রাজ্যপালকে রাজ্য সরকার, বেআইনি সার্কুলার এখনই প্রত্যাহার করুন

Must read

প্রতিবেদন : এবার রাজ্যপালকে (Governor) কড়া চিঠি পাঠাল রাজ্য সরকার। চিঠিতে পরিষ্কার বলা হল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে এক্তিয়ার-বহির্ভূত সার্কুলার পাঠিয়েছেন অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করুন। সোমবার বিকেলে পাঠানো পাঁচ পাতার চিঠিতে সরকারের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে রাজ্যপালকে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে তিনি কোনওভাবেই এই ধরনের সার্কুলার পাঠাতে পারেন না। কেন পারেন না তারও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী যে রাজ্যপাল কাজ করছেন তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। দিনে দিনে তা আরও বাড়ছে। যেভাবে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে অগ্রাহ্য করে নিজের মর্জিমতো তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাতে আদতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে টালমাটাল করছেন। এই পরিস্থিতিতে এবার রাজ্য সরকার কড়া চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে তাঁর এক্তিয়ার স্মরণ করিয়ে দিল। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও গোটা ঘটনায় রাজ্যপালকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধেছেন। তিনি বলেন, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ বিদূষক আমাদের রাজ্যপাল। আদতে তাঁর আচরণ একেবারে গোপাল ভাঁড়ের মতো। তিনি গোটা উচ্চশিক্ষা সিস্টেমকেই ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর। তিনি কোনও বিধি মানছেন না। তাঁর কথায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও উচ্চশিক্ষা দফতর যে নির্দেশ দিচ্ছে তা মানা হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হচ্ছে। তিনি ভিসি বসাচ্ছেন আবার তাড়িয়েও দিচ্ছেন। রাজ্যপালের (Governor) এক্তিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন দ্বারা স্বীকৃত। তিনি বোধহয় আইন পড়ে দেখার সময় পাননি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানতে বাধ্য রাজপাল। এখানেই না থেমে বিধানসভার সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বলেন, উনি বিভিন্ন উপাচার্যকে অপমান করছেন। শুধু পেটোয়া উপাচার্যরা ছদ্মবেশে রাজভবনে ঢুকছেন। আগের রাজ্যপাল ধনকড় আলোচনার টেবিলে বসতেন। আইন নিয়ে তর্কাতর্কি হত। ফাইল চালাচালি হত। রাজ্যপালের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। ব্রাত্যর সংযোজন, ওঁর তালিবানি ফতোয়ার পরেও আমরা ফাইল পাঠিয়ে গিয়েছে। সচিব রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা বারবার আলোচনার পক্ষে। রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, উনি বিদূষকের আচরণ বন্ধ করুন।

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে পারে শাসক দল তৃণমূল। বিষয়টি ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে বলে জানালেন ব্রাত্য বসু। তিনি বললেন, মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার পাঠাতে চেয়েছিলেন। উনি তার উপর সার্কুলার জারি করেছেন। রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে মানছেন না। তাঁকে অপমান করেছেন। ব্রাত্য জানান, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাবের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তার পরেই সিদ্ধান্ত হবে।আসলে রাজ্যপাল বোধহয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পড়ে দেখার সময় পাননি, বললেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানতে বাধ্য রাজ্যপাল। কিন্তু উনি কোনও বিধি মানছেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যপাল বিজেপি নেতার মতো আচরণ করছেন। বিজেপির নির্দেশে কাজ করছেন। কোনও সাংবিধানিক এক্তিয়ার মানছেন না। এ পদ্মপাল ছাড়া আর কী বা বলা যেতে পারে।

আরও পড়ুন- যাদবপুরের মৃত ছাত্রের বাবা-মা নবান্নে, কড়া পদক্ষেপের অঙ্গীকার মুখ্যমন্ত্রীর

Latest article