অলোক সরকার: বলিউড হলে নির্ঘাৎ ছবির নাম হত বিশ সাল বাদ! রোহিত আর কামিন্সের দুটো রাগী-রাগী মুখ। মাঝখানে আইসিসি মেনস ওয়ার্ল্ড কাপ, ২০২৩।
ক্রিকেট অবশ্য জেন্টলম্যান্স গেম। এখানে হাড়হিম করা চাউনি নেই। নাকি ছিল ক্যারিবিয়ান দাপটের যুগে। একটা করে বাউন্সার দিয়ে রবার্টস, মার্শালরা এভাবেই তাকাতেন ব্যাটারদের দিকে। কিন্তু একেবারে নেই সেটাই বা কে বলল! ইসবার তিসরি বার বলে একটা স্লোগান ভূ-ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু সেটাও এখন পিছনে চলে গিয়েছে। নতুন স্লোগান লোকমুখে ঘুরছে, তিনের বদলা তেইশে! বলে দিতে হবে না এটা ২০০৩-এর জোহানেসবার্গ ও ২০২৩-এর আমেদাবাদ ফাইনাল নিয়ে।
আরও পড়ুন-রেলে নাভিশ্বাস দেশবাসীর, বিমান ভাড়াকেও হার মানাচ্ছে টিকিটের দাম
দশে দশ করা রোহিতদের প্রাক্তনরা এগিয়ে রাখছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া বলেই চিন্তা। আটবার ফাইনালে উঠে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন। স্টিভ ও বলেছেন, দলটা ধীরে ধীরে পিক-এ উঠেছে। মাইকেল বেভানকে মনে পড়ে? একসময়ের স্পেশালিস্ট ওয়ান ডে প্লেয়ার। তিনি বলেছেন, ভারত এগিয়ে থাকলে কী হবে, অস্ট্রেলিয়া ভাল ব্যাট করতে পারলে ছয়বার হয়ে যেতে পারে। তবে দুই প্রাক্তন যাই বলুন, কিছু শর্ত আছে। পাটা উইকেটে কামিন্স-হ্যাজলউডদের উইকেট নিতে হবে। জাম্পাকে ছন্দে ফিরতে হবে। না হলে? মিচেল স্টার্ক আগেভাগে সাফাই দিয়ে রেখেছেন, ভারতই চ্যাম্পিয়নের মতো খেলছে।
আরও পড়ুন-প্রয়াত হলেন ‘নেহরুর বউ’ বুধনি মেঝান ঘুচল অপবাদ
আমেদাবাদ ও জোহানেসবার্গের মধ্যে কয়েক হাজার মাইল ফারাক। কিন্তু রবিবাসরীয় ফাইনালের আগে অদ্ভুতভাবে দুই শহর মিলে যাচ্ছে। বাতাসে কোথায় যেন বদলার গন্ধও। বিশ বছর আগেকার হারের শোধ তোলার এই সুযোগ। সেবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এভাবেই দাপটে ফাইনাল অবধি উঠে এসেছিল ভারত। কিন্তু ওয়ান্ডারার্সে ৩৫৯-২ তুলে দেওয়ার পর ভারত বড়জোর ২৩৪ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল। ফাইনালে শেহবাগের ৮২ রান কোনও কাজে আসেনি। রাহুল দ্রাবিড়ের ৪৭-ও। সেদিনের দ্রাবিড় এখন ভারতের হেড কোচ। বদলার ধিকিধিকি আগুন কি তিনি টের পাচ্ছেন!
আরও পড়ুন-আজ ছটপুজোয় ঘাটে মুখ্যমন্ত্রী
অধিনায়ক রোহিত একটা ভীষণ ভাল কাজ করছেন। পাওয়ার প্লে-তে ঝড় তুলে বোর্ডে বড় রান তুলে দিচ্ছেন। এতে নতুন বলের গুরুত্ব কমছে। বোর্ডে ভাল রান উঠে গেলে পরের দিকে চাপ কমে যাচ্ছে। ওপেনারদের ঝোড়ো শুরুর পর যাঁরা আসছেন, সেই বিরাট, শ্রেয়স, রাহুল একটা তৈরি মঞ্চ পেয়ে যাচ্ছেন। রবিবার সবরমতীর তীরে এমনই একটা শুরু চাই ভারতের। এমনিতে টস অবশ্য বড় ফ্যাক্টর এই ম্যাচে। আগে ব্যাট করে বড় রান তুলতে পারলে সুবিধা অনেক। পরেরদিকে ডিউ পড়বে। উইকেট আরও স্লো হবে। তখন স্ট্রোক নেওয়া মুশকিল হতে পারে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এদিকে আবার অশ্বিনকে নিয়ে হাল্কা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তিনি প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন। মহম্মদ সিরাজের বদলে ফের আলোচনায় চলে এসেছেন। হার্দিক না থাকায় দলে সিক্সথ বোলারের সমস্যা রয়েছে। তার উপর পাটা উইকেটে তিন স্পিনারের ভাবনা মন্দ নয়। তবে রোহিত বলেছেন এর সবটাই নির্ভর করবে সকালে উইকেট দেখার উপর। আপাতত পনেরোজনকেই মাথায় রেখেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার অবশ্য প্রথম এগারোয় পরিবর্তনের ব্যাপার নেই। তাদেরও সিক্সথ বোলারের সমস্যা আছে। না হলে ট্রাভিস হেডকে দিয়ে বল করাতে হয় কেন। মিডল অর্ডারে স্টিভ স্মিথ ও মার্নাস লাবুশানের অফ ফর্মে থাকাও সমস্যায় ফেলেছে। তবে একদা কাপজয়ী অধিনায়ক স্টিভ ও ফাইনালের আগে কামিন্সকে তাতিয়ে দিয়েছেন এটা বলে যে, কাপ পেলে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে ঢুকে যাবে। তিনি জানেন না, রোহিতের সামনেও কপিল-ধোনির পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে।