বেজিং, ১৫ জুন : কানার কানায় পূর্ণ ওয়ার্কাস স্টেডিয়ামে তখনও দর্শকরা নিজেদের আসনে গুছিয়ে বসতে পারেননি। লিওনেল মেসির বাঁ পায়ের গোলার মতো শট আছড়ে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার জালে। ম্যাচের বয়স তখন সবে ৮০ সেকেন্ড!
আরও পড়ুন-সবুজ-মেরুন ছেড়ে কেরলের পথে প্রীতম
সতীর্থ এনজো ফার্নান্ডেজ বল বাড়িয়েছিলেন মেসিকে। বিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে হেলায় ড্রিবল করে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া আর্জেন্টাইন মহাতারকার বাঁ পায়ের সোয়ার্ভিং শট অস্ট্রেলীয় গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে বাঁক খেয়ে জালে জড়িয়ে যায়। সেই শুরু। এরপর গোটা ম্যাচে রাজত্ব করে গেলেন মেসি। নেহাতই প্রীতি ম্যাচ। তবুও স্বপ্নের নায়ককে দেখার জন্য স্টেডিয়াম ভরিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। ভক্তদের হতাশ করেননি মেসি। বিরতির আগেই অবশ্য গোল শোধের দারুণ সুযোগ এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার সামনে। কিন্তু মিচেল ডিউকের ফ্লিক আর্জেন্টিনা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে পরাস্ত করেও গোলে ঢোকার মুখে পোস্টে ধাক্কা খেয়ে ফের মার্টিনেজের গ্লাভসে জমা পড়ে। এরপর অবশ্য গোটা ম্যাচেই দাপিয়ে খেলে গেল আর্জেন্টিনা। সুযোগ নষ্ট না করলে, ম্যাচটা আরও বড় ব্যবধানেই জিততেন মেসিরা। ৩৮ মিনিটে মেসি অস্ট্রেলীয় বক্সে ঢুকে পড়েও গোল করতে পারেননি।
আরও পড়ুন-‘সিউ’ উৎসবের ব্যাখ্যা রোনাল্ডোর
দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন জার্মান পেজেল্লা। সতীর্থ রডরিগো ডি’পলের নিখুঁত সেন্টারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি। ৭১ মিনিটে জুলিয়ানো আলবারেজের জোরালো শট কোনওরকমে রুখে দেন অস্ট্রেলীয় গোলকিপার। ৭৮ মিনিটে মেসি অসাধারণ থ্রু বাড়িয়েছিলেন আলভারেজের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এবারও গোল হয়নি।
আরও পড়ুন-অহঙ্কারী ভারত, তোপ দাগলেন রবার্টস
এদিকে, বেজিংয়ে পা রেখেই মেসি জানিয়ে দিয়েছিলেন, পরের বিশ্বকাপে না খেলার সিদ্ধান্তে তিনি এখনও অনড়। এদিন ম্যাচের পরেও একই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। আর্জেন্টাইন মহাতারকার সাফ কথা, ‘‘পরের বিশ্বকাপের অনেক দেরি রয়েছে। তাই এ নিয়ে চিন্তাভাবনার কোনও অর্থ নেই। বরং আমরা যেটা (বিশ্বকাপ ট্রফি) অর্জন করেছি, সেটাই উপভোগ করছি। তবে সত্যি কথাটা হল, আমার যা বয়স, তাতে পরের বিশ্বকাপ খেলা খুব কঠিন।’’
আরও পড়ুন-‘আমি অভিভূত…!’ নব জোয়ারের ৫০তম দিন আবেগঘন মুহূর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
আর্জেন্টাইন মহাতারকা জানিয়েছেন, কাতারে বিশ্বকাপ জিততে না পারলে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে নিশ্চিতভাবেই বিদায় জানাতেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যেভাবেই হোক একটা বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিলাম। কাতারে কাপ জিততে না পারলে দেশের হয়ে আর খেলতাম না। এটা অনেক আগেই ঠিক করে ফেলেছিলাম।’’ মেসির সংযোজন, ‘‘তবে বিশ্বকাপ জেতার পর সিদ্ধান্ত বদলে ফেলি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেশের জার্সিতে আরও কিছু ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলাম।’’