প্রবাসের পুজো যেন দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়

Must read

সুদক্ষিণা দাস, মাসকট (ওমান): আমি উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের মেয়ে। ফ্যাশন ডিজাইনিং পাশ করে, কলকাতা, বেঙ্গালুরু ইত্যাদি নানা জায়গায় কাজে হাত পাকিয়ে বিশ্বখ্যাত সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান ডিয়োর–এ যোগ দিই। পোস্টিং ওমানে। বারো বছরেরও বেশি সময় রাজধানী মাসকটে আছি। আর পাঁচটা বাঙালির মতো আমারও দুর্গাপুজো নিয়ে আবেগ আছে। মাসকটে (Muscat- Durga Puja) দুর্গাপুজো হলেও যেখানে পুজো হয়, সেটা আমার বাড়ি থেকে বেশ দূরে, আর সবসময় ছুটিও পাই না। ফলে ইচ্ছে থাকলেও পুজোয় যোগ দিতে পারি না। ওমান কট্টর মুসলিম দেশ হলেও অনেক উদার। অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষপ্রবণ নয়। তাই এখানেও হিন্দু মন্দির আছে এবং সেখানে নিয়মিত পুজো–অর্চনা হয়। ভিন দেশের বা ভিন ধর্মের মহিলারা ওমানে একশো শতাংশ সুরক্ষিত। এখানে প্রচুর হিন্দু নানা কাজের সূত্রে বাস করে। ওমানের রাজধানী মাসকটে দুটো মন্দির— একটা ওল্ড মাসকটে, একটা দারসাইটে। ওল্ড মাসকটে শিবমন্দির, দারসাইটে কৃষ্ণমন্দির। দু’জায়গাতেই দুর্গাপুজো হয়।
এখানে পুজো তিনদিনের। মাসকটে (Muscat- Durga Puja) তো বটেই, আশপাশের লোকজনও শরিক হন দুর্গোৎসবে। পুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। জনপ্রিয় মহিষাসুরমর্দিনীর অংশবিশেষ নিয়ে নৃত্যনাট্য থেকে নাটক, গান, আবৃত্তি ইত্যাদি সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে ক’টা দিন জমজমাট থাকে পুজোমণ্ডপ। বাংলার মতোই ওমানের দুর্গাপুজোয় আরতি হয়, দশমীর দিন সিঁদুরখেলা হয়। দিল্লির আইসিসিআর রাষ্ট্রদূতের অফিসে পুজো নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ২০২০ সালেই ‘দুর্গাপুজো অ্যান্ড ইট্স রেলেভেন্স ইন পিপল’স লাইভস’ শীর্ষক এক প্রতিযোগিতা বেশ জমে উঠেছিল। এবারে শিবমন্দিরের পুজোয় প্রতিমা আসছে কলকাতা থেকে। শিল্পী পশুপতি রুদ্রপাল। আগে প্রতিমা হত ফাইবারের। এবারের প্রতিমা পেপার পাল্প বা কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। খরচ এবং আনার সমস্যার জন্য প্রতিবছর প্রতিমা আনা হয় না। একটা প্রতিমাতেই সাত বছর পুজো হয়। প্রবাসে বসেও এই পুজো আমায় কিছু সময়ের জন্য দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন- বন্ধু জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে বেজিং সফরে পুতিন

Latest article