বিরাট বিপর্যয়ের পর মোদির স্বপ্নের প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে

সেই সিল্কিয়ারাতেই বিপর্যয় এবং টানা ১৭ দিন পর র‍্যাটহোল মাইনার্সদের কৃতিত্বে জীবিত উদ্ধার পেয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক।

Must read

প্রতিবেদন : ভূমিধসের বিরাট বিপর্যয়ের পর কী হবে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ভবিষ্যৎ? এখন এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। চারধাম প্রকল্পের অংশ হিসাবেই ভূমিধসপ্রবণ উত্তরাখণ্ডের এই এলাকায় দীর্ঘ টানেল তৈরির অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও পড়ুন-প্রতিবাদী আহেদ তামিমিকে মুক্তি ইজরায়েলের, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি

সেই সিল্কিয়ারাতেই বিপর্যয় এবং টানা ১৭ দিন পর র‍্যাটহোল মাইনার্সদের কৃতিত্বে জীবিত উদ্ধার পেয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। প্রধানমন্ত্রী মোদির স্বপ্নের চারধাম প্রকল্পের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ধসে যাওয়া এই সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গ। বিপর্যয়ের পর সেই চারধাম প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয় তীব্র হচ্ছে।

আরও পড়ুন-বিজেপিকে ধাক্কার ইঙ্গিত সমীক্ষায়

চারধাম যাত্রা সহজ করতে পরিবেশবিদদের সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করেই সিল্কিয়ারা থেকে বারকোট পর্যন্ত সুড়ঙ্গ তৈরিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি। তার মাথায় ছিলেন স্বয়ং মোদি। মোট চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কথা ছিল সিল্কিয়ারায়। গোটা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ১,৩৮৩ কোটি টাকা। চার বছর আগে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদও ছিল চার বছরই। অর্থাৎ, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ঠিক সেই সময়েই ঘটেছে এই মারাত্মক দুর্ঘটনা।
উত্তরাখণ্ডের গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী দেশের পরিচিত পর্যটনস্থল। একটি গঙ্গা নদী এবং অন্যটি যমুনা নদীর উৎসস্থল। এদের মধ্যে দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। বলা হয়, সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ হলে এই ২৮ কিলোমিটার দূরত্ব মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটারে অতিক্রম করা সম্ভব হবে। সেই কারণেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। কাজ যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে তখনই নামে এই ধস। কেন সুড়ঙ্গে আচমকা ধস নামল? মনে করা হচ্ছে, সুড়ঙ্গের কোনও অংশে পাথর আলগা ছিল। কোথাও হয়তো ফাঁপা অংশে জল জমে ছিল। তাই খননের সময় প্রচণ্ড শব্দে ধস নেমে সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এই দুর্ঘটনার জেরেই আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। দীর্ঘ ১৭ দিনের চেষ্টার পর উদ্ধার সম্ভব হয় শ্রমিকদের।

আরও পড়ুন-আগামী মার্চের মধ্যেই লক্ষ্যপূরণ করতে চায় রাজ্য, আরও এক কোটি বাড়িতে পানীয় জল

১৭ দিনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর এখন প্রশ্ন একটাই, এই সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আবার কবে কাজ শুরু হবে? এই সুড়ঙ্গেই কি আবার নামবেন শ্রমিকেরা? সরকারের তরফে জানা যাচ্ছে, চারধাম প্রকল্পের জন্য সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ খোঁড়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে। বিশেষজ্ঞরা সুড়ঙ্গটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করবেন। তার পর এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এই সুড়ঙ্গেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আবার কাজ শুরু হবে, না কি বিকল্প কোনও রাস্তা খুঁজবেন কর্তৃপক্ষ, তা নিয়ে নীরব প্রশাসন। সংকটের জেরে এই মুহূর্তে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ভবিষ্যৎ তাই বিশ বাঁও জলে।

Latest article