‘মঙ্গলে ঊষা বুধে পা,
যথা ইচ্ছা তথা যা।’
প্রথমে স্মরণ করি খনার বচন
অতঃপর পঞ্জিকা পাঠে দিই মন।
সংক্ষেপে এই হল আবহমান বাংলা ও বাঙালির দীর্ঘলালিত অভ্যাস। বারো মাসে তেরো পার্বণ নিয়ে মেতে থাকা উৎসবপ্রিয় বাঙালি। অবশ্য বারবেলা, কালবেলা, শুভাশুভ, কালরাত্রি, রাহু-কেতু, অমৃতযোগ, শুভদিন, শুভক্ষণ, ভ্রষ্টলগ্ন, শুভলগ্ন ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে মাথাব্যথা শুধু কি বাঙালির?
রকেট উৎক্ষেপণ থেকে চন্দ্রাভিযান অথবা মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধান থেকে শুরু করে মহাকাশের নির্দিষ্ট কোনও এলাকা প্রদক্ষিণের প্রাক্কালে দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের একটা বড় অংশ কি আজও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন না অভিযান তথা অনুষ্ঠানের শুভসূচনা নিয়ে? পঞ্জিকা ঘেঁটে শুভদিন ও শুভলগ্ন বাছাই করে চিরাচরিত প্রথায় নারকেল ফাটিয়ে হোমযজ্ঞ সমেত সাফল্য কামনার রীতি থেকে আজও বেরোতে পেরেছে কি একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক ভারতবর্ষ? দেশের যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের সূচনায় আদি সংস্কারের হাতে হাত রাখছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এ তো খুবই চেনা ছবি।
আরও পড়ুন-প্র্যাকটিসে হাবাস, স্বস্তি দিচ্ছেন সাহাল
তবে হ্যাঁ, দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে গৃহপ্রবেশ, মুখেভাত, পৈতে, সাধভক্ষণ, গায়ে হলুদ হয়ে একেবারে বিবাহ পর্যন্ত শুভক্ষণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পঞ্জিকা ছাড়া বাঙালির চলে না। আজকের এই তথাকথিত আল্ট্রা মডার্ন যুগেও মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের শুভসূচনায় পাঁজি ছাড়া গতি নেই বাঙালির। যতই আধুনিকতার বড়াই করা হোক না কেন, বাঙালি জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অংশ পঞ্জিকা। লগ্ন, তিথি, অমৃতযোগ, রাশিফল, মলমাস, কখন কী কী নিষিদ্ধ, উচিত-অনুচিত, ভাল-মন্দ ইত্যাদি জানতে পাঁজির শরণাপন্ন হতেই হয়। প্রতিদিনের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান, চন্দ্রোদয়, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত, সময়-অসময়, জোয়ার-ভাটা— সবই লেখা থাকে পাঁজির পাতায়। একাদশী ও অম্বুবাচী জেগে থাকে জীবনকে ভালবেসে।
‘পঞ্চাঙ্গ’ শব্দ থেকে এসেছে ‘পঞ্জিকা’। বার, তিথি, নক্ষত্র, করণ ও যোগ— এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমষ্টি হল ‘পঞ্জিকা’। নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতা ও কৃত্রিম আলোর ছটায় গুলিয়ে যায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমা। তখন সঠিক পথ দেখায় পাঁজি। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁজিকে বলা হয় ‘পঞ্চঙ্গম’। পঞ্জিকার বিভিন্ন প্রকার আছে।
