ভারতীয় রাজনীতিতে যে কোনও পরিস্থিতিতেই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সেরা প্লেয়ার, তা তিনি ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। ২০১৬-তে রাজ্যের ক্ষমতায় মা মাটি মানুষের প্রত্যাবর্তনের অন্যতম কান্ডারি ছিলেন তিনি। বাংলার সাধারণ মানুষের আশিসে কল্যাণে শুভেচ্ছায় তিনিই হয়ে উঠেছেন যুব জনতার প্রধান মুখ। ২০২১ বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের যুবশক্তির সেই অধিনায়ক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যুব সম্প্রদায় শপথ নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার পরিচালিকা শক্তি হিসেবে ফের অধিষ্ঠিত করার। তা করেও দেখিয়েছেন। বিপুল জয় সুনিশ্চিত করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শের পতাকা বহনের ক্ষমতাযোগ্য সঠিক কাঁধ খুঁজে নিয়েছে। সেই পথেই এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার। তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পিছনে অনেকেই দারুণ ‘খেলছেন’। কিন্তু ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই। নির্বাচনের প্রাক্কালে, এলাকায় চষে বেড়িয়ে প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন। বাংলার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে দাপিয়ে বেড়িয়ে তুলে ধরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুশাসনে বিগত দশ বছরে রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন-বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য ২৫ বছরেও কাজ করেননি, এক মাসে সমস্যার সমাধান আশ্বাস তৃণমূল বিধায়কের
বামফ্রন্টের আমলে পিছনের সারিতে চলে যাওয়া এই বাংলাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আবার সামনের সারিতে অধিষ্ঠিত করেছেন, সেই লড়াইয়ের কথা বাংলার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যম হয়ে উঠেছেন তিনি। মমতার সাফল্য, মমতার আগামী দিনের কর্মসূচি প্রচারের মূল দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। সেইমতো তাঁর যুববাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মানুষের কাছে যেতে, মানুষকে বোঝাতে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে উন্নয়নযজ্ঞ চলছে, সেই উন্নয়নের বার্তা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জয় সুনিশ্চিত করে তোলার পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অবদান কারও থেকে কম নয়। তাঁর দুর্বার ডাকেই তৃণমূলের হাত শক্ত করতে সমর্থনের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। তাইতো, যতই জোট গড়ুক সিপিএম-কংগ্রেস, মানুষ বুঝতে সমর্থ হয়েছিল, অত্যাচারী সিপিএম এবং বিজেপি আর নয়, বাংলার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে যাঁর হাত ধরে তাঁকেই বাংলার হাল ধরার জন্য দরকার। যুব সংগঠনই দলের ভবিষ্যৎ। যুব সংগঠনের বৃদ্ধি না হলে, নতুন মুখ উঠে না এলে, যে-কোনও দলেই পচন ধরে। আর মানুষের পাশে, মানুষের কাছে গেলে, দলে নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি হতে বাধ্য। দলীয় সদস্যপদ নবীকরণ হওয়া মানেই দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠা। সেই সরল সাধারণ মন্ত্রই যুব নেতা ও দেশের নেতা হিসাবে রাজ্যের প্রতিটি যুব শাখার অন্দরে এবং সাধারণ মানুষের মনে প্রবেশ করিয়ে দিতে পেরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-মথুরাপুরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তৈরি হল আধুনিক আন্তঃবিভাগ
