যুবভারতী ফের মোহনবাগানেরই, টানা আট ডার্বি জয়ের রেকর্ড

ইস্টবেঙ্গল আরও একটা ডার্বি হেরে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে লিগ শেষ করল। কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে

Must read

চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: আরও একটা ডার্বিতে যুবভারতী থাকল মোহনবাগানের দখলেই। এই নিয়ে টানা আট ডার্বি জিতল সবুজ-মেরুন। সেই সঙ্গে আইএসএলে টানা ছ’টি ডার্বিতে হার ইস্টবেঙ্গলের। স্লাভকো দামজানোভিচ ও দিমিত্রি পেত্রাতোসের গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে ২-০ গোলে হারিয়ে আইএসএলের পয়েন্ট টেবলে তিন নম্বরে থেকে (২০ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট) প্লে-অফ খেলবে জুয়ান ফেরান্দোর দল। ৪ মার্চ যুবভারতীতে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ ওড়িশা। ইস্টবেঙ্গল আরও একটা ডার্বি হেরে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে লিগ শেষ করল। কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে।

আরও পড়ুন-তিনে শেষ, খুশি দিমিত্রিরা

বহুদিন পর কলকাতা ডার্বিতে সেই চেনা আবেগ উন্মাদনার বিস্ফোরণ দেখা যায়নি। তবু এমন দিনে কি বাড়িতে বসে থাকা যায়! কর্তাদের উপর যত অসন্তোষই থাক, সমর্থকরা পুরোপুরি ডার্বি থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারেননি। মোহনবাগান সমর্থকরা গ্যালারি ভরিয়েছেন। শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটির মতো লিগের সেরা দলকে হারিয়ে এলেও তুলনায় লাল-হলুদ সমর্থকরা সংখ্যায় অনেক কম ছিলেন। তবু সময় যত এগোল, ডার্বির যুবভারতী জেগে উঠল। কিন্তু ফুটবল হল খুব সাদামাটা। তবে শেষটা হল সবুজ-মেরুন উৎসবে। এমন দু’জনের গোলে মোহনবাগান জিতল যাঁরা প্রথমবার ডার্বিতে গোল করলেন। ব্রেন্ডন হ্যামিলের কার্ড সমস্যা থাকায় স্লাভকো এদিনই প্রথম ডার্বি খেললেন এবং গোল করলেন। দিমিত্রি আগের ডার্বিতে গোল না পেলেও এদিন পেলেন। আর বড় ম্যাচে প্রতিবারের মতো এদিনও অসাধারণ খেলে মোহনবাগানকে ভরসা দিলেন মানবীর সিং।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

দুই কোচ এতটাই সাবধানী নীতি নিয়েছিলেন যে খেলা শুরুর পর তাঁদের স্ট্র্যাটেজি ঘেঁটে যায়। অজস্র মিস পাস, পরিকল্পনাহীন ভুলে ভরা ফুটবল প্রথমার্ধ জুড়ে। তবু প্রথমার্ধে বল পজেশন, পাসিং, সুযোগ তৈরি, কর্নার সবেতেই এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল বক্সের উপর ফ্রিকিক পেয়েছিল জুয়ানের দল। দিমিত্রি পেত্রাতোস বল উড়িয়ে দেন। তার আগে উঠে আসা প্রীতম কোটাল সাইডভলিতে বল বাইরে মারেন। আশিক কুরুনিয়নও সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বিরতির আগেই মোহনবাগান এগিয়ে যায়। বিক্ষিপ্ত প্রতিআক্রমণে ইস্টবেঙ্গল সুযোগ পেলেও ক্লেটন সিলভা, ভি পি সুহের, নাওরেম মহেশরা তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ।

আরও পড়ুন-অতিরিক্ত ওষুধ আর নয়

দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান আরও দাপট নিয়ে খেলল। বক্সের মধ্যে আশিকের থ্রু বল। দিমিত্রির জমি ঘেঁষা শট। দ্বিতীয় পোস্টের তলায় লেগে বাইরে বেরিয়ে যায়। ম্যাচের এটাই সেরা সুযোগ। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সে চাপ ক্রমশ বাড়াতে থাকে মোহনবাগান। তার মধ্যেই প্রতিআক্রমণে গোলের সুযোগ পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু বিপক্ষ গোলকিপারকে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন জেক জার্ভিস। ৬২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে প্রথম কর্নার পায়। এ থেকেই বোঝা যায় খেলায় মোহনবাগানের আধিপত্য কতটা ছিল।

আরও পড়ুন-বাংলাই মডেল বলল এবার নীতি আয়োগ, নাকাশিপাড়া আইটিআইকে কেন্দ্রের স্বীকৃতি

অবশেষে গোল এল ম্যাচের ৬৮ মিনিটে। গ্যালারিতে শব্দব্রহ্ম। এগিয়ে যায় সবুজ-মেরুন। দিমিত্রি কর্নার নেন। তা থেকে মনবীর সিংয়ের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাক হিল। উপরে উঠে আসা সার্বিয়ান সেন্টার ব্যাক স্লাভকো হেডে গোল করার চেষ্টা করেন। বল পোস্টে লাগে। ফিরতি বল তাঁর পায়েই আসে। ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার কমলজিৎ সম্পূর্ণ পরাস্ত। ডান পায়ের টোকায় গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন স্লাভকো।
এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ানোর জন্য আরও মরিয়া হয়ে ওঠে জুয়ানের দল। পিছিয়ে পড়েও ইস্টবেঙ্গলের খেলায় কোনও পরিকল্পনার ছাপ ছিল না। মোহনবাগান কোচ গ্লেন মার্টিন্স, মনবীর, বুমোসকে তুলে পুইতিয়া, লিস্টন কোলাসো, কিয়ান নাসিরিকে। আক্রমণে আরও ঝাঁজ বাড়ে বাগানের। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ করেন দিমিত্রি। আইএসএলের প্রথম পর্বের ডার্বিতে গোল না পাওয়ার হতাশা ভুললেন সবুজ-মেরুনের অস্ট্রেলীয় বিশ্বকাপার। ফিরতি ডার্বিতেও গোল। সুপার সাব কিয়ান নাসিরির শট আটকে দেন লাল-হলুদ গোলকিপার কমলজিৎ। ফিরতি বলে জোরালো শটে গোল পেত্রাতোসের। এরপর আর স্কোরলাইনে বদল হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের সাহেব কোচ একাধিক পরিবর্ত নামিয়েও দলকে ম্যাচে ফেরাতে পারেননি।

Latest article