ভারতের ৮৯% শিশুই পর্যাপ্ত খাবার পায় না

সমীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য খাদ্যের পরিমাণ শহরাঞ্চলে বেশি (১২.১ শতাংশ) গ্রামীণ এলাকার তুলনায় (১০.৭ শতাংশ)

Must read

নয়াদিল্লি : ভারতের অধিকাংশ শিশুই পর্যাপ্ত খাদ্য থেকে বঞ্চিত। সম্প্রতি প্রকাশিত জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষায় (এনএফএইচএস-৫) উঠে এল এমনই নিদারুণ তথ্য। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এদেশের ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সের মধ্যে ৮৯ শতাংশ শিশুই ‘ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য খাদ্য’ পায় না। এই রিপোর্টে দু’বছর বয়সের মধ্যে থাকা শিশুদের প্রাপ্ত খাদ্যমানের পর্যালোচনা করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ৬ মাস থেকে ২৩ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে ৮৮.৯ শতাংশ শিশু, যারা এখনও স্তন্যপান করছে, তারা ২০১৯-২০ সালে পর্যাপ্ত খাবার পায়নি।

আরও পড়ুন-ফের রেকর্ড পতন টাকার মুদ্রাস্ফীতি লাগামছাড়া

পাশাপাশি এই বয়সসীমার ৮৭.৩ শতাংশ স্তন্যপান না করা শিশু ২০১৯-২০ সালে পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়নি। স্তন্যপান না করা এবং পর্যাপ্ত খাবার থেকে বঞ্চিত শিশুর সংখ্যা পূর্ববর্তী সমীক্ষার রিপোর্টের চেয়ে অনেকটাই বেশি, যা উদ্বেগজনক। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে করা সমীক্ষার ভিত্তিতে এই চিত্র উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন-১০ জুন ভোট রাজ্যসভায়

শিশুদের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য ডায়েট প্রাপ্তির আনুপাতিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতে। তালিকার সর্বনিম্নে থাকা এই দুই রাজ্যে শিশুদের পর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণের হার ৫.৯ শতাংশ। এছাড়া দশটি অন্যান্য রাজ্যের হিসাব হল : অসম (৭.২ শতাংশ), রাজস্থান (৮.৩ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (৮.৯ শতাংশ), অন্ধ্রপ্রদেশ (৯ শতাংশ), মধ্যপ্রদেশ (৯ শতাংশ), তেলেঙ্গানা (৯ শতাংশ), ছত্তিশগড় (৯.১ শতাংশ), ঝাড়খণ্ড (১০ শতাংশ), দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ (১০.২ শতাংশ) এবং বিহার (১০.৮ শতাংশ)। এই রাজ্যগুলি পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণকারী শিশুদের জাতীয় স্তরের (১১ শতাংশ) চেয়ে নিচে রয়েছে। অন্যদিকে, শীর্ষ পাঁচটি রাজ্যে ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সি শিশুদের পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে প্রথমেই রয়েছে মেঘালয়। সমীক্ষার হিসাবে, মেঘালয়ে শিশুদের খাদ্য গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি (২৮.৫ শতাংশ)। এরপর সিকিম (২৩.৮ শতাংশ), কেরল (২৩.৩ শতাংশ), লাদাখ (২৩.১ শতাংশ) এবং পুদুচেরি (২২.৯ শতাংশ)।

আরও পড়ুন-নতুন সিইসি রাজীব কুমার

সমীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য খাদ্যের পরিমাণ শহরাঞ্চলে বেশি (১২.১ শতাংশ) গ্রামীণ এলাকার তুলনায় (১০.৭ শতাংশ)। এছাড়া তথ্য অনুযায়ী, ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে ৬৭ শতাংশেরই রক্তশূন্যতা রয়েছে, যা আগের সমীক্ষার চেয়েও বেশি। পাঁচ বছরের কম বয়সি ৩৬ শতাংশ শিশুর বৃদ্ধি বয়সের তুলনায় কম, ১৯ শতাংশ শিশুর উচ্চতা ক্ষীণ এবং ৩২ শতাংশ শিশু বয়সের তুলনায় কম ওজনের। অর্থাৎ পর্যাপ্ত খাদ্য ও পুষ্টির অভাব স্পষ্ট। সব মিলিয়ে বিপন্ন শৈশব। জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত দেশের অধিকাংশ শিশুই ভুগছে অপুষ্টিতে।

Latest article