কলকাতার মামলা হঠাৎ কেন দিল্লি গেল

Must read

অপরাজিতা সেন: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন। সোমবার দিল্লিতেই তাঁর ইডি দফতরে যাওয়ার কথা। বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির চিত্রনাট্যে ভিত্তিহীন অভিযোগের উপর দাঁড়িয়ে অভিষেককে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ষড়যন্ত্র অভিষেক জানেন। তবু আইন মেনে তিনি ইডি দফতরে যাবেন। এখনও পর্যন্ত এই সূচিই চূড়ান্ত।
ইডির এই দিল্লি অফিসে তলব নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন আছে।

অভিযোগ মিথ্যা। বিজেপির নির্দেশে ইডিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু কথা হল, যে মামলাটি ছিল কলকাতা জোনের, ইডির অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তে সেই মামলা দিল্লিতে সরানো হল কেন? কেন অভিষেকদের দিল্লি অফিসে দেখা করতে বলা হয়েছে? যে আঞ্চলিক দফতরের আওতায় থাকার কথা, সেটি বদলে গেল কার কথায় এবং কেন? শুধু মিথ্যা অভিযোগই নয়, এই মামলার ঠিকানা বদলটাও একটি বড় রহস্য। যার উদ্দেশ্য অনুমান করা কঠিন নয়।

আরও পড়ুন- কৃষক মহাপঞ্চায়েতে উত্তাল মুজফ্ফরনগর, ২৭ শে ভারত বন্‌ধ

আইনজীবীদের মতে, অভিষেক এই পরিস্থিতিতে দুটি আইনি পদক্ষেপ নিতে পারতেন।
এক, জুরিসডিকশন চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হতেন।
দুই, চক্রান্তের গভীরতা আন্দাজ করে আগাম জামিনের আবেদন করতে পারতেন।
কিন্তু, এই দুটির কোনওটিই করেননি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
যেহেতু এই নোটিশ বা মিথ্যা অভিযোগের মামলা পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তাই ঝুঁকি থাকলেও দুঃসাহসিকভাবে রাজনৈতিক সচেতনতা দেখিয়েই মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
সশরীরে সটান ইডি দফতরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আরও পড়ুন-মানুষ এলাকাছাড়া, বেড়ালদের দখলেই চলে গিয়েছে জাপানের এই দ্বীপ

একদিকে আইনি পথে লড়বেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের স্পিরিট দেখাবেন।
ইস্পাতকঠিন স্নায়ুর পরিচয় দিয়ে শনিবার, এমনকী রবিবারও দলীয় এবং সাংগঠনিক কাজ, পরের পর বৈঠক করে গিয়েছেন তিনি।
বাংলার ভোটের আগেই বিজেপি বুঝে গিয়েছিল জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য সেনাপতি হিসেবে লড়াই করছেন অভিষেক। ফলে তখন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা এবং এজেন্সি দিয়ে চাপ শুরু। এতে ইন্ধন দিয়েছে বিশ্বাঘাতক কুলাঙ্গার দু-একজন দলবদলু। আবার এই ব্যক্তিকুৎসার বিরোধিতা করেছেন বিজেপিতে যাওয়া কেউ কেউ, সেই খবরও আছে। অভিষেককে এসব করে ভয় দেখানো যায়নি। তিনি অন্যায় করেননি। ভয় পাবেন কেন?
এখন ভোটের পর পরাজয় হজম করতে পারছে না বিজেপি। তার উপর ত্রিপুরা-সহ অন্য একাধিক রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস যে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে পা রাখছে এবং দ্রুত বাড়ছে, তা নিয়ে বিজেপি উদ্বিগ্ন। তারা অবিলম্বে অভিষেককে ঠেকাতে চায়। রাজনৈতিকভাবে না পেরে এখন এজেন্সির অপব্যবহার করছে তারা। অভিষেক, তাঁর স্ত্রী, পরিবার, ঘনিষ্ঠবৃত্তের উপর অন্যায়ভাবে চাপ দিচ্ছে। তৃণমূলের সক্রিয় নেতাদের হেনস্তা করে আইনি জালে জড়াচ্ছে। তাদের মূল মাথাব্যথা অভিষেককে নিয়ে। তাই সর্বোচ্চ কুৎসা আর চক্রান্ত চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিজেপি তাঁকে ভয় পাচ্ছে। এই ভয় থেকেই অন্যায় আক্রমণ। কারণ রাজনীতিতে তারা অভিষেককে পাল্লা দিতে পারছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সারা দেশের মানুষ চাইছেন। আর অভিষেক মানুষের ইচ্ছেপূরণে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন। সেটা বিজেপির মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব তুলেছে। তাই এই চক্রান্ত নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে একেবারে শীর্ষমহল থেকে।
এহেন পরিস্থিতিতেই ইডি, সিবিআই-এর অপব্যবহার করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার। আগামিকাল সোমবার দিল্লিতে ইডি দফতরে অভিষেকের যাওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত খবর, অভিষেক মাথা উঁচু করেই ইডি দফতরে যাবেন।

Latest article