বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী

তুঘলকি পরিবেশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে

Must read

প্রতিবেদন : এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি ও যেভাবে দেশ চলছে, সেভাবে চলতে থাকলে দেশে রাষ্টপতি শাসনের পরিস্থিতি তৈরি হবে। রবিবার আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে নাম না করে এভাবেই অভিযোগের কাঠগড়ায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee- Media Trial)। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ একাধিক বিশিষ্ট আইনজ্ঞদের সামনে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, গণতন্ত্র এবং মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। যে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলিও কার্যত মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করতে বাধ্য হয়েছে।

কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee- Media Trial) বলেন, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বারবার আঘাত হানা হচ্ছে। এক শ্রেণির মানুষের হাতে প্রভূত ক্ষমতা রয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতি-সহ বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িতদের তাঁর আবেদন, গণতন্ত্র রক্ষায় আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। মানুষ এখনও বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখে। একই সঙ্গে এদিন আবারও বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, বিচারের আগেই মিডিয়া তার বিচার করে ফেলছে। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে মানুষের সম্মানহানি হচ্ছে। ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, মাথায় রাখতে হবে, কারও সম্মান গেলে আর ফিরে আসে না।

আরও পড়ুন-সিবিআইকে দেওয়া ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার তেলেঙ্গানার

ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসের ১৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য উদয় উমেশ ললিত, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ বহু বিশিষ্টজন। তাঁদের উপস্থিতিতেই বিচারব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্মানই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। সেটা যাওয়া মানে, সব চলে যাওয়া। একবার সম্মানহানি হলে, তা আর ফেরত আসে না। তাই বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলকে বলব, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো যেন বজায় থাকে দেখবেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ভূয়সী প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিচারপতি ইউ ইউ ললিত দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দু’মাসে বিচার বিভাগের সক্রিয়তা বেড়েছে। অল্প দিন তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু তিনি এর মধ্যেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়েছেন। আমরা দেখেছি বিচার কাকে বলে। কিন্তু বিচারের নামে এখন যা চলছে! বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের এখনও আস্থা আছে। কিন্তু মানুষ বিচারের জন্য আদালতের দরজায় যাচ্ছে— কাঁদছে। মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, জুডিশিয়ারি ফর দ্য পিপলস, বাই দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল। সব কিছুর শেষে মানুষ আইনের দ্বারস্থ হয়। এটাই আমাদের মন্দির-মসজিদ-গির্জা।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের আইনের পড়ুয়া, আইনজীবীরাই ভবিষ্যতে বিচারকের আসনে বসবেন। চিকিৎসকদের মতোই এটাও একটা মহৎ পেশা। আরও মানুষের এই পেশায় এগিয়ে আসা উচিত।

Latest article