অর্পণ বর্ধন: জলবায়ু পরিবর্তনের জের। যার জেরে বিশ্ববাণিজ্যে বড়সড় ধাক্কা। চরম সমস্যার সম্মুখীন পানামা খাল। জলবায়ু পরিবর্তনের একাধিক সমস্যার কথা বিভিন্ন মহল থেকেই উঠে আসছিল। অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। দেখা যাচ্ছে, বিপদ আর বেশি দূরে নেই! এশিয়া থেকে আমেরিকায় পণ্য আমদানি-রফতানির অন্যতম প্রধান সমুদ্রপথ পানামা খালেই এখন শয়ে শয়ে জাহাজ অপেক্ষমান। ট্রাফিক জ্যামে আটকে রয়েছে বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মালবাহী জাহাজ।
আরও পড়ুন-যাত্রীদের নামাজের ব্যবস্থা করে বরখাস্ত : অপমানে আত্মঘাতী ইউপি-র বাসকর্মী
পানামার এমন দুরবস্থা আগে কবে দেখা গিয়েছিল তা কেউই মনে করতে পারছেন না। বহুদিন ধরেই এই জলপথে দুই মহাদেশের মধ্যে পণ্য বিনিময় হয়ে চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিভিন্ন দেশের নীতিগত অবস্থানের জন্য বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম এই পানামা খালের দু’ধারে এখন অপেক্ষমান জাহাজের ভিড়। জানা গিয়েছে, পানামা খালের দু’পাশে এক-এক সময়ে ২০০টিরও বেশি জাহাজ অপেক্ষা করছে। পানামা খাল পেরোতে গড়ে চারদিন থেকে অনেকক্ষেত্রে টানা ২০ দিনেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে!
আরও পড়ুন-চাঁদের বুকে পা রেখে, সূর্যের দিকে চোখ
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পানামা খালের দু’পাশে এভাবে জাহাজের মেলা বসার অন্যতম কারণ খালের জলস্তর ব্যাপকভাবে কমে যাওয়া। আর সেটা কমেছে মূলত জলবায়ুগত পরিবর্তন এবং তার জেরে ঘটা খরার কারণেই। এদিকে, পানামার আশপাশে ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় ১৪০০ দ্বীপ। বেশিরভাগ দ্বীপেই মানুষের বসবাস। কিন্তু গত ৭০ বছরের মধ্যে এমন বিপজ্জনক খরার মুখে পড়তে হয়নি পানামার দ্বীপগুলিকে। অনুমান করা হচ্ছে, খরার কারণে ইতিমধ্যেই প্রায় ২০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। অ্যাক্রন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তথা লেখক অ্যান্ড্রু থমাস জানিয়েছেন, যেহেতু যাত্রাপথ সীমাবদ্ধ, সেকারণেই কিছু কোম্পানিকে পণ্য, বিশেষত কন্টেনারগুলিকে অফলোড করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-পায়ে পায়ে পাহাড়ে
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের মতে, পানামা খাল দীর্ঘসময় ধরে বিশ্ববাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ সালে ১৪ হাজারেরও বেশি জাহাজ খালটি অতিক্রম করেছে৷ কন্টেনারগুলি উত্তর-পূর্ব এশিয়া এবং মার্কিন পূর্ব উপকূলের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি ভোগ্যপণ্য পরিবহণ করে। নাব্যতা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রভাব পড়ছে বিশ্ববাণিজ্যে।