জুবেরের বিরুদ্ধে এই অতিসক্রিয়তা কেন?

প্রশ্ন উঠছে, গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা শীতলাবাদ গ্রেফতার হলে শীর্ষ কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার পরেও নূপুর শর্মা গ্রেফতার নয় কেন?

Must read

নয়াদিল্লি : খোঁজ নেই দেশজুড়ে অশান্তি তৈরি করা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার। দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর জমা পড়লেও ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা, বিজেপি নেত্রীকে সুরক্ষা দিতে ব্যস্ত অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ। আর যে সাংবাদিক নূপুরের ঘৃণ্য বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য জনসমক্ষে এনে প্রতিবাদ করেন, সেই মহম্মদ জুবেরকে (Journalist Mohammed Zubair) নানা আইনি প্যাঁচে জড়িয়ে জেরবার করতে নেমেছে দিল্লি পুলিশ। জুবেরের প্রতি আচরণ থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি জমানায় পক্ষপাত আর বিভাজনের দৃষ্টিভঙ্গি কোন দিকে যাচ্ছে?

আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগ ইস্যু: রাজ্যপালের টুইটের পাল্টা জবাব কুণালের

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে করা একটি ট্যুইটার পোস্টে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে এই অভিযোগকে সামনে এনে চার বছর পর দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেরকে (Journalist Mohammed Zubair)। মামলার নাগপাশে জড়ানোর অভিসন্ধি নিয়ে শনিবার জুবেরের বিরুদ্ধে আরও নতুন তিনটি মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। তার মধ্যে রয়েছে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রমাণ নষ্ট করা এবং বিদেশি অনুদান আইন লঙ্ঘন। সত্যানুসন্ধানী খবরের সংস্থা অল্ট নিউজে’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেরকে দু’দিন আগেই তল্লাশির জন্য বেঙ্গালুরুর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। ২০১৮ সালে যে ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে এক সিনেমার দৃশ্যের স্টিল ছবি ট্যুইট করেছিলেন জুবের, সেটির সন্ধান করতে তাঁকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও সেগুলি পাওয়া যায়নি। এখন আবার এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বৈদেশিক লগ্নি সংক্রান্ত আইন ভঙ্গ করার অভিযোগও আনা হল। বোঝাই যাচ্ছে, নির্দিষ্ট অভিসন্ধি নিয়েই হেনস্তার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে থাকা দিল্লি পুলিশ। প্রতিবাদী স্বরকে দমন করাই উদ্দেশ্য। যেহেতু নূপুর শর্মার কুৎসিত মন্তব্যটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম শেয়ার করেন জুবের এবং তারপর তার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে তাই এই সাংবাদিককে হেনস্তা করতে ২০১৮ সালের পুরনো একটি ইস্যুকে ছুতো করে তাঁকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এর আগে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছিল, মহম্মদ জুবেরের অ্যাকাউন্টে ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে গত কয়েক মাসে। সেই টাকা কোনও সন্দেহজনক সূত্র থেকে এসেছে বলে অনুমান দিল্লি পুলিশের। শনিবার পাতিয়ালা হাউস কোর্টে জামিনের আবেদন করেন মহম্মদ জুবেরের আইনজীবী। অন্যদিকে নতুন করে পুলিশ হেফাজতের দাবি জানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। শেষপর্যন্ত দিল্লির মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট স্নিগ্ধা শ্রীবাস্তব জুবেরকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

Latest article