পুজোর লেখালিখি

এসে গেল পুজো। পুজো মানেই নানা রঙের পুজো সংখ্যা। কিছু বেরিয়েছে, কিছু বেরনোর মুখে। এবার বিভিন্ন পত্রিকায় পুজো সংখ্যায় কী লিখছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিকরা? জেনে নিলেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়—
পুজো সংখ্যায় আমার প্রথম গল্প ছাপা হয়েছিল ১৯৫৯ সালের। উপন্যাস হিসেবে পুজো সংখ্যায় আমার প্রথম লেখা ‘ঘুনপোকা’। ১৯৬৭ সালে। তারপর থেকে নিয়মিত লিখে চলেছি।
এবার লিখেছি দুটি উপন্যাস। একটি ছোটদের, একটি বড়দের। ছোটদের উপন্যাসটি এককথায় মজার। সায়েন্স ফিকশন। নানারকম জিনিস আছে লেখাটার মধ্যে। নাম ‘এক আশ্চর্য ফেরিওয়ালা’।
বড়দের উপন্যাসটির নাম ‘এক্কা দোক্কা’। একটি ছেলের জীবন সংগ্রামের কথা ধরা পড়েছে। পাশাপাশি ধরা পড়েছে একটি মেয়ের জীবন সংগ্রামের কথাও। দুটি উপন্যাস ইতিমধ্যেই পাঠকদের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। এর পাশাপাশি লিখেছি একটি অন্যরকম প্রেমের গল্প। আরও কিছু গল্প লিখছি। লেখা চলছে।

আরও পড়ুন-কাজের মানুষের কথা কাছের মানুষের কলমে

প্রচেত গুপ্ত—
এইবছর বেশ কয়েকটি পুজো সংখ্যায় নিজের জীবনের কথা লিখেছি। তবে সেগুলো একেবারেই আত্মজীবনী নয়। ধরার চেষ্টা করেছি একটা সময়কে। লিখেছি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, তবু একাত্ম হয়ে গিয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে। মনে হত আমরাই যেন মুক্তিযোদ্ধা। সেই ছোট বয়সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ মুখস্থ বলতে পারতাম। এই বিষয়টা নিয়ে লিখেছি একটি পত্রিকায়।
কলকাতা লাগোয়া একটি ছোট্ট পাড়ায় আমরা থাকতাম। সেই পাড়ার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখেছি একটি পত্রিকায়। গলির মোড়ে ছোট মঞ্চ। সেখানে অনুষ্ঠান। পুজোর নাটক, বর্ষামঙ্গল ইত্যাদি। সবাই অংশ নিতাম। ছোটবেলায় পাড়ায় যাত্রাও করেছি। পুজোর পরে পথের মোড়ে পর্দা টাঙিয়ে সিনেমা দেখানো হত। সবাই ভিড় করতেন। বয়ঃসন্ধিকালে কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এবার পুজোয় আমরা নতুন জামাকাপড় পরব না। বুঝতাম না, আমরা না কিনলে যারা নতুন জামাকাপড় বানায়, তাদের উপার্জন কমে যাবে। এই অর্থনীতিটা আমাদের মাথায় ঢোকেনি। তখন আবেগটাই বড় ছিল। পুজোর ভিড় থেকে দূরে, নির্জনে চলে যেতাম। এইসব ছড়ানো ছেটানো ঘটনা উঠে এসেছে বিভিন্ন লেখায়। এর পাশাপাশি লিখেছি বেশকিছু ছোটদের এবং বড়দের গল্প। সাগর চরিত্রটি নিয়ে লেখা গল্প তো আছেই। এর বাইরে লিখছি কয়েকটি বড় লেখা।

আরও পড়ুন-সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে এ কী অবস্থান ! সিপিএম নেতাদের নামে মামলা

জয়ন্ত দে—
প্রায় ২৫ বছর ধরে লিখছি পুজো সংখ্যায়। মূলত গল্প এবং উপন্যাস। এবারের পুজোতেও আমার লেখা থাকছে বেশ কয়েকটি পত্রিকায়। গত বছর একটি উপন্যাস লিখেছিলাম। নাম ‘যে মেয়েটা কখনও কাঁদেনি’। এই বছর লিখেছি সেই উপন্যাসের সেকেন্ড পার্ট। নাম ‘অন্নপূর্ণা অন্ন মাটি জল’। মূলত সামাজিক উপন্যাস।
সামাজিক উপন্যাস লিখেছি আরও একটি। নাম ‘পুরুষমানুষ’। উপন্যাসের মূল চরিত্র একটি মেয়ে। সে ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড সন্দেহবাতিক, পুরুষবিদ্বেষী। মনে করে পৃথিবীতে দুটি পক্ষ। একদিকে নারী এবং অন্যদিকে পুরুষ। আশপাশের মহিলাদের অত্যাচারিত হতে দেখেই তার এই ধারণা। প্রতি মুহূর্তে বদলা নেওয়ার চেষ্টা করে। মেয়েটিকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছে কাহিনি।
এই দুটির পাশাপাশি লিখছি আরও একটি উপন্যাস। সেটা থ্রিলার। এছাড়াও লিখেছি বেশ কিছু গল্প। ছোটদের এবং বড়দের জন্য। সবগুলোই সামাজিক। সারা বছর ধরেই চলে আমার পুজোর লেখা।

Latest article