বয়সে নবীন হলেও, রাজনৈতিক বিচক্ষণতার সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সমর্থ হয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর দেখানো পথই তাঁর এগিয়ে চলার সোপান। তাই তো যুব সংগঠনের দায়িত্ব এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, শৃঙ্খলা আর অনুশাসনই দলের মূলমন্ত্র। বলেছিলেন, দলের অন্দরে অশান্তি-বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত নয়। চূড়ান্ত করে দিয়েছিলেন যুবনেতা থেকে সাধারণ কর্মীদের চলার পথ। তাঁর নির্দেশনামার প্রথমেই ছিল, মানুষের জন্য কাজ। বলেছিলেন, মানুষের জন্য জীবনপাত করুন, স্বার্থসিদ্ধি মানব না। রাজ্য সরকারের কর্মসূচি ও সাফল্যের কথা বুথে বুথে পৌঁছে দিতে হবে। যুব সংগঠনের পাশাপাশি দলের সাধারণ সদস্যদের মাধ্যমেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা গ্রামেগঞ্জে, শহর-শহরতলির অলি-গলি, তস্য গলিতে ছড়িয়ে পড়বে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মধ্য দিয়ে যদি এই বার্তা মানুষের মনে প্রবেশ করানো যায়, তাঁর প্রভাব পড়বে বহুগুণ।
আরও পড়ুন-রাম-বাম আঁতাঁতের পক্ষেই সৌমিত্র
দলের প্রতি, দলনেত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস দ্রুত বাড়তে থাকবে। দল বাড়বে। সরকারের উন্নয়নমুখী কাজের প্রচারে যোগ দিতে ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও ভিড় জমাতে শুরু করবেন। তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ছাঁকনির কাজ করার গুরুদায়িত্ব নিতে হবে যুবকর্মীদের সঙ্গে দলের পুরাতন কর্মীদের। আরও একটা বড় কাজ, ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলা। কেননা ছাত্র সংগঠনের পরের ধাপই যুব সংগঠন। ছাত্র নেতা-কর্মীদের যুবস্তরে নিয়ে আসার ও তৈরি করার দায়িত্ব তো যুবনেতা-কর্মীদেরই। রাজ্যের উন্নয়নের প্রচারে মুখ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তৃণমূল কংগ্রেসে এক, দুই বা তিন বলে কিছু নেই। দলের শীর্ষে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নিচে আছেন কর্মীরা। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেত্রীর কর্মযজ্ঞকে সফল রূপায়ণে সহায়তা করব। সেই ব্রত নিয়েই অভিষেকও এগিয়ে চলেছেন। যে মন্ত্রে বিধানসভায়, পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় এসেছে, সেই একই মন্ত্রে এবার লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৩ এবং লোকসভা নির্বাচন ২০২৪। তাই তো এখন লক্ষ্য গ্রাম।
আরও পড়ুন-
২০১৬ বিধানসভা ভোটে মাথাচাড়া দিয়েছিল অনৈতিক জোট। ২০২১ মাথাচাড়া দিয়েছিল অশুভ শক্তি হিসেবে বিজেপি। আবার বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করতে অভিষেক বিভিন্ন আসনে অংশগ্রহণকারী জোড়া ফুলের প্রার্থীদের হয়ে জোরালো প্রচার চালিয়ে যাবেন। এবার ভোটেও কর্মীদের যে-কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি। বলেছেন অসন্তোষ থাকলে দলের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সমস্ত সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে তিনি আদর্শ নেতার পরিচয় বহন করতেই আগ্রহী। তিনি চান দুর্যোগ বা ঝড়ে প্রকৃত কান্ডারির মতোই শক্ত হাতে হাল ধরতে। স্বচ্ছ প্রশাসন রাজ্যবাসীকে উপহার দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বদ্ধপরিকর। যুবাদের অনুপ্রেরণার তিনিই উৎস।
আরও পড়ুন-রাহুলের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতেই হৃদরোগে মৃত্যু মহারাষ্ট্রের কং নেতার
২০২১ বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুল ভাবে জিতিয়ে আনতে তিনি প্রধান সেনাপতি ছিলেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাংলায় পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে তিনি সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। হ্যাটট্রিক করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। বাস্তবিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় পর্বে হ্যাটট্রিক করিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত করেছেন এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠিত হয়েছে। বাংলার প্রতিটি প্রান্তে সংগঠন ও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে দৃঢ় পদক্ষেপ করছেন তিনি। বাংলার কল্যাণে ও দেশের মঙ্গলার্থে যুব সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আদর্শ ভারত গড়তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কংগ্রেস লড়ছে, লড়বে। কেউ তাকে রুখতে পারেনি, পারবে না।