‘ডিরেক্টরি পঞ্জিকা’ (ম্যাগনাম ওপাস), ‘পূর্ণ পঞ্জিকা’ (পাতলা সংস্করণ), ‘অর্ধ পঞ্জিকা’ (সংক্ষিপ্ত সংস্করণ) ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে ‘পকেট পঞ্জিকা’। দামেও ভিন্নতা রয়েছে।
সারা দেশের নিরিখে এগুলোর মধ্যে অধিক প্রভাবশালী জাতীয় ও আঞ্চলিক হিন্দু পঞ্জিকাগুলি হল নেপালের সরকারি নেপালি পঞ্জিকা, ভারতের বাংলা পঞ্জিকা, পঞ্জাবি পঞ্জিকা, ওড়িয়া পঞ্জিকা, মালয়ালম পঞ্জিকা, কন্নড় পঞ্জিকা, তামিল পঞ্জিকা, টুলু পঞ্জিকা, বিক্রম সংবৎ ও দাক্ষিণাত্যের কর্নাটক, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের শালিবাহন পঞ্জিকা এবং মহারাষ্ট্রের মারাঠি পঞ্জিকা।
পঞ্জিকার পাতা উল্টিয়ে বাঙালির বছর শুরু ও শেষ হয়। গোলাপি পাতায় মোড়া সস্তা কাগজে ছাপা আবেগ জড়ানো ‘ফুল পঞ্জিকা’ আজও নববর্ষের ঐতিহ্য ও পরম্পরা বহন করে চলেছে।
আরও পড়ুন-সমীক্ষায় কান দেবেন না, তৃণমূলই জিতছে
আজকের এই তথাকথিত আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে, যেখানে ৪জি-৫জি বাজার মাতাচ্ছে নিত্যদিন, যেখানে মোবাইল ফোনে একটা ক্লিক করেও পঞ্জিকা পড়ে নেওয়া যায়, সেখানেও বাঙালির বেণীমাধব শীলের (পূর্ণাঙ্গ) পঞ্জিকায় একবার চোখ বোলাতে না পারলে বাঙালির শান্তি নেই। নববর্ষের সকালে হালখাতা অনুষ্ঠানের শরবত আর মিষ্টির সঙ্গে পঞ্জিকা কেনার রীতি যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
ইতিহাস অনুযায়ী, বাংলায় প্রথম পঞ্জিকার প্রচলন করেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা রঘুনন্দন। এই ব্রাহ্মণ ছিলেন সেকালে খ্যাতনামা পণ্ডিত। শুভাশুভের সন্ধানে মানুষ দ্বারস্থ হতেন এই ব্যক্তির। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর গণনায় কিছু ভুলত্রুটি পাওয়া যায়। তখন নবদ্বীপের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রামচন্দ্র বিদ্যানিধিকে দায়িত্ব দেন বাংলা পঞ্জিকা প্রকাশের। বাংলায় দু’ধরনের পঞ্জিকার প্রচলন রয়েছে। একটি গুপ্তপ্রেসের পঞ্জিকা। এটি প্রকাশিত হয় বেনিয়াটোলা লেন থেকে। প্রায় এক শতাব্দী ধরে দুর্গাচরণ গুপ্তের বংশধরেরা এই পাঁজি প্রকাশ করে চলেছেন। অন্যটি, কবিরাজ স্ট্রিট থেকে প্রকাশিত বেণীমাধব শীলের ফুল পঞ্জিকা।
ইংরেজদের আমলেও পঞ্জিকার রমরমা ব্যবসা ছিল। এমনকী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতেও একাধিক বাংলা পঞ্জিকা পাঠান ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রর্দশনী। ১৮৬৭ সালে।
পাঁজির মূল পাঁচটি বিষয়কে বলে পঞ্চাঙ্গ। শনি থেকে শুক্র, এই সাতটি দিন হল ‘বার’। চান্দ্রমাসের তিরিশ দিন মানে তিরিশ ‘তিথি’। এক পূর্ণিমা থেকে আরম্ভ করে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত কৃষ্ণপক্ষীয় তিথি এবং ওই অমাবস্যা থেকে পরবর্তী পূর্ণিমার প্রারম্ভ পর্যন্ত শুক্লপক্ষীয় তিথি। ‘নক্ষত্র’ গোনা হয় সূর্যের দৈনিক গতিপথ নিরীক্ষণ করে। এই গতিপথে অশ্বিনী, ভরণী, কৃত্তিকা, রোহিণী, মৃগশিরা ও আদ্রার মতো মোট ২৭টি নক্ষত্রের দেখা পাওয়া যায়। বাংলা মাসের নামকরণে এদের প্রভাব লক্ষণীয়।
