সাও পাওলো, ২ জানুয়ারি : সাও পাওলোর স্যান্টোসের হোম গ্রাউন্ড ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়াম। এই মাঠের সবুজ ঘাসেই বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। এই মাঠেই খেলতে খেলতে কিংবদন্তি হয়ে ওঠা তাঁর। সোমবার ভোররাতে নিজের প্রিয় মাঠেই শেষবারের মতো পা রাখলেন পেলে। যে মাঠে অসংখ্য স্মরণীয় গোল করে স্যান্টোসকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছিলেন, সেই মাঠেই মঙ্গলবার সকাল দশটা পর্যন্ত শায়িত থাকবে সম্রাটের কফিনবন্দি নিথর দেহ। তারপর শুরু হবে তিন-তিনটি বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলীয় কিংবদন্তির শেষযাত্রা।
আরও পড়ুন-ভাড়া বাকি ট্যুইটারের
ফুটবল সম্রাটকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভোর রাত থেকেই স্টেডিয়ামের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। সকাল দশটার সময় গেট খোলা হয়। তার আগেই কয়েক হাজার জনতার দীর্ঘ লাইন পড়ে গিয়েছিল। এমনই একজন পাওলো ডুয়ার্তে সোয়ারেজ। ৩৬ বছর বয়সি যুবক পেলেকে শেষ দেখা দেখতে রবিবারই চলে এসেছিলেন বেলমিরো স্টেডিয়ামে। গোটা রাত অপেক্ষায় ছিলেন। সোয়ারেস বলছিলেন, ‘‘সম্রাটকে শেষবার দেখতেই হবে। তাই চলে এসেছি। ওঁকে আর কখনও দেখতে পাব না।’’
লাইনে দাঁড়ানো ৫৮ বছরের এমিলিও ডি লিমার দু’চোখে জল। বলছিলেন, ‘‘কেরিয়ারের একেবারে শেষদিকে পেলের একটা ম্যাচ দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। স্পষ্ট মনে আছে, স্যান্টোস ও পালমেইরাসের মধ্যে ম্যাচটা ১-১ ড্র হয়েছিল।’’ গভীর রাত পর্যন্ত এভাবেই সম্রাটকে অন্তিম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে গেলেন হাজার হাজার অনুরাগী। প্রত্যেকেরই চোখে জল।
আরও পড়ুন-কারাগারে হামলা
মঙ্গলবার পেলের শেষকৃত্যের যাবতীয় পরিকল্পনাও সেরে ফেলা হয়েছে। স্যান্টোসের বিভিন্ন রাস্তায় ফুটবল সম্রাটের মরদেহ নিয়ে শেষযাত্রা হবে। পেলের পৈতৃক ভিটের সামনে দিয়েও তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই বাড়িতেই থাকেন পেলের শতায়ু মা ডোনা সেলেস্তে আরান্তেস। যদিও তিনি শয্যাশায়ী এবং দীর্ঘদিনের রোগভোগে অতীতের সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছেন। কাউকে চিনতেও পারেন না। তাই ছেলের মৃত্যুর সংবাদ জানেন না।
আরও পড়ুন-উত্তুরে হাওয়ায় হালকা শীত, বাড়ছে তাপমাত্রা
পেলের নশ্বর দেহ সমাধিস্থ করা হবে নেক্রোপোল একুমেনিকাতে। ১৪ তলা উঁচু এই বাড়ির সর্বোচ্চ তলায় শায়িত থাকবেন ফুটবল সম্রাট। তবে পেলের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উপস্থিত থাকবেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এদিন ফুটবল সম্রাটকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো। পেলের কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে পেলের স্ত্রী ও পুত্রকে সান্ত্বনা দিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। আবেগে ভেসে গিয়েছেন পেলের পরিবারের সদস্যরাও। স্ত্রী তো কেঁদেই ফেলেন স্বামীর নিথর দেহের সামনে।