কোনও ‘দাদা’র তল্পিবাহক হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়া যাবে না, সাফ কথা অভিষেকের

Must read

কোনও ‘দাদা’র তল্পিবাহক হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়া যাবে না। যাঁরা সৎ-স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তির মানুষ, তাঁদেরই পাশে থাকবে তৃণমূল। শনিবার, কেশপুরের জনসভা থেকে সাফ জানিয়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC- Abhishek Banerjee)।

তাহলে কারা হবেন আগামী দিনে তৃণমূলের মুখ? তাঁদের সামনে নিয়ে এলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC- Abhishek Banerjee)। একজন কোনও দলের কর্মী-সমর্থক নন। নেহাতই দিন আনা, দিন খাওয়া গ্রামবাসী। আর এক দম্পতি যাঁরা তৃণমূলের বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত সদস্যা হয়েও থাকেন মাটির বাড়িতে। বৃষ্টি হলে চাল দিয়ে জল পড়ে। তবু, আবাস যোজনায় টাকা নিচ্ছেন না তাঁরা। তাঁরাই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের নতুন তৃণমূলের মুখ- স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অভিষেক।

এদিন সভার শুরুতেই কড়া বার্তা দেন অভিষেক। জানান, নেতাদের রেষারেষিতে দলকে দুর্বল করলে ‘ওষুধ’ প্রয়োগ করা হবে। অভিষেক জানান, তিনি তৃণমূলের ‘পাহারাদার’। “কোন অঞ্চল সভাপতি কী করছে আমার নজরে আছে।“ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “কয়েকজন নেতার কাজে দলের মাথা নত হলে তা সহ্য করব না।“ পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী ঠিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও- জানিয়ে দেন অভিষেক। বলেন, মানুষ তৃণমূলকে যেভাবে দেখতে চায় সেটাই নতুন তৃণমূল। “পাহারাদারির দায়িত্বে আমি আছি। যাঁরা ভেবেছেন প্রার্থী হয়ে মানুষের কাজ করবেন না সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।“

আরও পড়ুন: কেশপুরের পথে বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনে অন-দ্য-স্পট পদক্ষেপ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এরপরেই অভিষেক মঞ্চে নিয়ে আসেন শেখ হোসিনুদ্দিনকে। পরিচয় দিয়ে বলেন, হোসিনুদ্দিনের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। কিন্তু তিনি বলেছেন, তিনি আবাস যোজনায় টাকা নেবেন না। কারণ, যে টাকা দেওয়া হচ্ছে, তাতে বাড়ি হয় না। বাকি টাকা নিজের থেকে দিতে গেলে, তাঁর ছেলের লেখাপড়া, মেয়ের বিয়ে হবে না। তাই আবাস যোজনার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন শেখ হোসিনুদ্দিন। তিনি বাসের হেল্পার। হোসিনুদ্দিনের বাড়ির ছবি সভায় দেখান অভিষেক। বলেন, এঁরাই বাংলার মুখ। এটাই সততা। কিন্তু দিল্লি দেখাতে চাইছে বাংলার সব মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তৃণমূল সাংসদের কথায়, এই হোসিনুদ্দিনরাই আগামী দিনে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের মুখ। এরপরেই মঞ্চ থেকে অভিষেক ঘোষণা করেন, হোসিনুদ্দিনের মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব তাঁর।

এরপরেই অভিষেক মঞ্চে ডাকেন পঞ্চায়েত সদস্যা মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামী বুথ সভাপতি অভিজিৎ দলবেরাকে। জানান, তাঁরাও জানান ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার জন্য টাকা প্রয়োজন। আবাসের টাকা তাঁরা নেবেন না। কারণ, বাড়ি করতে গেলে হাত শূন্য হয়ে যাবে। তাঁদের বাড়ির ছবিও সভায় দেখান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এরকম সৎ মানুষই পঞ্চায়েতের মুখ। তিনি গর্বিত, যে তৃণমূলের এই ধরনের নেতা-কর্মী আছেন। দলবেরা দম্পতির বাড়ি তৈরির দায়িত্ব দলের।

অভিষেক সাফ জানান, তৃণমূল করে খাওয়ার দিন শেষ। সৎভাবে মানুষের পাশে থেকে যাঁরা মাথা নীচু করে মানুষের কাজ করবেন, তাঁরাই দলে জায়গা পাবেন।

Latest article