নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : গোড়ায় গলদ। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির খেসারত দিচ্ছেন উত্তরাখণ্ড টানেলের (Uttarkashi Tunnel Collapse) মধ্যে আটকে থাকা ৪০ জন শ্রমিক।
ম্যাপ অনুযায়ী, টানেলে কোনও অঘটন ঘটলে বেরোনোর জন্য যে এসকেপ রুট তৈরি করার কথা ছিল তা খাতায়-কলমে থাকলেও কিন্তু বাস্তবে তৈরি হয়নি। আর তার মাশুল দিতে হচ্ছে আটক শ্রমিকদের। ৭ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও বাঁচার আশায় দিন গুনছেন ৪০ জন অসহায় শ্রমিক। ক্রমাগত ভূমিধস নামার ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বক্তব্য, এখনও ৪-৫ দিন সময় লাগবে শ্রমিকদের উদ্ধার করতে।
অথচ যদি টানেল (Uttarkashi Tunnel Collapse) করার সময়ই এসকেপ রুট তৈরি করা হত তাহলে আজ এই বিপত্তি এড়ানো যেত, মত বিশেষজ্ঞদের। সম্প্রতি টানেলের একটি রুট ম্যাপ প্রকাশে এসেছে। তা থেকেই জানা গিয়েছে, ব্লু প্রিন্ট অনুযায়ী এসকেপ রুট ছিল কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তা তৈরি করাই হয়নি।
উল্লেখ্য, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর অনুযায়ী, ৩ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সুড়ঙ্গে এসকেপ রুট থাকা বাধ্যতামূলক। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অন্য কোনও বিপদের কথা মাথায় রেখেই এসকেপ রুট তৈরি করা হয়। সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সিল্কায়রা সুড়ঙ্গেও এসকেপ রুটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে ধস নামলে পালানোর পথ পাননি শ্রমিকরা। সেই কারণেই ৭ দিন ধরে নারকীয় অবস্থায় ভিতরে আটকে রয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে উদ্ধারকারীরা একটি বিকল্প পথেরই ব্যবস্থার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এক সপ্তাহ ধরে সুড়ঙ্গের ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। গোটা পরিস্থিতির জন্য দায়ী সুড়ঙ্গ তৈরির দায়িত্বে থাকা নির্মাণ সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই উঠেছে অভিযোগ। মাস তিনেক আগে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের থানে জেলার নাগপুর-মুম্বাই সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে ২০ জন শ্রমিকের প্রাণ যায়। সেখানেও এই নির্মাণকারী সংস্থার গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছিল। প্রসঙ্গত, উত্তরাখণ্ডের ট্যানেলের নির্মাণকারী সংস্থা এবং সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকারী সংস্থা একই, নবযুগ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। শুধু তাই নয়, ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে, নবযুগকে কেন্দ্রের তরফে হৃষীকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেল সংযোগ প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
এসকেপ রুট বানায়নি সংস্থা, তার খেসারত দিচ্ছেন শ্রমিকরা
সাতদিন টানেলে আটকে শ্রমিকরা