প্রতিবেদন : আর মাত্র ১০ দিনের অপেক্ষা, তারপরেই চাঁদের মাটিতে নামবে ভারতের চন্দ্রযান-৩। চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে পা রাখবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। তার বুক চিরে বেরিয়ে আসবে ‘প্রজ্ঞান’। ভারতের অশোকস্তম্ভ আর ইসরোর ছাপ এঁকে দেবে উপগ্রহের মাটিতে। ভারত এই ইতিহাস গড়বে বলে যখন ১৪০ কোটি মানুষ স্বপ্ন দেখছে, তখনই রাশিয়া থেকে চাঁদের দিকে রওনা দিয়েছে রুশ মহাকাশযান লুনা-২৫। অঙ্ক বলছে, ভারতের আগেই চাঁদের মাটিতে নামবে সে। যদিও দুই দেশের এই মহাকাশ অভিযান একে অন্যের থেকে অনেকটাই আলাদা, জানাচ্ছে ইসরো। গত ১৪ জুলাই ভারতের মাটি ছেড়েছে চন্দ্রযান-৩।
আরও পড়ুন-‘দ্রুত তদন্ত শেষ করতে পারব’, যাদবপুর কাণ্ডে আশাবাদী পুলিশ কমিশনার, রিপোর্ট চাইল ইউজিসি
আপাতত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে এখনও খুব একটা সমস্যা হয়নি। আগামী ২৩ অগাস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার কিছু পরে চাঁদের মাটিতে ইতিহাস গড়বে ভারত। ইঞ্জিন বিকল হলেও অবতরণে খুব একটা সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ। এর মাঝে গত ১১ অগাস্ট রাশিয়ার লুনা-২৫ রওনা দিয়েছে। কিন্তু এত পরে যাত্রা শুরু করেও প্রথম হবে রাশিয়া, এমনটাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ২১ অগাস্ট চাঁদে নেমে পড়ার কথা রুশ যানের। চন্দ্রযানের মিশনটির আয়ু হবে পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন। কিন্তু লুনা-২৫ অনেক বেশি সময় কাটাবে চাঁদে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ বছর চলবে তাদের অভিযান। যদিও ইসরো এধরনের তুলনামূলক প্রতিযোগিতার পথে যেতে নারাজ। আধিকারিকদের মতে, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার মিশনে সময় লাগতে পারে। কিন্তু ইসরোর লক্ষ্য ছিল যত কম খরচে সাফল্য পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা। যদিও দুই মহাকাশযানই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে, তবুও দুই অভিযানের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে বলেই দাবি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-কিশোর বিপ্লবী ও তাঁদের পরিবার
কোথায় পার্থক্য চন্দ্রযান-৩ আর লুনা-২৫ এর যাত্রাপথে? ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, চাঁদে অবতরণের জন্য মূলত মাধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে চাঁদের কাছে যাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। একটা সময় পরে এটি চাঁদে অবতরণ করবে। কিন্তু রাশিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টা অনেকটাই আলাদা। রসকসমস-এর তরফে জানা গিয়েছে, লুনাকে চাঁদে পাঠাতে প্রচুর জ্বালানি ভরে অত্যন্ত শক্তিশালী রকেট ব্যবহার করা হয়েছে। এর জন্য বরাদ্দ বাজেটও ভারতের তুলনায় বহুগুণ বেশি। এর ফলে এই রকেট নিজের ক্ষমতায় লুনা-২৫ কে চাঁদে নিয়ে যাচ্ছে। বাহ্যিক কোনও বিষয়ের উপর নির্ভর করছে না রাশিয়া। দেখা যাচ্ছে যে চন্দ্রযান-৩ যেখানে এক-একটি করে ধাপ পেরিয়ে চাঁদের কাছে যাচ্ছে, সেটা দ্রুত গতিতে লাফিয়ে-লাফিয়ে করছে লুনা-২৫। তাই হিসেবমতো ভারতের আগেই নামবে রুশযান।