প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্য। সাড়া দিল বিরোধী দল। রাজ্যে নদীভাঙন সবচেয়ে বড় সমস্যা। তৃণমূল কংগ্রেসের ১১ বছরের শাসনকালে বহুবার কেন্দ্রের সরকারের কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মৌনতাই অবলম্বন করেছে। বরং ভাঙন নিয়ে রাজনীতি করেছে ভোটের সময়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে অপারগ হয়ে বিরোধী দল অবশেষে সাড়া দিয়েছে। ভাঙন রোধ করার জন্য কেন্দ্রের সাহায্য চেয়ে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল কেন্দ্রের কাছে যাবে।
আরও পড়ুন-দুয়ারে সরকারের প্রশংসায় ইউনিসেফ
১২ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে সরকার পক্ষের ৭ জন ও বিরোধী দলের ৫ জন বিধায়ক থাকবেন বলে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানিয়েছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে সম্মত হওয়ার পরেও বিজেপির মধ্যে নানারকম অবস্থান মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিজেপির এক গোষ্ঠীর মত আর এক গোষ্ঠীর বিপরীত। যাঁরা চান না তাঁরা বলছেন সফরে গিয়ে শাসক দলকে সুবিধা করে দেওয়ার অর্থ হয় না। বিজেপির বরং আলাদাভাবে নিজেদের যাওয়া উচিত। আবার আর এক দল বলছে, তৃণমূল কংগ্রেসের চাপে এক সময় কেন্দ্রকে সাড়া দিতেই হবে। তাহলে রাজ্যের দল এখনই কেন শআসক দলকে সঙ্গ দেবে না? ফলে সর্বদল দিল্লিতে যাচ্ছে একথা হলফ করে বলতে পারছেন না বিজেপি নেতারাই।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে দ্বিতীয়ার্ধে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ নদী ভাঙনের সমস্যা নিয়ে একটি প্রস্তাব আনেন। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে শোভনদেব বলেন, গঙ্গা, পদ্মা, ভাগিরথীর ভাঙনে মালদা মুর্শিদাবাদ নদীয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ বিপর্যস্ত। রাজ্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা করে চলেছে। অর্থ ব্যয় করেছে। কিন্তু এত বড় ভাঙন একা রাজ্য সরকারের পক্ষে রোখা সম্ভব না। কিন্তু এত বড় ভাঙন একা রাজ্য সরকারের পক্ষে রোখা সম্ভব না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় না। ফলে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন আমাদের উচিত সবাই মিলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করা।
আরও পড়ুন-শীতবস্ত্র আনতে দেরি, প্রকাশ্যেই ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে যেকোনো উদ্যোগের সঙ্গে আমরা আছি। রাজ্য বিধানসভা যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা মানতে প্রস্তুত আছি। এরপরেই অধ্যক্ষ ওই প্রতিনিধি দল তৈরির কথা ঘোষণা করেন। তার আগে প্রস্তাবের ওপর আলোচনা অংশ নেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, মানস ভুঁইয়া বিরোধী বিজেপির শঙ্কর ঘোষ, শিখা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
সেচমন্ত্রী বলেন, ভাঙন নিয়ে রাজ্যের অবস্থা ভয়ংকর। বহু মানুষ ঘর ছাড়া হচ্ছেন। আমাদের মনে হয় সবাই মিলে এই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত। জলসম্পদ মন্ত্রী মানস ভূইঁয়া বলেন, আমাদের রাজ্যে বাইরের জল এসে জমা হয়। ভৌগলিক কারণে এটা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের ভাঙন ভয়ংকর আকার নিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে হুগলি, হাওড়া, মালদা খুব খারাপ অবস্থা। একসময় প্রণব মুখোপাধ্যায় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন কেন্দ্র আর টাকা দিচ্ছে না। চিঠির পর চিঠি। কিন্তু কিছু হচ্ছে না। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দুই একটা অনুমতির জন্য আটকে রয়েছে। আসুন সবাই মিলে বাংলাকে বাঁচান।
আরও পড়ুন-ভারতের আজ সিরিজ রক্ষার ম্যাচ
এরপরেই স্পিকার ঘোষণা করেন সেচমন্ত্রী ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তৃণমূলের সাত জন আর বিজেপি দলের ৫ জন এই দলে থাকবেন। কারা যাবেন বিরোধী দলনেতার সঙ্গে কথা বলে পরিষদীয়মন্ত্রী ঠিক করবেন। এদিকে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, পশ্চিসবঙ্গের নাম বাংলা করার দাবি দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের কাছে পড়ে আছে। কেন্দ্রের সুপারিশ মত দু’দুবার প্রস্তাব সংশোধন করেও পাঠানো হয়েছে। এবার সর্বদল প্রতিনিধি দল দিল্লি গেলে এই বিষয়টি নিয়েও কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলুন এটা আমার প্রস্তাব।