ইতিহাসের সাক্ষী থাকল দেশবাসী। ঠিক দুপুর ২টো ৩৫ মিনিট নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিল চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) । প্রায় ৪০ দিন পর অর্থাৎ আগামী ২৩ থেকে ২৪ অগাস্টের মধ্যে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারে চন্দ্রযান-৩।
সব ঠিক থাকলে, চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) পালকের মতোই সফ্ট ল্যান্ড করবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর আঁধার পিঠে, কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ হবে না, এমনটাই দাবি করেছে ইসরো (ISRO)। নাসা যেমন তাদের আর্টেমিস মিশন নিয়ে হইচই করছে, ইসরোর অন্দরেও তেমনই তৃতীয় চন্দ্রযাত্রা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। মিশন-৩ এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা।
২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan 2) অভিযানে রোভার-সহ বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি চাঁদে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ২০১৯ সালের অভিযানে পাঠানো অরবিটরটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। সেই কারণে এ বারের অভিযানে চাঁদের কক্ষপথে ইসরো আর কোনও অরবিটার পাঠায়নি। চাঁদের বুকে নেমে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারের সাহায্য নেবে এ বার চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার।
আরও পড়ুন: ভারতকে তেলের দামে ছাড় দিতে রাজি নয় রাশিয়া
চন্দ্রযান-২ অভিযানের তিনটি অংশ ছিল, অরবিটার (যা কক্ষপথে পাক খায়), ল্যান্ডার (যা মাটিতে অবতরণ করে এবং এক জায়গায় থিতু হয়) এবং রোভার (যন্ত্রচালিত গাড়ি)। সূত্রের খবর, চন্দ্রযান-৩ অভিযানে অরবিটার থাকছে না। শুধু ল্যান্ডার এবং রোভার থাকবে। সেগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। চন্দ্রযান ৩-এর প্রযুক্তিতে কী কী বদল আনা হয়েছে সেই ব্যাপারে এখনও সবটা জানাননি ইসরোর গবেষকরা। শোনা গেছে, তৃতীয় চন্দ্রযাত্রার উদ্দেশ্যও হতে পারে চাঁদের আঁধার পিঠ অর্থাৎ দক্ষিণ মেরুর রহস্যের খোঁজ। এই দক্ষিণ মেরুরই কোথাও হারিয়ে গেছে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চন্দ্রযান ৩ চাঁদের সেই রহস্যময় পিঠেরই গোপন কথা সামনে আনবে।
এবারের চন্দ্রযানে মোট ১৩টি ‘থ্রাস্টার’ রয়েছে, যা সফট ল্যান্ডিং করতে সাহায্য করবে। জ্বালানি সহ মহাকাশযানটির ওজন প্রায় আড়াই হাজার কেজি। জ্বালানিশূন্য অবস্থায় সেটির ওজন ৫০০ কিলোগ্রামে নেমে আসবে। তাতে থাকবে বিশেষ ক্যামেরা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি। অবতরণস্থল থেকে যদি ল্যান্ডার সরেও যায় তাহলেও যাতে তার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় থাকে সেই প্রযুক্তিও দেওয়া হচ্ছে।