প্রতিবেদন : যারা বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করেছে, তাদের কোনওমতেই ক্ষমা নয়। মানুষের অধিকার হরণ করেছে কেন্দ্র। এবার মানুষই তাদের জবাব দেবে। রবিবার মহেশতলায় জলপ্রকল্পের সূচনা করে বিজেপির বঞ্চনার বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, শ্রমিকের হকের পাওনা গায়ের জোরে আটকে রেখেছ তোমরা, মানুষ তোমাদের ছাড়বে না।
আরও পড়ুন-মামলার তালিকায় স্বচ্ছতার পক্ষে সওয়াল
স্বৈরাচারী-অত্যাচারী শাসক : রবিবার তিনি বিজেপি ও কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, মনে রাখবেন, গণতন্ত্রে শেষ কথা বলে মানুষ। কোনও বিচারব্যবস্থা, কোনও এজেন্সির কথা সেখানে চলে না। সাধারণ মানুষকে কাজ করিয়ে টাকা দেয়নি মোদি সরকার, কেউ কি পারে এভাবে কাজ করিয়ে টাকা না দিতে? যারা এই অন্যায় করে চলেছে দিনের পর দিন, আমরা তাদেরকে বলি স্বৈরাচারী বহিরাগত, অত্যাচারী জমিদার। প্রধানমন্ত্রী, আপনি ভাঁওতা দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছেন, ধর্মের উসকানি দিয়ে স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন, মানুষ আপনাদের জবাব দেবে। আগামী দিনে শেষ দেখে ছাড়ব আমরা। মানুষের অধিকার বঞ্চিত করলে ছেড়ে কথা বলব না। তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের পাশে থেকে লড়াই চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন-‘৫ দশকের সমস্যার সুরাহা করেছি’ মহেশতলা থেকে জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
কথা দিলে কথা রাখি : রবিবার মহেশতলায় ৪০ গ্যালন জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। তিনি একইসঙ্গে উড়ালপুলের নিচে সাড়ে সাত কিলোমিটার রাস্তারও উদ্বোধন করেন। এরপরই তিনি বলেন, আমরা কথা দিলে কথা রাখি। কিন্তু কেন্দ্রের সরকার শুধু বঞ্চনা করে। বাংলার মানুষের বকেয়া ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা জোর জবরদস্তি আটকে রেখেছে। আর তার একটাই কারণ ওরা ভোটে হেরেছে।
আরও পড়ুন-‘আদালতের কারণেই শাহজাহানকে ধরা যাচ্ছে না’ সাফ কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
বাংলার মানুষকে সম্মান দেয় না : মানুষের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দু-বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আমরা দিল্লিতে ধরনা দিয়েছি, আমাদের মহিলা সাংসদদের চুলের মুঠি ধরে দিল্লি পুলিশ বের করে দিয়েছে। আমরা যখন বুঝলাম বাংলার মানুষের সম্মান নেই এঁদের কাছে, তখনই মুখ্যমন্ত্রী স্থির করলেন রাজ্য সরকারই শ্রমিকদের টাকা দিয়ে দেবে। অদক্ষ শ্রমিকদের কাছে সরাসরি অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছতে শুরু করবে সোমবার থেকেই। অভিষেক বলেন, ডেটা সংগ্রহ করে দেখা গেল শ্রমিকের সংখ্যাটা ৫৯ লক্ষ। তাদের প্রত্যেককে রাজ্য বকেয়া মিটিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন-ই-বাইকের ব্যাটারি ফেটে নিউ ইয়র্কে মৃ.ত্যু এক ভারতীয় সাংবাদিকের
১০ পয়সা অবদান কেন্দ্রের নেই : শুধু একশো দিনের টাকা নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে আপনাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ১ এপ্রিল থেকে মাসে ১ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন বাংলার মা-বোনেরা। এর মধ্যে ১০ পয়সা অবদান কেন্দ্রের নেই। ১০ পয়সা কেন্দ্র দিয়েছে প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না। তিনি আরও বলেন, আমরা উন্নয়নে বিশ্বাসী। আপনাদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিই আমরা। তাই বইয়ের পাতা পড়তে হাঁফিয়ে যাবেন, কিন্তু বাংলার উন্নয়ন শেষ হবে না। তাই জনগণের আস্থা মা-মাটি-মানুষের সরকারেই।
