রাজ্যপালের নতুন রাজনীতি

Must read

প্রতিবেদন : আবার স্বমহিমায় রাজ্যপাল। সাংবিধানিক পদে বসে ঠিক পুরভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে তিনি মা ক্যান্টিনের বরাদ্দ টাকা নিয়ে তথ্য চাইলেন। নবান্নে পাঠানো ওই চিঠি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সাংসদ সৌগত রায়, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যপালের। প্রসঙ্গত বলা যায়, মা ক্যান্টিন কোভিড কালে গরিব মানুষের মুখে অন্ন জুগিয়েছে। এই ভাবনা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মানুষ দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন। দেশের মধ্যে মা ক্যান্টিন যথেষ্ট সাড়া ফেলে দিয়েছে।

আরও পড়ুন : তিন বিমানবন্দর চালুর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

কিন্তু রাজ্যপাল সেসব কথা ভুলে অন্য প্রশ্ন তুললেন। যদিও কেন্দ্রের থেকে যে বিশাল অঙ্কের টাকা রাজ্য পায় তা নিয়ে রাজ্যপাল কোনও ট্যুইট করেন না। দিল্লি গিয়ে দরবারও করেন না। আর সেই রাজ্যপালই শনিবার সকালে আচমকা বর্তমান সরকারের ‘মা’ ক্যান্টিনের বাস্তবায়ন নিয়ে খোঁচা দেন। কীভাবে এই প্রকল্পের রূপায়ণ হয়েছে, কোথা থেকে এল এই প্রকল্পের টাকা? ট্যুইটে প্রশ্ন করে তথ্য তলব করেছেন রাজ্যপাল। যার পাল্টা দিয়ে রাজ্যপালকে বিঁধেছেন রাজ্যের অর্থ ও পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রাজ্যপালকে তোপ দেগে তিনি বলেছেন, ‘মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া সরকারের কাজ। রাজ্যপাল কি সেই উদ্যোগ বন্ধ করতে বলছেন?’ রাজ্যপাল শনিবার সকালেই ট্যুইট করে বলেন, ‘অসাংবিধানিক ভাবে মা প্রকল্পের তহবিল অর্থ স্থানান্তর নজরে আসায় ২০২১-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত খরচের হিসাব চাইছি অর্থসচিবের কাছে।’ ‘মা’ প্রকল্প প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বাজেট বক্তৃতায় ‘মা’ প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন ১ এপ্রিল থেকে তা চালু হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেব্রুয়ারির মধ্যপর্বেই তা চালু করে দেন। এটা অসাংবিধানিক।’ যার পাল্টা চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের বাজেটে মা ক্যান্টিন প্রকল্পের ঘোষণা হওয়ার পর পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে তার কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যে মোট ৪৮৫টি মা ক্যান্টিন শুরু হয়েছিল এবং তা এখনও চলছে। রাজ্যপাল প্রশ্ন তুললেই তা বন্ধ করে দেওয়া হবে না। কারণ গরিব মানুষ পাঁচ টাকার বিনিময়ে খেতে পাচ্ছেন। মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়াই তো সরকারের কাজ। আমরা সে কাজই করেছি। রাজ্যপাল কি এই উদ্যোগ বন্ধ করে দিতে বলছেন? ওঁর কেন গায়ে লাগছে।’ মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে ডিম-ভাত খেয়ে পেট ভরান গরিব মানুষ। আর সেই প্রকল্প নিয়েই রাজ্যপালের তথ্য তলবকে তোপ দাগলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন সাংসদ সৌগত রায়ও রাজ্যপালের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, উনি মানুষের পাশে নেই। বিজেপির পাশে আছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, সাংবিধানিক পদে থেকে উনি ইতিমধ্যেই রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত করেছেন। গরিব মানুষদের যেখানে পাঁচ টাকায় খাবারের ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সেখানে রাজ্যপালের এই বক্তব্য প্রমাণ করে এ রাজ্যের গরিব মানুষদের পাশে তিনি নেই। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে এ ধরনের রাজ্যপালকে নিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে।

Latest article