‘মিলন হবে কত দিনে…আমার মনের মানুষের সনে…’। জমে উঠেছে বাউলমেলা। শীতের রাত ক্রমশ গভীর…। আখড়ায় আখড়ায় একতারা, দোতারা, খমক, বাঁশি, ঘুঙুর, ডুপকি, তবলা, করতাল ইত্যাদি সহযোগে বাউলের উদাত্ত সুর, রাস্তার কোলাহল আর বিভিন্ন দোকানপসারের পাঁচমিশেলি এক শব্দ-গন্ধে মথিত মেলার আকাশ-বাতাস। তবে বাউল গানই বাউল মেলার প্রাণ। পায়ে ঘুঙুর পরে, আলখাল্লার মতো বিশেষ পোশাকে নেচে নেচে গাইছেন বাউল, পিছনে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যোগ্য সঙ্গত করছেন উজ্জীবিত সহশিল্পীরা। আখড়ার মাটিতে বসে আবিষ্ট শ্রোতার দল। চাদরমুড়ি দেওয়া শরীরগুলো মিঠে ওম মেখে হারিয়ে যাচ্ছে মনের কথার টানে…। মানুষের চিরন্তন আকুতির মধ্যে, বিষাদের সঙ্গে কী যেন এক অপূর্ব আনন্দও মিশে আছে বাউল গানে। মুহুর্মুহু ছড়িয়ে পড়ছে মহামিলনের বার্তা। মিলনের এ আকুতি মানুষের সঙ্গে মানুষের…আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার। জাতি, ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষের সঙ্গে মানুষের এইরকম একাত্ম হয়ে যাওয়া— এটাই তো বাংলার উজ্জ্বল পরম্পরা। আর শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই পরম্পরা বহন করে চলেছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের ছোট-বড় নানা বাউলমেলা বা বাউলদের ছোট-বড় নানা সমাবেশ, মূলত বাংলার অনন্য লোকসঙ্গীত, বাউল গানের এক অসাধারণ মানবদরদি আবেদন ও তার চিত্তাকর্ষক উপস্থাপন নিয়ে…। ভাবছি আর হাঁটছি মেলার পথ ধরে। দূরে, নদীর দিক থেকে বয়ে আসছে কনকনে ঠান্ডা হওয়া। কুয়াশা ক্রমশ ঘিরছে চারদিক… এগিয়ে চলি একটার পর একটা আখড়া দেখতে দেখতে।
আরও পড়ুন-ইঞ্জিনিয়ার নয়, মিস্ত্রিদের দিয়েই নির্মাণ! ক্ষুব্ধ মেয়র
কেতাবি অর্থে, বাউলরা আদতে বাংলার একটি ভ্রাম্যমাণ সম্প্রদায় বিশেষ। যদিও, ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যাডভান্স রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেটিভ আইডিয়াস ইন এডুকেশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায় যে, বাউল হল বাংলার একটি সমাজশৈলী (সোসাইটি স্টাইল) যেটি নাকি একাদশ শতকে ভক্তি আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। আবার ফ্লেম ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় ‘বাউল’ কথাটি অষ্টম শতাব্দীতে পার্সি মন্ত্র ‘বা’আল থেকে এসেছিল বলে মনে করা হয়। কোনও কোনও গবেষক সংস্কৃত ‘ভাতুল’ (অর্থাৎ পাগল) ও ‘ব্যাকুল’ (অর্থাৎ বিহ্বল) শব্দ থেকে বা আরবি ‘আউলিয়া’ (অর্থাৎ ভক্ত) শব্দ থেকে বাউল শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করেন। আবার কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, সহজিয়া বৌদ্ধ শব্দ ‘বজ্রকুল’ থেকে কালক্রমে ‘বাজুল’ এবং শেষমেশ তা ‘বাউল’ শব্দে পরিণত হয়। বাউল শব্দটি পঞ্চদশ শতকের বাংলা গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে ‘মাখনলাল চতুর্বেদী ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশন’-এর একটি গবেষণা থেকে। বৃন্দাবন দাসের ‘চৈতন্য ভাগবত’ এবং কৃষ্ণদাস কবিরাজের ‘চৈতন্য চরিতামৃত’ গ্রন্থে ‘বাউল’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। পরম্পরাগতভাবে বাউলরা অবিভক্ত বাংলার এক গ্রামীণ ও ভিন্নধর্মী সম্প্রদায় বলেই বহুল পরিচিত। ইউনেস্কো মনে করে এরা প্রচলিত প্রথাবহির্ভূত একটি ভক্তিমূলক ঐতিহ্যের অন্তর্গত। তবে গবেষক চিন্ময়ী দাসের একটি মূল্যবান গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে যে বাউলরা একটি সঙ্গীত ঐতিহ্য ও একটি সমন্বিত সম্প্রদায় উভয়কে নিয়েই গঠিত।
