গুলির লড়াইয়ে বনরক্ষা কর্মী সহ কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু, শোকস্তব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

মঙ্গলবার ভোররাতে সীমান্তে থাকা মুখরো গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। তারপরই মেঘলায়ের মুখ্যমন্ত্রী কারনাড সাংমা একটি জরুরী বৈঠক ডাকেন।

Must read

মঙ্গলবার গুলির লড়াইয়ের ফলে এক বনরক্ষা কর্মী সহ কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই রাজ্যের সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে মেঘলায়ের চেরি ব্লজম ফেস্টিভ্যাল (Cherry Blossom Festival)। শুধু তাই নয়, এই উৎসবে যে সাহিত্য অনুষ্ঠান (Literary event) হওয়ার কথা ছিল সেটাও বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা।

আরও পড়ুন-বিজেপিকে বিঁধলেন ইমরান

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার ভোররাতে সীমান্তে থাকা মুখরো গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। তারপরই মেঘলায়ের মুখ্যমন্ত্রী কারনাড সাংমা একটি জরুরী বৈঠক ডাকেন। সেখানকার গ্রাম প্রধান এবং ধর্মীয় নেতাদের এই বৈঠকে ডাকা হয়। বৈঠকে শিলং লিটারারি ফেস্টিভ্যাল (Shillong Literary Festival) বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মেঘালয় (Meghalaya) রাজ্যের পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সেখানের পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড়ের মুখরো (Mukroh) গ্রামে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন-কাতার বিশ্বকাপ বয়কটের ডাক বিজেপি নেতার

এই মর্মে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, মেঘালয়ের মুখরোতে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক গুলি চালানোর ঘটনায় আমি মর্মাহত এবং গভীরভাবে দুঃখিত। আসামের ৫জন নিরীহ নাগরিক এবং একজন বনরক্ষীর জীবন কেড়ে নিয়েছে এই সন্ত্রাস। আমার চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা এই কঠিন সময়ে তাদের পরিবারের সাথে রয়েছে’।

আরও পড়ুন-রণক্ষেত্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিক্ষোভের নামে এসএফআই হামলা

তিনি আরও বলেন, ‘আর কতদিন সাংমা কনরাডও হিমন্তবিশ্বশর্মা মেঘালয় নিয়ে এরকম উদাসীন থাকবেন? মেঘালয়বাসীরা কতদিন ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায় বাস করবে? এই অন্যায় আর কতদিন চলবে? আজকের ঘটনাটি এমডিএ সরকারের অযোগ্যতা প্রকাশ করে, নিজের লোকদের ব্যর্থ করে।’

 

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে দায় এড়িয়েছেন। জানা গিয়েছে, অসম পুলিশ এবং অসমের বনরক্ষীরা মেঘালয়ে প্রবেশ করে বিনা উস্কানিতে গুলি চালায়।রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাকমেন রিম্বুই ঘটনাস্থলে আসেন। তবে তাতেও সীমান্তে উত্তেজনা কমেনি।
অসম সরকারের বনরক্ষীরাই গুলি চালিয়েছে বলে খবর। মেঘালয় পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, জঙ্গলে কাঠ কুড়িয়ে একটি ভ্যান গাড়িতে করে গ্রামবাসীরা ফিরছিলেন। কাছেই ছিল অসমের বনরক্ষীরা। তারা গুলি করে গাড়ির টায়ার ফুটো করে দিলে সেটি দাঁড়িয়ে পড়ে। গাড়ি থেকে নেমে গ্রামবাসীরা প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। এরপরেই গ্রামবাসীদের সঙ্গে অসম বনরক্ষীদের বিবাদ, সংঘর্ষ এবং নির্বিচারে গুলি।

আরও পড়ুন-কলকাতা পুরসভায় পৃথক ক্যাডার

ঘটনাস্থলে চার জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে মারা যান আরও ২ জন।
অন্যদিকে অসমের কারবি আংলং জেলার পুলিশ সুপার ইমদাদ আলির দাবি, গ্রামবাসীরা কাঠ চুরি করে ফিরছিল। সে সময় তাঁদের বাধা দেয় বনরক্ষীরা। তারপরেই সংঘর্ষ এবং গুলি। কিন্তু প্রশ্ন হল, সংঘর্ষ থামাতে কেন গুলি চালাতে হল? কেন তাদের গ্রেফতার করা যায়নি? কেন পুলিশ আত্মরক্ষার নামে প্রথমেই বারবার গুলি চালাল?

আরও পড়ুন-

সাঁতরাগাছিতে সহায় ড্রোনএদিনের ঘটনার সঙ্গে গত বছর ঘটে যাওয়া নাগাল্যান্ডের মন জেলায় অসম রাইফেলসের সংঘর্ষের মিল আছে। সেখানেও কয়লা খনির শ্রমিকেরা কাজ শেষে গাড়ি করে বাড়ি ফেরার সময় অসম পুলিশ জঙ্গি ভেবে তাঁদের দিকে গুলি ছোঁড়ে। ঘটনাস্থলেই ১০ জনের মৃত্যু হয়। বারবার সেই অসম রাইফেলস। একের পর এক মৃত্যুর পরেও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নির্বিকার। অসম বিজেপি শাসিত রাজ্য বলেই কি এই নীরবতা? বারবার রক্তপাত ও মৃত্যুর পরেও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। ব্যবস্থা নেয় না কেন্দ্র। কেন্দ্রের লক্ষ্য শুধু অবিজেপি রাজ্যগুলি।

Latest article