রেলের আশ্রয় থেকে পুলিশকে আক্রমণ বিজেপির

দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রেলের শেল্টারে থেকে পুলিশের ওপর বিজেপি কর্মীরা হামলা চালায়। নীরব ছিল আরপিএফ।

Must read

সৌমালি বন্দ্যোপাধ্যায়: রেলের কার্যত ‘নিশ্চিত’ আশ্রয়ে থেকে পুলিশের ওপর এলোপাথাড়ি হামলা চালাল বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে এভাবেই সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বর থেকে বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুঁড়ল। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ-কর্মী জখম হলেন। রাজ্য পুলিশের এডিজি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী আরপিএফের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে দফায় দফায় কথা বললেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরপিএফকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন-তদন্ত করবে সিআইডি

ফলে কার্যত বিনা বাধায় সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বর সশস্ত্র বিজেপি কর্মীদের দখলে চলে যায়। রেল চত্বর থেকেই দলীয় ঝান্ডা হাতে নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ইটপাটকেল, পাথর, কাঁচের বোতল প্রভৃতি ছুঁড়তে থাকে উন্মত্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এদিন সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড থেকে বিজেপি কর্মীরা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নবান্নর অভিমুখে মিছিল শুরু করে। নবান্ন থেকে প্রায় তিন কিমি আগে পুলিশ ব্যারিকেড করে মিছিল আটকে দেয়। বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান চালায়। তখন মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে হাওড়া সিটি পুলিশের একটি কিয়স্কে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিজেপি কর্মীরা।

আরও পড়ুন-ঘরের কাজ সামলে জঙ্গলরক্ষা করছেন গাঁয়ের বধূরা

রাস্তার ধারের রেলিং ভেঙে উপড়ে ফেলে দেয়। তখন পুলিশ, র‍্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স জলকামানের সঙ্গে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেইসময়েই মিছিলে হাঁটা বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও বিধায়ক অশোক দিন্দা কার্যত পালিয়ে যান। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে পড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও সশস্ত্র বিজেপি কর্মীরা দৌঁড়ে সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরে আশ্রয় নেয়। এরপর কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বিজেপি কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া গেলেও তারা সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরের রেলের জায়গায় গিয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে পুলিশের ওপর হামলা চালাতে শুরু করে। সেখান থেকে রেলের পাথর, আধলা ইট, বাঁশ, কাঁচের বোতল প্রভৃতি পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ছুঁড়তে থাকে বিজেপি কর্মীরা।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠক নতুন সভাধিপতি উত্তম

ঘটনায় জগাছা থানার আইসি সহ একাধিক পুলিশ অফিসার ও কর্মী জখম হন। দুপুর ১টা থেকে রেলের জায়গায় দাঁড়িয়ে এভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। ইট, পাথর, বাঁশের সঙ্গে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলতিও ছোঁড়া হয়। সময় যত গড়াতে থাকে রেলের জায়গা দখল করে সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিজেপির হামলা চালানোর তীব্রতা ক্রমশ বাড়তে থাকে। রেলের জায়গায় দাঁড়িয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়েও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। ট্রেন থেকে সাঁতরাগাছি স্টেশনে নামা যাত্রীরাও বিজেপি কর্মীদের তাণ্ডবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রেলের শেল্টারে থেকে পুলিশের ওপর বিজেপি কর্মীরা হামলা চালায়। নীরব ছিল আরপিএফ।

Latest article