হেঁটে চলেছি সমানে…মেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে…। নানা দিক থেকে ভেসে আসছে বাউল গানের নানা সুর… খমকের ধ্বনি…। এই সুরে সুর মিলিয়ে মনে পড়ছে কবিগুরুর কথা… ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, তাই হেরি তায় সকল খানে’…। আর এই ‘প্রাণের মানুষ’টির খোঁজ পেতেই তো বাউলমেলায় আসা! সত্যি আশ্চর্য এক দর্শন এই বাউল সম্প্রদায়ের। পুণের ফ্লেম ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা অনুযায়ী এই দর্শন নাকি গড়ে উঠেছে মূলত ‘মনের মানুষ’-এর সন্ধানকে কেন্দ্র করে। বাউলরা প্রচলিত কোনও বিশেষ ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান বা সংস্কৃতিতে যুক্ত নন। বিভিন্ন গবেষকদের মতে, বাউলদের ধর্ম একটাই এবং তা হল মানবধর্ম। তাই নর-নারী নির্বিশেষে যে কোনও জাতি, শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মানুষ নির্দ্বিধায় বাউল সম্প্রদায়ে মিশে যেতে পারেন, কোনও বাধা নেই। আর বাউলদের এই দর্শন, ভাবনা-চিন্তা, দিনযাপন— সবই যেন ধরা দেয় তাদের আপাতসহজসরল অথচ নিগূঢ় আধ্যাত্মিক অর্থবোধক গানগুলিতে। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়… ধরতে পারলে মনবেড়ি দিতাম পাখির পায়’… মাটির গন্ধমাখা কী সহজ ভাষা, কী হৃদয়স্পর্শী নিবেদন! আখড়া-আশ্রিত শান্ত সুর ও মৃদু তালের সাধনসঙ্গীত এবং আখড়াবহির্ভূত অনুষ্ঠানভিত্তিক চড়া সুরে গান— সাধারণত এই দুটি ধারায় পরিবেশিত হয় বাউল গান।
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে কারখানা থেকে উদ্ধার ১০৭ কোটির মাদক
প্রসঙ্গত, প্রথিতযশা গবেষক চার্লস ক্যাপওয়েল তাঁর বিখ্যাত বই ‘দ্য মিউজিক অফ দ্য বাউলস অফ বেঙ্গল’ বইয়ে বাউল গানকে, ‘প্রফেশনাল ফোক মিউজিক’ বা পেশাদারি লোকসঙ্গীত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি ঐতিহাসিকভাবে এই গানগুলিকে আদি বাংলা চর্যাপদের সঙ্গে যুক্ত করেছেন যা সম্ভবত দশম শতাব্দীর প্রথম দিকে রচিত ভক্তিমূলক গানের একটি ভাণ্ডার। আবার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অফিসিয়াল পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী আজ ‘বাংলা লোকসঙ্গীতের একটি জনপ্রিয় রূপ হল বাউল সঙ্গীত, যা আধুনিক পাশ্চাত্য লোকসঙ্গীতের সঙ্গে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ’। বর্তমানে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশও এই বাউল গান…।
বাউলমেলায় শুধু যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বাউলদের নিবিড় যোগাযোগ ঘটে তাই নয়, মেলামেশার সুযোগ মেলে বাউলদের সঙ্গে বাউলদেরও। কারণ, এই মেলায় একসঙ্গে অনেক বাউল দূরদূরান্ত থেকে এসে একত্রিত হয় গান গাইতে এবং ভাবের আদান-প্রদান করতে। ভাব ও আনন্দের এই পারস্পরিক বিনিময়ে নতুন রসদ পায় জীবন। মেলার দর্শক ও বাউল, সমৃদ্ধ হয় সবাই, লাভ হয় সবারই। আমাদের রাজ্যে নানা প্রান্তে ছোট-বড় অনেকগুলি বাউল সমাবেশ চোখে পড়ে। কোনওটি বেশ পুরোনো, কোনওটি আবার নিতান্তই সাম্প্রতিক। উল্লেখযোগ্য বাউল সমাবেশ দেখা যায় বীরভূমের