গুয়াহাটি, ২৮ নভেম্বর : বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে এনে অস্ট্রেলিয়াকে গুয়াহাটিতে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৪৮ বলে ১০৪ নট আউট থেকে বিশ্বকাপের আফগান ম্যাচকে তিনি বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে ফিরিয়ে এনেছিলেন। তাঁর আটটি চার ও আট ছক্কার ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া জিতল ৫ উইকেটে। এই জয়ের ফলে ১-২ করে সিরিজে ভেসে থাকল অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন-চিকিৎসকদের ওপর নজরদারিতে পদক্ষেপ রাজ্যের
একসময় ১৩৪ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। রবি বিষ্ণোই দুই উইকেট নিয়ে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন তাদের। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল ও অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের জুটিতে ৯১ রান উঠে আসায় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এরমধ্যে শেষ ওভারে প্রসিধের বলে উঠেছে ২০ রান। তবে ৮৬ রানে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ফেলেছেন সূর্য। ১৯তম ওভারে ওয়েডকে (২৮ নট আউট) স্ট্যাম্প করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ঈশান কিশান। এগুলো না হলে খেলার ছবি বদলে যেত কি না সেটা অবশ্য চর্চার বিষয়। আর একটা বিষয় হল, শেষ ওভারে অর্শদীপ নয় কেন? বাঁহাতি পেসারকে স্লো উইকেটে খেলা তুলনায় কঠিন হত। প্রসিধের বলের গতিকেই কাজে লাগিয়েছেন অজিরা।
আরও পড়ুন-এপ্রিলে উদ্বোধনের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, সরেজমিনে প্রশাসনিক কর্তারা
অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটা ছিল মরণ-বাঁচন ম্যাচ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে তাদের জিততেই হত। অনেককে অবাক করে এই ম্যাচের আগে স্টিভ স্মিথ ও অ্যাডাম জাম্পাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। আর এটা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নির্দেশেই। সিডনিতে আগামী সপ্তাহে পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে। তার আগে স্মিথদের বিশ্রাম দেওয়া হল।
আরও পড়ুন-জেলা পরিষদের সভা ভন্ডুলের চেষ্টা বিজেপির
এমনকী ম্যাক্সওয়েল, স্টয়নিসকেও বুধবার দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই আবহে অস্ট্রেলিয়া কিন্তু এদিন দারুণ শুরু করেছিল। ২৪ রানের মধ্যে জেসন বেহেরনডর্ফ যশস্বী জয়সোয়ালকে (৬) ও কেন রিচার্ডসন ঈশান কিশানকে (০) তুলে নিয়ে ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। যশস্বীর ক্যাচ যায় অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের হাতে। স্টয়নিস নেন ঈশানের ক্যাচ। কিন্তু এরপর ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ৫৭ বলে ১২৩ নট আউট থেকে ভারতীয় ইনিংসের ভোল বদলে দেন। ম্যাক্সওয়েলের ২০তম ওভারে তিনি ৩০ রান নিয়েছেন।
আরও পড়ুন-পর্যটক টানতে সুন্দরবনে চালু হচ্ছে একাধিক পরিষেবা
গুয়াহাটিতে টস সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। সেটা আরও এইজন্য যে রাতের দিকে এখানে প্রচুর শিশির পড়ে। এদিন টসে ওয়েড সূর্যকে হারিয়ে তাই ভারতকে আগে ব্যাট দিতে সময় নেননি। তিনি সেটা বলেও দিলেন। সূর্য অবশ্য দাবি করলেন আগে ব্যাট করা নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সমস্যা ছিলই। এই সিরিজে রানের মধ্যে থাকা দুই টপ অর্ডার ব্যাটার এদিন খুব তাড়াতাড়ি ফিরে গেলেন।
তবে আরও ভরাডুবির আগে পরিস্থিতি সামলে দেন সূর্য ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। এঁদের জন্যই ১০ ওভারের শেষে ৮০/২ করতে পেরেছিল ভারত। তবে সুসময় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১ রান যোগ হওয়ার পর অ্যারন হার্ডির বলে সূর্য যখন ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন, নামের পাশে ২৯ বলে ৩৯ রান। পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা রয়েছে অধিনায়কের এই ইনিংসে। কিন্তু যে সময় সূর্যর ব্যাটে আরও রান দরকার ছিল, তখনই আউট হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-সৈয়দ মোদি টুর্নামেন্ট শুরু, লখনউয়ের কোর্টে পাখি
সূর্য ফিরে যাওয়ার পর মাথায় একরাশ চাপ নিয়ে ব্যাট করতে নামেন তিলক ভার্মা। তিলকের জন্য চাপ এটাই যে পরের ম্যাচে শ্রেয়স এলে তিনি হয়তো আর সুযোগ পাবেন না। উল্টোদিকে ঋতুরাজ ততক্ষণে ওয়েল সেট। ঝোড়ো হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গেল। পরে সেঞ্চুরি। মাঝখানে ঋতুরাজ এই বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন বলেই ভারতের রান ২২২/৩-এ গেল। তিলক ভার্মা নট আউট ৩১ রানে।
কিন্তু ফর্মে থাকা রিঙ্কুকে আগে কেন নামানো হল না, সেটা একটা প্রশ্ন। তিনি রোজই রান করছেন। দেশ জুড়ে প্রশংসা হচ্ছে। এমনকী সাইমন কাটিচ পর্যন্ত রিঙ্কুকে দারুণ ফিনিশার বলেছেন। কিন্তু কেকেআর ব্যাটার ভাল করে ব্যাট ঘোরানোর বলই পাচ্ছেন না! এদিন তিলক ২৪ বলে ৩১ নট আউট থেকে গিয়েছেন।