বাড়ছে দুর্ঘটনা, যাত্রী-পরিষেবা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ খোদ রেলের রিপোর্টেই

Must read

প্রতিবেদন : যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে অজস্র প্রশ্নের মুখে এবার নিজেদের পরিষেবার গাফিলতি স্বীকার করে নিল রেল দফতর। যাত্রী-পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে খোদ রেলেরই পারফরম্যান্স রিপোর্টে। বুলেট ট্রেন, সেমি হাইস্পিড থেকে শুরু করে বন্দে ভারতের দুর্ঘটনা প্রায় নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে ভারতীয় রেলের। রেলের সামগ্রিক পরিষেবা নিয়ে উদ্বেগ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সাল থেকে ব্যাপক হারে বেড়েছে রেল দুর্ঘটনা (Train Accident)।
রেলের পারফরম্যান্স রিপোর্টে বলা হয়েছে, রেল দুর্ঘটনা বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে প্রাণহানি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেলের সম্পদ এবং রেল ট্রাফিক ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-২১ সালে রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা যেখানে ছিল ২১টি, ২০২১-২২ তা বেড়ে হয়েছে ৩৫। ২০২১-২২ সালে লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার সংখ্যা ২৬, যা আগের বছর ছিল ১৬টি। ২০২০-২১ সালে রেলে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা ৩ থেকে বেড়ে পরের বছর হয়েছে ৪। রেলের পারফরম্যান্স রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ‍‘‍‘রেলের কর্মীদের ব্যর্থতার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২০-২১ সালে ছিল ১৬। ২০২১-২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২০।’’ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, ২০২০-২১ সালে রেল দুর্ঘটনার কারণে প্রাণহানি বা জখম হওয়ার খবর নেই। ২০২১-২২ সালে সেখানে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৫ জনের আহত হওয়ার উল্লেখ রয়েছে। আরও একটি বিষয়, ২০২০-২১ সালে কোনও প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার ঘটনা না ঘটলেও, রেল ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ১০৪.৩৮ কোটি টাকা। যদিও ২০২১-২২ সালে রেল ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ৮৫.৮৮ কোটি টাকা। তবে রেলের তরফে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত প্রাণহানি বা জখম হওয়ার ঘটনার মীমাংসা সে বছর হয়েছে, সেই হিসেবে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। এবছর রেল দুর্ঘটনার হিসাব ধরলে সংখ্যাটা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। জুন মাসে বালেশ্বর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯৬ জনের। তারপরেও একাধিক দুর্ঘটনা, লাইনচ্যুতি ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একাধিক মৃত্যু হয়েছে। ফলে সার্বিকভাবে রেলসুরক্ষার বিষয়টি উদ্বেগজনক জায়গায় রয়েছে। বালেশ্বরে দুর্ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠেছিল, রেল দুর্ঘটনা এড়াতে চালু করা কবচ প্রযুক্তি নিয়ে। পারফরম্যান্স রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‍‘‍‘গত বছরের এই সময়ে ১০ কিলোমিটারের জায়গায় এবছর এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে কোনও রেললাইন কবচের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। অথচ যেখানে ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩৭ কিলোমিটার।’’ আর জুনেই বালেশ্বরের ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Train Accident) ও অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও যাত্রীসুরক্ষা নিয়ে এমন ঢিলেঢালা মনোভাব কেন, উঠছে সেই প্রশ্ন।

আরও পড়ুন- বিভীষিকার অধ্যায় পেরিয়ে ঘরে ফিরতে আকুল ওঁরা

Latest article