জয়দেব কেঁদুলি মেলা, শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা, নদিয়ার গোরভাঙার ফকিরি উৎসব, কদমখালির লালন মেলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের গঙ্গাসাগর মেলা, পূর্ব বর্ধমানের বননবগ্রামের বাউল ফকিরি মেলা ইত্যাদিতে। এর মধ্যে জয়দেব কেঁদুলি মেলা প্রাচীনত্ব ও জনপ্রিয়তার নিরিখে শুধু রাজ্যের মধ্যেই নয়, দেশের মধ্যেও অন্যতম বলে মনে করা হয়। কেউ বলেন এই মেলা চলে আসছে প্রায় ৪০০ বছর ধরে। কেউ বলেন আরও বেশি। তবে বর্ধমানের রাজা ত্রিলোকচাঁদ বাহাদুর ১৬৯২ সালে পৌষ সংক্রান্তির দিনে কেঁদুলিতে কবি জয়দেবের জন্মভিটের উপর নির্মিত রাধাবিনোদ মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক বিশাল উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুমান এই উৎসবই কালক্রমে জয়দেব মেলা নামে পরিচিত হয়। এমনটাই জানা যাচ্ছে গবেষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে। অজয় নদের তীরে এই মেলায় এখন চারশোর বেশি স্টল বসে। বাউলদের জন্য তৈরি হয় শতাধিক আখড়া। প্রায় তিন থেকে চার লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। দেশ-বিদেশ থেকে বেশ বড় সংখ্যায় পুণ্যার্থী ও পর্যটক আসেন। অসংখ্য সাধারণ মানুষ ও বাউলদের সঙ্গে মেলায় যোগ দেন ফকির ও সন্ন্যাসীরাও। শান্তিনিকেতনের পৌষমেলাতেও বাউলদের ব্যাপক সমাবেশ ঘটে। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে ১৮৯৪ সাল থেকে চলে আসছে এই ঐতিহ্যবাহী মেলা। বিপুলসংখ্যক বাউলের প্রাণচঞ্চল উপস্থিতি ও হৃদয়গ্রাহী গান যার অন্যতম আকর্ষণ। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা যায়, মেলার সূচনা থেকেই নাকি বাউলদের ‘ভাবে বিভোর’ নৃত্যগীতের উল্লেখ মেলে। কিন্তু মেলায় বাউলদের জন্য আলাদা আখড়ার ভাবনা অনেক পরে এসেছে।
আরও পড়ুন-চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হবেন না অভয়ার বাবা-মাকে, অনুরোধ তৃণমূলের
সম্ভবত ১৯১৯ সাল বা তার কিছু আগে থেকে মেলায় বাউলশিল্পীদের জন্য আলাদা আখড়ার ব্যবস্থা হয়ে থাকতে পারে। জমজমাটি এই মেলায় অংশ নেন অনেক বিদেশিও। প্রায় ৩৫ বছরের পুরনো নদিয়ার কদমখালির মেলাটি ‘আন্তর্জাতিক লালন মেলা’ বলেই বেশি পরিচিত। এখানে স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে যোগ দেন বাংলাদেশের বাউল শিল্পীরাও। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নদিয়ার গোরভাঙায় তিনদিনের ফকিরি উৎসবে অংশগ্রহণ করছেন রাজ্যের শতাধিক বাউল ও ফকির। পূর্ব বর্ধমানের বননবগ্রামের বাউল আশ্রমে সারাবছর ধরে চলছে বাউল চর্চা। এখানে বাউল ফকিরি মেলায় মিলছেন দেশবিদেশের বাউলপ্রেমীরা এমনকী গবেষকরাও। তবে মেলার প্রাচীনত্ব ও লোক সমাগমের দিক থেকে আমাদের রাজ্যে গঙ্গাসাগর মেলার সঙ্গে অন্য কোনও মেলার তুলনা করা কঠিন। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী সমাগমে দেশে কুম্ভমেলার পরেই এর স্থান। প্রতিবছর বাউলদের অংশগ্রহণে এই মেলা যেন একটা অন্য মাত্রা পায়। নেটিভপ্ল্যানেটের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনদিনব্যাপী এই মেলার শেষ দিনে শুরু হয় বাউল মেলা। গবেষক রাধামাধব মণ্ডলের লেখা থেকে জানতে পারা যায় যে, বিভিন্ন বৈষ্ণব মেলাতেও নাকি বাউলদের সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়। যেমন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম, অগ্রদ্বীপ, জাজিগ্রাম