দুর্যোগে মানুষের পাশে প্রার্থীরা

নিয়ম করে তাঁদের খোঁজ নেওয়া ওষুধপত্র এনে দেওয়া এমনকী ডাক্তার দেখানো— প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে দেখভালের দায়িত্বও নিতে হয়।

Must read

মণীশ কীর্তনীয়া : ভোট এসেছে তাই প্রচার করতে হচ্ছে। মানুষের দরজায় যেতে হচ্ছে। গণতন্ত্রে এটাই কাম্য। তৃণমূল কংগ্রেসের ১৪৪ জন প্রার্থী সেটা করছেনও। যাঁরা এবার প্রথম প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের কথা আলাদা। কিন্ত বাকি যাঁরা পুরনো জনপ্রতিনিধি প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটরদের প্রচারের সঙ্গে পরিষেবার দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। দেখতে হচ্ছে এলাকার মানুষজন ঠিক আছেন তো। কয়েকটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

আরও পড়ুন-যোগী রাজ্যে হবু-শিক্ষকদের বিক্ষোভ, লাঠি চালাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ

সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা। সংবাদমাধ্যমে এ-খবর জানার পর থেকেই অনেক বিদায়ী কো-অর্ডিনেটরের ঘুম উড়েছে। কারণ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মধ্যে পড়ে বেহালার অনেকটা অংশ। সেখানকার ১২৯, ১৩০, ১২৮, ১২৭, ১২৬, ১২৪ এবং ১২৩ এই ওয়ার্ডগুলির মধ্যে অনেক জায়গা আছে যেগুলি নিচু এলাকা। কাছেই রয়েছে বাগজোলা খাল। ফলে যতই কাজ হোক বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হলে কতটা জল দাঁড়াবে তা নিয়ে চিন্তা থেকেই যায়। প্রচারের মাঝেও তাই বারবার জাওয়াদ-এর গতিপথের খোঁজ রেখেছেন বেহালার সংহিতা দাস, রাজীব দাস, সুদীপ পোল্লেরা।

আরও পড়ুন-আগামী বছরের শুরুতেই আসছে করোনার থার্ড ওয়েভ, জানাল কানপুর আইআইটি

উত্তর কলকতার চিৎপুর সংলগ্ন এলাকা কিংবা পূর্ব কলকাতার ক্যনাল ইস্ট ও ওয়েস্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের অবস্থাও এক। সীতা জয়সওয়ারা হোক কিংবা জীবন সাহা। স্বপন সমাদ্দার কিংবা অনিন্দ্য রাউত বা মুচিবাজার মুরারিপুকুর এলাকার অমল চক্রবর্তী, প্রত্যেকেই খবরে চোখ রাখার সঙ্গে ফোন করেছেন পরিচিত সাংবাদিকদের। যাতে প্রতিনিয়ত জাওয়াদের খবরটা পাওয়া যায়। খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজে একটু বৃষ্টিতেই জল জমে ভৌগোলিক কারণেই। সেখানেও বারবার ফোন গিয়েছে পুরসভার অফিসারদের।

এই অঞ্চলের বিদায়ী কাউন্সিলররা ছাড়াও তৎপর থেকেছেন দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। পরিস্থিতি অনুযায়ী যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। দিনভর ফোন গিয়েছে তারক সিং, ফিরহাদ হাকিমদের কাছে। কলকাতা ও তৎসংলগ্ন এলাকার সব পাম্পিং স্টেশনগুলিতে তাঁরাও ঘন ঘন ফোন করে সব ঠিক আছে কিনা খোঁজ নিয়েছেন।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম— বেহালার একাধিক প্রার্থী জানালেন, জাওয়াদ বাংলায় বিপর্যয় ঘটাবে না জেনে তাঁরা খানিকটা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে বৃষ্টি বেশি হলে নিচু এলাকা সামলানোর জন্য তাঁরা তৈরি আছেন।

আরও পড়ুন-অমিত শাহর নিরাপত্তা বাহিনীর ‘ভুলে’ রক্তাক্ত ওটিং, নাগাল্যান্ডে নিহত ১৩

শুধু কি জাওয়াদ? না এর মধ্যেও পুরনো প্রার্থীদের ওয়ার্ডের নিত্যপরিষেবার দিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে। এর সঙ্গে ওয়ার্ডের দুঃস্থ পরিবারগুলির দিকে আরও বেশি করে নজর দিতে হচ্ছে। অন্তত চারজন প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটর এর মধ্যেই দুঃস্থ পরিবারের মেয়ের সু্ষ্ঠুভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এর সঙ্গে আছে অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা। এলাকায় এমন অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন যাঁদের ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে দূরে থাকেন। তাঁদের এখন ভরসা এলাকার বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর এবং পাড়ার ছেলেরাই।

নিয়ম করে তাঁদের খোঁজ নেওয়া ওষুধপত্র এনে দেওয়া এমনকী ডাক্তার দেখানো— প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে দেখভালের দায়িত্বও নিতে হয়। শুধু ভোট চাওয়া নয় পুরনো জনপ্রতিনিধিদের নিতে হচ্ছে বাড়তি দায়িত্ব। তবে একবাক্যে সকলেই জানালেন, তাঁরা খুশিমনেই এই কাজগুলি সারা বছর করেন। নিজেদের দায়িত্ব মনে করেই করেন। মানুষের সঙ্গে বছরভর আছে নিবিড় যোগাযোগ।

Latest article