বাংলাকে অসম্মানিত করতে তৎপর এক দল জনবিরোধী মুখ

যেদিনই ঘটনা ঘটেছে তৎক্ষণাৎ মুখ্যমন্ত্রী নিজে সারারাত জেগে প্রশাসনিকভাবে সমস্তটা সামলেছেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন।

Must read

বীরভূমের বগটুই। উন্নয়নের চাকাকে আটকে দিতে এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত রাজনীতির কারবারিদের নোংরা পরিকল্পনা। যে ঘটনায় প্রাণ থেকে সম্পত্তি সবই হারিয়েছে তৃনমূলের কর্মী সমর্থকরা সেই ঘটনায় তৃণমূলই নাকি অভিযুক্ত! দিশাহীন কুমতলবের মুখোশ ছিঁড়ে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রত্যেক দিনই সংবাদের শিরোনামে ‘রামপুরহাট’। রামপুরহাট-কাণ্ড নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক, বেদনাদায়ক এবং অনভিপ্রেত একটা ঘটনা। কিন্তু হঠাৎ করে একজন তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান খুন হলেন এবং তার পরক্ষণেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল কেন? এর পিছনে কী কোনও গোপন চক্রান্ত আছে? লুকিয়ে আছে কোনও ষড়যন্ত্র ? কেন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের কথা বলছি তার নেপথ্যে কয়েকটা কারণ কান পাতালেই শোনা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন-বন্ধ বিদ্যুৎ উৎপাদন, দেশজুড়ে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং ঘোষণা বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি

মা-মাটি-মানুষের সরকার তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি-সহ বিরোধীরা এই সরকারকে নাস্তানাবুদ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এমনকী বিরোধীদের সঙ্গে রাজ্যপালও সমানভাবে রাজ্যকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন যা বাংলার মানুষ সবসময় লক্ষ্ করছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং প্রশাসনিক দক্ষতায় বিরোধীদের এই প্রয়াস প্রত্যেকবার বানচাল হয়ে যাচ্ছে। পরপর যেসব উপনির্বাচন ও পুরনির্বাচন হয়েছে তার সব ক’টায় তৃণমূল কংগ্রেস যত সাফল্য লাভ করেছে ততই বিরোধীদের দৈন্যদশা প্রকট হয়েছে। বিরোধীরা নানা ছলে-বলে কৌশলে এই সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেস দলকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ যখন উন্নয়নের জোয়ারে বাংলার সাধারণ জনগণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়গান গাইছে ঠিক সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে রামপুরহাট-কাণ্ডে বিরোধীরা একজোট হয়ে মাঠে নেমেছেন পুরোদস্তুর পরিকল্পনা করে।

আরও পড়ুন-সভাপতি নিয়োগে ধীরে চলো নীতি

কেন বীরভুম জেলার রামপুরহাট? এই বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের একটা শক্তপোক্ত সাংগঠনিক জেলা। শুধু শক্তপোক্তই নয়, এই জেলায় বহুবার বিরোধীরা চেষ্টা করেও নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। এ-ছাড়াও প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে বীরভূম জেলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ইদানীং দেওচা-পাঁচামিকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক দিক থেকে বীরভূম জেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা স্থান দখল করতে চলেছে। যাকে কেন্দ্র করে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা প্রবল। ঠিক সেই সময় এই জেলায় এইরকম একটা ঘটনায় ষড়যন্ত্র থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিরোধীরা যাতে হাতে-গরম একটা বড় আন্দোলনের ইস্যু পেয়ে যান এবং সরকার তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেকায়দায় যাতে ফেলতে পারেন তার জন্য চক্রান্তের সম্ভবনা তো কোনও মতে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অথচ এই ঘটনায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যারা তারা হল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মী সমর্থক। মৃত্যু হল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী, নেতৃত্ব ও সমর্থকদের। আর এই ঘটনাকে সামনে রেখে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন বিজেপি-সহ সমগ্র বিরোধী জগাই মাধাই গদাই।

আরও পড়ুন-পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তৃণমূল

যেদিনই ঘটনা ঘটেছে তৎক্ষণাৎ মুখ্যমন্ত্রী নিজে সারারাত জেগে প্রশাসনিকভাবে সমস্তটা সামলেছেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন। সিট গঠন করেছেন, দোষীরা যাতে কেউ ছাড় না পায় তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন। পরের দিন সকালেই প্রথমে মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমকে পাঠিয়েছেন এবং তার পরেই তিনি নিজে প্রশাসনিক সমস্ত কর্তাকে সঙ্গে নিয়ে শোকার্ত ও আহত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শুধু পাশে থাকা নয়, যার যতটা প্রয়োজন সবটাই তিনি নিজের হাতে করেছেন। কড়া প্রশাসকের ভূমিকায় কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে শাস্তিও দিয়েছেন এবং নিজের দলীয় ব্লক সভাপতি-সহ অন্যদের গ্রেফতারও করিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর কাছে মানুষই শেষ কথা। দলের কেউ অশান্তি করলে তিনি যে কাউকে রেয়াত করেন না সেটা আবারও বুঝিয়ে দিলেন।

আরও পড়ুন-উন্নয়নের শপথ নিলেন দুই চেয়ারম্যান পার্কিং, নিকাশিতে জোর কৃষ্ণেন্দুর

এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন যেমন তাঁর স্নেহের স্পর্শ পেলেন তেমনই তিনিও যে তাঁদের পরিবারের একজন— সেটাও বুঝিয়ে দিলেন। এটাই তো একজন জননেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাজ। যে-কাজ অন্য বিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কোনও দিন দেখাতে পারেননি। অথচ এই সুযোগে বিরোধীরা ঘোলাজলে মাছ ধরার জন্য উঠে-পড়ে লেগে গেলেন। এই সময় বিরোধীদের উচিত ছিল শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা না করে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষকে একটা সঠিক বার্তা দেওয়া। কিন্তু এক্ষেত্রে বিরোধীরা সেই নোংরা খেলায় মেতে উঠে উগ্র বিরোধিতার নামে আসলে বাংলাকেই অসম্মানিত করলেন। মমতা বন্দ্যােপাধ্যায়ের চরম বিরোধিতাই তাঁদের একমাত্র পথ, তাই মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতেও তাঁরা পিছ-পা হন না। তাইতো ভাবতে হয় সত্যিই কি কোনও সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত আছে? আশা করি বাংলার মানুষ সব বুঝছেন এবং এর জবাব আগামী দিনে বিরোধীরা সুদে-আসলে পাবেন এটা আমাদের বিশ্বাস।

Latest article