আরও পড়ুন-স্মার্ট পঞ্চায়েতের পর আর একধাপ এগোল রাজ্য, পঞ্চায়েতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
‘রাশি’ চিহ্নিত হয়েছে ২৭টি নক্ষত্রকে ১২ ভাগে ভাগ করে। মেষ, মিথুন, বৃশ্চিক, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তুলা ইত্যাদি নামের রাশির সঙ্গে সকলেই পরিচিত। জীবজন্তুদের অবয়বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এদের নামকরণ করা হয়েছে। পঞ্জিকার অন্যতম অঙ্গ ‘যোগ’। নক্ষত্রের মিলনে যোগের সৃষ্টি হয়। যোগ মানে যুক্ত করা বা হওয়া। জ্যোতিষশাস্ত্রে যোগ হল কালবিশেষ। এদের সংখ্যাও ২৭। তিথিগুলোর অংশবিশেষ নিয়ে এক একটি ‘করণ’। বব, বালব, তৈতিল, কৌলব ইত্যাদি ১১টি করণ রয়েছে পঞ্জিকাশাস্ত্রে।
তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক ও নাস্তিকেরা পঞ্জিকা বা পাঁজিকে ‘কুসংস্কারের আঁতুড়ঘর’ বলে গাল পাড়েন। অথচ হিন্দুদের কাছে অতীব জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ এই গ্রন্থে গর্ভাধান, পঞ্চামৃত, সাধভক্ষণ, নামকরণ, চূড়াকরণ, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন, বিবাহের দিন, এমনকী মৃত্যুর সময়, বার-তিথি-নক্ষত্রের দোষত্রুটি ইত্যাদি সমস্তই লিপিবদ্ধ থাকে। ঠিকুজি-কুষ্ঠী রচনা করতে, শুভাশুভ দিনক্ষণ দেখতে পাঁজির আজও কোনও বিকল্প নেই।
একেবারে আদিতে ফিরে তাকালে দেখা যায়, গবেষকদের অনুমান অনুযায়ী যজুর্বেদ রচিত হয়েছে ১৫০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে। যজুর্বেদে ফাল্গুনী পূর্ণিমা ও বারো মাসের উল্লেখ পাওয়া যায়। ১০০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে ভারতে ১২টি মাস, ২৭টি নক্ষত্র ও ৩০টি তিথি নিয়ে গণিত আধারিত বিজ্ঞানসম্মত পঞ্জিকা ব্যবহৃত হত, এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে। খ্রিস্টীয় চতুর্থ বা পঞ্চম শতকে আর্যভট্ট (৪৭৬ খ্রি.), বরাহমিহির (৫০৫ খ্রি.), ব্রহ্মগুপ্ত (৫৯৮ খ্রি.) মূলত জ্যোতির্বিদ্যার উপর ভিত্তি করে নতুনভাবে পঞ্জিকা রচনা করেন। বলা যেতে পারে বরাহমিহিরের ‘সূর্য্যসিদ্ধান্ত’ আধুনিক পঞ্জিকার জন্মদাতা। বাংলা পাঁজিও বহু পুরনো। স্মার্ত রঘুনন্দনের জন্ম চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মের (১৪৮৬) পঁচিশ বছর পরে। তালপাতায় পাঁজি লিখে প্রকাশ করতেন রঘুনন্দন। তা অনুলিখিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ত সারা বঙ্গে। এরপরে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ‘নবদ্বীপ পঞ্জিকা’ প্রকাশ করেন তুলট কাগজে পাঁজি রচনা করিয়ে।
আরও পড়ুন-কোচবিহারে রোড শো-তে জনসমুদ্র, রাজবংশীদের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক
