মণিপুরে সারারাত গুলিবর্ষণ, থানা ও বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে জনতার হামলা

সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে উন্মত্ত জনতা ইম্ফল শহরে প্রাসাদ কমপ্লেক্সের কাছে অবস্থিত ভবনগুলিতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে।

Must read

প্রতিবেদন : অগ্নিগর্ভ মণিপুরে শান্তি ফেরা দূর অস্ত, প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া সাধারণ মানুষ। অশান্তি থামার বদলে তা আরও ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার রাতভর রাজধানী ইম্ফলে নিরাপত্তা বাহিনী ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। এই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন মানুষ জখম হয়েছেন। অশান্তি মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার পর বিজেপি নেতারা রাজ্যবাসীর চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন। একাধিক মন্ত্রীর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। মেইতেই ও কুকি, বিবদমান দুই জনগোষ্ঠীই অগ্নিগর্ভ মণিপুরের পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারকে দায়ী করছে।

আরও পড়ুন-অভি-যাত্রায় নবজোয়ার শেষে ভাল ফলের প্রত্যয় উঠছে ভেসে

গত ৩ মে থেকে টানা অশান্তির আগুন জ্বলছে মণিপুরে। কেন্দ্র ও রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকার সেই আগুন নেভাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মণিপুরের অশান্তিতে অসংখ্য প্রাণহানির পরও সদামুখর নরেন্দ্র মোদির মুখে কোনও কথা নেই। দুনিয়ার সমস্ত বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেও মণিপুরের হিংসা নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী। জাতিদাঙ্গায় এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গৃহহীন প্রায় ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ। রাজ্যে মৃত্যুমিছিল এখনও অব্যাহত রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসে বৈঠক করেও ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্যে শান্তি ফেরাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে সংঘাত-বিধ্বস্ত মণিপুরের কোয়াথা এবং কাংওয়াই এলাকায় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি চালানো হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত একটানা গোলাগুলি চলেছে। বেশ কিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ইম্ফলে বিজেপি নেতাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইম্ফলে র‍্যাফ নামানো হয়।

আরও পড়ুন-আজও পুরীগামী বহু ট্রেন বাতিল

জানা গিয়েছে, উপত্যকার বিষ্ণুপুর জেলার সীমান্তে কোয়াথা এবং চুড়াচাঁদপুর জেলার কাংওয়াই থেকে সারারাত গুলি চালানোর খবর পাওয়া গিয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে খবর। ইম্ফল পশ্চিমের ইরিবাম থানায় অস্ত্রাগার লুটের চেষ্টা হয়েছিল। তবে অস্ত্র লুট করতে পারেনি। সেনাবাহিনী, অসম রাইফেলস এবং মণিপুর র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ) ইম্ফলে মধ্যরাত পর্যন্ত যৌথ টহলদারি চালায়। সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে উন্মত্ত জনতা ইম্ফল শহরে প্রাসাদ কমপ্লেক্সের কাছে অবস্থিত ভবনগুলিতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। অন্যদিকে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। ইম্ফলে বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ সিংয়ের বাড়িতেও আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল জনতা।

আরও পড়ুন-উধাও ৮৮ হাজার কোটির ৫০০ টাকার নোট

পোরাম্পেটের কাছে বিজেপি মহিলা শাখার সভাপতি সারদা দেবীর বাড়িতেও লুটপাট চালানোর চেষ্টা করে বিক্ষুব্ধরা। সিনজেমাইতে বিজেপি অফিস ঘেরাও করেছিল তারা। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, রাজ্যের শাসকদল বিজেপির প্রতি মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। নিরাপত্তারক্ষীরা সব জায়গাতেই দ্রুত বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

Latest article