নয়াদিল্লি : ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে নরেন্দ্র মোদি সরকার বারেবারেই বিরোধীদের হেনস্তা করতে কাজে লাগাচ্ছে বলে লাগাতার অভিযোগ উঠছে। এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডিকে তীব্র কটাক্ষ করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ও উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে সরাসরি চিঠি লিখলেন রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত। বুধবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইডির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন মহারাষ্ট্রের শিবসেনা সাংসদ।
আরও পড়ুন-আবারও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে চিঠি লিখে সঞ্জয় অভিযোগ করেছেন, মহারাষ্ট্র সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সাহায্য না করায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে পরিকল্পিত হয়রানি করছে। ইডি এবং অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা এখন তাঁদের রাজনৈতিক প্রভুদের পুতুলে পরিণত হয়েছেন এবং তাঁরা স্বীকারও করছেন যে তাঁদের ‘বস’ নির্দেশ পাঠিয়েছেন আমাকে চাপ দিতে। কেন্দ্রীয় সরকারকে অভিযুক্ত করে শিবসেনা সাংসদ বলেছেন, ইডিকে অসাংবিধানিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা দেশে বিজেপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে ইডি। কার্যত ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট শুরু করেছে ওই তদন্তকারী সংস্থা। সাংসদের কথায়, আমার মেয়ের বিয়ের ডেকরেটরকে পর্যন্ত জেরা করেছে ইডি। আমাদের ঘনিষ্ঠ লোকজনকে অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-মহানগরীর পথে নামছে আধুনিক ট্রলি বাস
চিঠিতে সঞ্জয় লিখেছেন, প্রায় মাসখানেক আগে কিছু লোক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের পতনে যেন সাহায্য করি সেজন্য শর্ত দিয়েছিল। তারা চেয়েছিল আমি এমন একটা ভূমিকায় অবতীর্ণ হই যাতে রাজ্যকে একটা মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাধ্য করা যায়। আমি সরাসরি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। এর পরেই আমাকে সতর্ক করে হুমকি দেওয়া হয় যে এই প্রত্যাখ্যানের জন্য বড় মূল্য চোকাতে হবে। এমনকী আমাকে একথাও বলা হয়েছিল যে আমার ভাগ্য একজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর মতো হতে পারে যিনি বহু বছর জেলবন্দি ছিলেন। আমাকে সতর্ক করা হয়েছিল যে আমি এবং মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার অন্য দুই সিনিয়র মন্ত্রীর পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের দুই সিনিয়র নেতাকেও পিএমএলএ আইনে অভিযুক্ত করে জেলে পাঠানো হবে যা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে রাজ্যকে।
শিবসেনা সাংসদ জানান, তাঁর পরিবারের ১ একর জমি আছে আলিবাগে, যা প্রায় ১৭ বছর আগে কেনা হয়েছিল। কিন্তু, যারা জমি বিক্রি করেছিল, তাদের পরিবারের সদস্যদের, ইডি এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি আমার বিরুদ্ধে সাজানো বিবৃতি দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন-আত্মতুষ্টি নয়, জিতুন পরিশ্রমে
সাংসদ সঞ্জয় রাউত বুধবার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মুম্বইয়ের ইডি অফিসে কে যায়? ইডিকে কে ব্রিফিং করছে? কাদের ফাঁদে ফেলা হবে, কীভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে অনেক তথ্য প্রকাশ করব। বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এটা ভাল করেই জানেন। এরপর আমাদের বাড়িতে ঢুকলে আমরা ছাড়ব না। আপনি তখন নাগপুর যেতে পারবেন না। আমি শীঘ্রই মুম্বইয়ে ইডি অফিসের বাইরে হাজার হাজার লোক নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে সমস্ত প্রকাশ করব। ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পর মহারাষ্ট্রে সারা দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মামলা দায়ের করে ইডি তদন্ত করছে। উত্তরপ্রদেশ, বিহারে কি কেলেঙ্কারি হচ্ছে না? আমাদের ধমকানোর চেষ্টা করবেন না, আমরা ভয় পাই না।