রামচন্দ্র (মতান্তরে রামরুদ্র) বিদ্যানিধির উপর এই দায়িত্ব অর্পণ করেন কৃষ্ণচন্দ্র। ১৮১৮ সালে প্রথম বাংলা হরফে ছাপা পাঁজিকা প্রকাশিত হয়। জোড়াসাঁকোর জনৈক দুর্গাপ্রসাদ বিদ্যাভূষণ ছিলেন পাঁজির সংকলক এবং প্রকাশক ছিলেন রামহরি। ১৩৫ পাতার এই পাঁজিটি জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পত্রিকা’র সঙ্গে জ্যোতির্বিদ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম যুক্ত হয়ে আছে। তিনি পঞ্জিকা অধ্যয়ন করার পরে প্রচলিতভাবে গ্রহ-নক্ষত্রের প্রকৃত এবং জ্যোতিষীয় অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য খুঁজেছিলেন এবং বৈজ্ঞানিক পাঠ অনুসারে পাঁজি সংশোধন করেছিলেন। আরও উল্লেখ্য, ওড়িয়ায় ছ’টি পাঁজির অন্যতম মাদালা পাঁজি। মাদালা পাঞ্জি দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষার প্রথম পঞ্জিকা। এটি ওড়িশার ইতিহাসের মূল উৎস ও প্রমাণস্বরূপ।
পঞ্জিকার মূলস্তম্ভ স্মৃতিশাস্ত্র ও গণৎকার। বার, তিথি, নক্ষত্রকরণ ও যোগ— প্রধানত এই পাঁচ অঙ্গের সমাহারে তৈরি হয় পাঁজি। কিন্তু আজকের পঞ্জিকা প্রকাশকদের একটি বড় অংশের আক্ষেপ এই যে, বর্তমানে স্মৃতিশাস্ত্রচর্চা ভীষণ কমে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ চর্চা। এই অমূল্য শাস্ত্রের অধ্যয়ন ও চর্চা বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া উচিত সব পক্ষেরই।
অবশ্য ইতিবাচক দিকও আছে। ডিজিটাল ফরম্যাটে আসার পর পঞ্জিকার চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকী বিদেশেও এর চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি পঞ্জিকার পকেট সংস্করণ বের করেছে গুপ্তপ্রেস।
আরও পড়ুন-প্র্যাকটিসে হাবাস, স্বস্তি দিচ্ছেন সাহাল
বঙ্গজীবনের এই অপরিহার্য অঙ্গ, অনেকেই যেটিকে বলেন বাঙালির বিশ্বকোষ, সেই পঞ্জিকা কিন্তু সত্যিই বাঙালি সংস্কৃতির নানান রূপ, রস, সংস্কার ও ভাবনার এক চলমান ইতিহাস। আগে ফি-বছর হত নবপঞ্জিকা শ্রবণ, আর এখন নববর্ষের সূচনায় হয় পাঁজি ক্রয় ও পাঠ। ঘটমান বর্তমান ও ভূত-ভবিষ্যৎ একসাথে একই মলাটের নিচে আর কোন গ্রন্থেই বা ধরা থাকে! শুভাশুভ লগ্ন বিচারের এমন সহজ অভিধান কে না কিনে রাখতে চান? পাঁজির সর্বত্রগামী হওয়ার সাক্ষ্য পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথের রচনাতেও।
নববর্ষ উদযাপন সব দেশেই সর্বজনীন উৎসবের চেহারা নেয়। তাই একথা বলা যায় যে, সমাজ বিকাশের ধারায় একটা উন্নত পর্যায়েই কোনও জাতির নববর্ষ উৎসব ও তার পঞ্জিকার উদ্ভব ঘটে। এর একটা ধারাবাহিক ইতিহাস থাকে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্বের দিক থেকে ব্যাখ্যা করলে বাংলায় বর্ষবরণ ও বর্ষপঞ্জি উদ্ভাবনের যে-পরিচয় পাওয়া যায় তা অন্যান্য সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত প্রক্রিয়া থেকে পৃথক নয়। পাঁজির বিবর্তন একেবারে হয়নি তা নয়। তবে সময়ের সঙ্গে তাল রেখে পাঁজিকে আরও বিশ্বস্ত ও বিজ্ঞানসম্মত করে তোলার নিরন্তর প্রয়াসও অব্যাহত থাকা উচিত। খণ্ডিত বিভিন্ন কালের সঙ্গে সমকালের সমন্বয় সাধন করে পঞ্জিকা আরও আধুনিক হয়ে উঠুক, আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠুক, এই চাহিদা আপামর বাঙালির।