আরও পড়ুন-প্রয়াত পরিচালক কুমার সাহানি, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
কর্মের ভিত্তিতে ভোট হবে : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্পষ্ট করে দেন কোথায় ফারাক দু-দলের। তাঁর কথায়, আমরা মানুষকে ভাঁওতা দিই না। আমরা বিভাজন করি না। আমরা মানুষের অধিকারকে সম্মান করি। আর ওরা শুধু বঞ্চনা করে। ধর্মের উসকানি দিয়ে ভোট করে। এবারও কর্মের ভিত্তিতে ভোট হবে। মানুষের অধিকারের দাবিতে ভোট হবে। তখনই প্রমাণ হয়ে যাবে মানুষের আস্থা তৃণমূলেই। মানুষের আস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর।
ভোটের পরিসংখ্যানেও এক নম্বর করুন : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, সমস্যা হলে সরসরি তাঁকে চিঠি পাঠান। আপনাদের সব কাজ সাধ্যমতো করে এসেছি, সাধ্যমতো করব। উন্নয়নে সেরা ডায়মন্ড হারবার. এবার ডায়মন্ড হারবারকে ভোটের পরিসংখ্যানেও এক নম্বর করুন আপনারা। তা করার দায়িত্ব আপনাদের হাতেই। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট সেরার সেরা হয়েছে। গত ১০ বছরে ডায়মন্ড হারবারে ৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। মহেশতলাবাসীকে অনুরোধ, আপনারা কর্মেও এক নম্বর, এবার ভোটের পরিসংখ্যানেও আমাদের এক নম্বর করার দায়িত্ব আপনাদের।
আরও পড়ুন-রামমন্দির দর্শনে হোটেল বুকিংয়ে প্রতারণা, বিপাকে পুণ্যার্থীরা
* ২০৪০ অবধি ডায়মন্ড হারবারবাসীর আর জলের অসুবিধে হবে না
* কথা দিয়ে কথা রাখার নামই ডায়মন্ড হারবার মডেল
* কেন্দ্রের কাছে বাংলার বকেয়া ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা
* কেন্দ্রের কাছে বাংলার মানুষের কোনও সম্মান নেই
* আধার কার্ড বিজেপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়
*বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই বাংলার হকের টাকা আটকে রেখেছে
* ৫ জানুয়ারি : ইডি আক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ পরপর ৩টি এফআইআর করে।
* প্রথম এফআইআর : প্রথম এফআইআর হয় ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযোগ ছিল ইডির আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসারদের উপর শাহজাহান শেখের সমর্থকরা হামলা করেছে। ইডি তার অভিযোগে লিখেছিল, আক্রমণে ৩ জন অফিসার আহত হলে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অফিসারদের মোবাইল, ল্যাপটপ, টাকার ব্যাগ চুরি হয়েছিল বলেও অভিযোগ ছিল।
* দ্বিতীয় এফআইআর : দ্বিতীয় এফআইআর হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে। তাঁদের
অভিযোগ ছিল, ইডির আধিকারিকরা এলাকায় গোলমাল করছেন। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ ছিল, ইডি আধিকারিকরা জোর করে শাহজাহানের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। তারা তল্লাশির কোনও নথি দেখাতে পারেননি। আইনত যা বাধ্যতামূলক।
কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তের উপর ৩১ মার্চ অবধি স্থগিতাদেশ জারি করে।
* তৃতীয় এফআইআর : ইডি অফিসারদের উপর আক্রমণের অভিযোগে তৃতীয় এফআইআরটি পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের করে।
* পরবর্তী শুনানি : ১) এসআইটি (সিট) শুনানি ৬ মার্চ। এফআইআরের শুনানি ৩১ মার্চ।