ভরাডুবির সতর্কতা সংঘের, মোদি–ম্যাজিক আর হিন্দুত্বের ভরসায় থাকলে লোকসভার যুদ্ধজয় সম্ভব নয়

তাই আগামিদিনে ক্ষমতা ধরে রাখতে গেলে বিজেপিকে অবিলম্বে তার কৌশল পাল্টাতে হবে। নাহলে ২০২৪-এর ভোটে বিপদে পড়বে দল।

Must read

প্রতিবেদন : কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, মোদি ম্যাজিক ব্যর্থ। চড়া সুরে হিন্দুত্বের তাস খেলেও মিলছে না ফায়দা। এই কৌশল চালাতে থাকলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। এটা কোনও বিরোধী দলের দাবি নয়, এই মতামত জানিয়েছে বিজেপির পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ।

আরও পড়ুন-কটক হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেডিক্যাল টিমকে ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীর

আরএসএসের তরফে স্পষ্ট সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সামনের বছর লোকসভা ভোট শুধু মোদির ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ব্যবহার করে এবং চড়া সুরে হিন্দুত্বের প্রচার করে জেতা যাবে না। দল যদি অবিলম্বে এই বিষয়ে সচেতন না হয় তবে কপালে দুঃখ আছে। আরএসএসের তাত্ত্বিক মুখপত্র তথা সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন অর্গানাইজারের এক প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে একথা বলা হয়েছে। সংঘের মুখপত্রে যেভাবে মোদি ম্যাজিক জোলো হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন। বিজেপি নেতাদের বাগাড়ম্বরের ফানুস ফুটো হয়ে গিয়েছে সংঘের তাত্ত্বিকদের কলমেই। তবে এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে রেহাই মিলতে পারে অর্গানাইজারের প্রতিবেদনে সেই বিকল্পেরও হদিশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যে রাজ্যে শক্তিশালী আঞ্চলিক নেতৃত্ব এবং ক্ষমতাসীন রাজ্যগুলিতে সুশাসনের পথেই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।

আরও পড়ুন-ট্রাক্টরে রোড শো করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জনজোয়ার হরিপাল-তারকেশ্বরে

কর্নাটকের উদাহরণ টেনে বলা হয়েছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা উচ্চগ্রামে দুর্নীতি-বিরোধী প্রচার করলেও কর্নাটকে নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে নিরুত্তর ছিলেন। তাই দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী মাটি কামড়ে টানা প্রচার করেও জয় হাসিল করতে পারলেন না। জনমতের এই প্রবণতাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, রাজ্যগুলিতে শক্তিশালী দল অথবা জনপ্রিয় প্রশাসন না থাকলে কী হাল হতে পারে! কর্নাটকের প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস এই কাজটাই করে দেখিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যে বিজেপি দলের শীর্ষ নেতাদের সামনে রেখে জাতীয় স্তরের বিষয়গুলি নিয়েই প্রচার চালিয়েছিল। উল্টোদিকে কংগ্রেস বাস্তবসম্মতভাবে রাজ্যের সমস্যাগুলি তুলে ধরে মানুষের সামনে। জনগণের কাছে বিরোধীদের প্রচার কৌশলই বাস্তবসম্মত মনে হয়েছিল। প্রচারে হাইকমান্ডের পরিবর্তে কংগ্রেস দলের রাজ্যস্তরের নেতাদের উপরে ভরসা রেখেছিল। সে কারণেই এবার তাদের ভোটও বেড়েছে।

আরও পড়ুন-ব্রহ্মপুরে এক্সপ্রেস ট্রেনে ধোঁয়া, বিপাকে যাত্রীরা

সংঘের মুখপত্রে আরও বলা হয়েছে, কর্নাটক বিজেপির ভয়ঙ্কর দুর্নীতি তাদের পরাজয়ের বড় কারণ। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা ও মন্ত্রীদের মানুষ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। মানুষের আস্থা অর্জনে পুরোপুরি ব্যর্থ বিজেপি। চড়া দাগের ধর্মীয় প্রচার, জাতপাতের রাজনীতি এবং কটু ভাষাও মানুষ মেনে নেয়নি। কর্নাটকে প্রচারে বিজেপি উত্তর-দক্ষিণ যে বিভাজনের তাস খেলার চেষ্টা করেছিল সেটা শেষমেশ বিপক্ষে গিয়েছে। তাই আগামিদিনে ক্ষমতা ধরে রাখতে গেলে বিজেপিকে অবিলম্বে তার কৌশল পাল্টাতে হবে। নাহলে ২০২৪-এর ভোটে বিপদে পড়বে দল।

Latest article