এবং বীরভূমের কোটাসুর গ্রামে এ-ধরনের বাউল সমাবেশ দেখা যায়। এর মধ্যে কেতুগ্রামের মেলাটি নাকি প্রায় তিনশো বছর ধরে চলে আসছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের ডেমরা, নরসিংদি ও ছেঁউরিয়ার বাউলমেলাও বেশ বিখ্যাত। নরসিংদির সপ্তাহব্যাপী মেলাটি প্রায় সাতশো বছর ধরে চলে আসছে বলে অনেকের অনুমান। অন্যদিকে মানুষের ঢল নামে বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের স্মরণে ছেঁউরিয়ার লালন মেলায়। প্রসঙ্গত, শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ নয়, বাউল শিল্পীরা সাম্প্রতিককালে ভারতের নানা রাজ্য এমনকী ইউরোপ, আমেরিকার নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মন জয় করেছেন শ্রোতাদের।
আরও পড়ুন-ব্রিজভূষণের বাড়িতে কুস্তি সংস্থার অফিস! চাপে পড়ে সাফাই কর্তাদের
চায়ের দোকানে বসে চোখটা কখন জুড়ে এসেছিল বুঝতে পারিনি। চটকা ভাঙল বাউলের সুরে, ‘পথ হারিয়ে পথে গেলি… পথের সন্ধান পেলি না… তোর বাউল হওয়া হল না’। বাউল গানেই ছড়িয়ে থাকে এমন আত্মসমীক্ষার সুর যা বাউলকে বোধহয় আরও সামনের দিকে টানে। যাই হোক, আবার সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলাম আমিও…। সাজ, সজ্জা, নিবেদন, ভাবনা… ঘুরতে ঘুরতে বাউলমেলার প্রতিটি প্রান্তে যেন আরও ভাল করে অনুভব হচ্ছে, বাউল সংস্কৃতি আদতে বাংলার একেবারে এক নিজস্ব সংস্কৃতি। যা মানুষের কথা বলে আর ভালবাসার বাঁধনে পরস্পরকে বেঁধে রাখতে চায়। এই ভালবাসা বিশ্বজনীন। তারই এক স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে এইরকম কোনও বাউলমেলায়। এ আমাদের বাংলার এক অনন্য সাংস্কৃতিক পরম্পরা। তাই গ্রাম, শহর সর্বত্র মানুষ যাতে তার স্বাদ পায় সেই জন্য যথোপযুক্তভাবে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও, ‘লোকপ্রসার প্রকল্প’র মাধ্যমে বিভিন্ন লোকশিল্পীদের সঙ্গে বাউল শিল্পীদের জন্য মাসিক ভাতা, সরকারি অনুষ্ঠানে পারিশ্রমিক-সহ গানের সুযোগ এবং ষাটোর্ধ্বদের জন্য মাসিক পেনশনের ব্যবস্থা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রত্যেক বছর তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত বাংলা সঙ্গীত মেলা, পৌষ উৎসব ও বিশ্ব বাংলা লোকসংস্কৃতি উৎসব ইত্যাদিতে বড় সংখ্যায় অংশ নিচ্ছেন বাউল শিল্পীরা। বাউল চর্চার জন্য বীরভূমের জয়দেবে রাজ্য সরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠছে বিশাল বাউল অ্যাকাডেমি। বাউল, দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং গবেষকদের থাকার ব্যবস্থা-সহ এখানে থাকবে একটি স্টুডিও, গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালা, গানের সংগ্রহ, পাণ্ডুলিপি, বাউলচর্চার সামগ্রী, ২৫০ আসন বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ, মুক্তমঞ্চ ইত্যাদি…।
দেখতে দেখতে আর ভাবতে ভাবতে কখন চলে গেল সময়…। পুবের আকাশ ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছে…একে একে স্তব্ধ হয়ে আসছে আখড়াগুলি…নিভে আসছে ধুনির আগুন…। বিদায় বাউলমেলা। ফিরছি এবার ঘরের পথে…। কোথা থেকে যেন ভেসে আসছে একাকী এক মগ্ন বাউলের সুর, ‘তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মন রে আমার… তাই জনম গেল, শান্তি পেলি না রে মন, মন রে আমার’…।