প্রতিবেদন : দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু এখনও ইউক্রেন অধরা পুতিনের কাছে। যা রুশ একনায়কের কাছে অপ্রত্যাশিত ধাক্কা বলে মানছেন সবাই। এবার তাই কিয়েভ দখলে আনতে রুশ বাহিনীর নৃশংসতা ক্রমশ মাত্রা ছাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে অসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না হাসপাতালগুলিও। বুচায় পুতিন বাহিনীর গণহত্যা প্রকাশ্যে আসতেই রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে চাপিয়েছে পশ্চিমি দুনিয়া। মঙ্গলবার তার প্রেক্ষিতে মুখ খুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নতুন করে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে বিক্ষোভ বন্ধের আর্জি প্রধানমন্ত্রীর
মঙ্গলবার পুতিন বলেন, তাঁরা পশ্চিমি দেশগুলির অনেক অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করছেন। কিন্তু একদিন এর উপযুক্ত জবাব দেবে রাশিয়া। একইসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁদের লক্ষ্য হল যে উদ্দেশ্যে তাঁরা ইউক্রেনে লড়াই চালাচ্ছেন সেটা দ্রুত পূরণ করা। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। পুতিন অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের মিত্রশক্তি পশ্চিমি দুনিয়া কিয়েভকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্তে মদত জোগাচ্ছে। ইউক্রেনের মাটিতে নব্য নাৎসিদের প্রশিক্ষণ চলছে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হল রাশিয়াকে ধ্বংস করা। কিন্তু এটা তারা কখনও করতে পারবে না। পুতিন বাহিনী এদিন ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোলের উপর হামলা আরও জোরদার করেছে। পূর্ব ইউক্রেন দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মস্কো। এর মধ্যে মঙ্গলবার জার্মান সরকারের এক প্রতিনিধি দল ইউক্রেন সফরে এসেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। গত সপ্তাহেই ইউক্রেন সফরে এসেছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি অস্ত্র পাঠানোর আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন-ভারতকে সমর্থন
অন্যদিকে এদিন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলােদিমির জেলেনস্কি ফের ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে রাশিয়ার উপর আরও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর আর্জি জানিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া আমাদের সেনার সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে নির্বিচারে নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়া যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে সেটা যে কোনও সভ্য সমাজকে লজ্জা দেবে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই কিয়েভ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন পুতিন। তাই নির্বিচারে গণহত্যা চালাতেও পিছপা হচ্ছে না রুশ সেনা।
আরও পড়ুন-মোদির বারাণসীতেই মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি
যদিও রাশিয়ার দাবি, তারা মূলত ইউক্রেনের সেনা ও অস্ত্রাগারগুলির উপর হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়ার হ্যাকাররা ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিড হ্যাক করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে খবর। গত সপ্তাহের শেষ দিকে রুশ হ্যাকারদের হামলা হয়েছে বলে ইউক্রেন এদিন জানিয়েছে। পুতিন এদিন আরও বলেছেন, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে রাশিয়া ও বেলারুশের সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়া দরকার। দু’দেশের সম্পর্ক মজবুত না হলে তাঁরা একযোগে পশ্চিমি দুনিয়ার মোকাবিলা করতে পারবেন না। অন্যদিকে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনে তাঁরা সব ধরনের সাহায্য করবেন। রুশ আক্রমণে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ইউক্রেনের পুনরুজ্জীবনে খুব শীঘ্রই এক বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি তাঁরা ১০০ মিলিয়ন ডলার দেবেন মলডোভাকে।