ছেড়ে দেবেন। সেখানে বায়ো-টয়লেট থাকবে, খাট থাকবে, টিভি থাকবে। হোমস্টে করুন সরকার টাকা দেবে। সুন্দরবনের উন্নয়নের জন্য তিনি কেন্দ্রের কাছে একটি মাস্টার প্ল্যান পাঠাচ্ছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে নদীভাঙন রোখা যায়, কী করে এই অঞ্চলের উন্নয়ন করা যায়— সবই থাকছে তাঁর মাস্টারপ্ল্যানে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন তা কয়েকদিন আগে থেকেই হিঙ্গলগঞ্জবাসী জেনে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই জনতা ভিড় করতে শুরু করে সামশেরগঞ্জের হেলিপ্যাড মাঠ থেকে শুরু করে বনবিবির মন্দির চত্বরে। পশ্চিমবঙ্গের শেষ প্রান্তে এর আগে কখনও কোনও মন্ত্রীর পা পড়েনি। সেই এলাকায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন, ফলে কালীতলা পঞ্চায়েতের ১৫ হাজার বাসিন্দা তো বটেই হিঙ্গলগঞ্জের সামশেরনগর-হেমনগর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল তুঙ্গে। মহিলারা সকাল থেকে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাগতম’-সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর সভায় তো তিলধারণের জায়গা ছিল না। এই অঞ্চলের মানুষকে তিনি বলেন, আমাদের সরকার উন্নয়নের সব কাজ করছে। কিন্তু আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে ৫০ লক্ষ বাড়ি রেডি আছে। এ-বছর ১১ লক্ষ দিচ্ছি। আগামী বছর আরও ১৭ লক্ষ দেব। বনবিবির মন্দিরটা পাকা হয়ে গেলে তিনি আবার হিঙ্গলগঞ্জ যাবেন বলে আশ্বাস দেন।