উত্তর-পূর্বের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাড়ছে মৃত্যু

Must read

প্রতিবেদন : ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠছে অসম, মেঘালয়-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির (Heavy Rainfall in the Northeastern Region) বন্যা পরিস্থিতি। গত কয়েক দিনের একটানা প্রবল বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র-সহ অসমের একাধিক নদীতে প্রবল জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। একাধিক জায়গায় নেমেছে ধস। বন্যা ও ধসের কারণে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এই দুই রাজ্যে কমপক্ষে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমে প্রায় ৩১ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য অতিরিক্ত সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে ৩২টি বন্যা কবলিত। অসম সরকার জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের বন্যা ও ভূমিধসে ২৫ জনের প্রাণ গিয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। শনিবার অসমের হোজাই জেলায় একটি উদ্ধারকারী নৌকা ডুবে যায়। ২১ জন যাত্রীকে কোনওভাবে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে তিনটি শিশু। উদ্ধারকারীরা ওই শিশুদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করার কোনও আশা দেখছেন না। ব্রহ্মপুত্রের জলস্ফীতির কারণে গুয়াহাটি শহর সম্পূর্ণ জলবন্দি হয়ে আছে। ফলে অন্যান্য জায়গা সঙ্গে গুয়াহাটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্যার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধারের জন্য গুয়াহাটি শিলচরের মধ্যে বিশেষ বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি যখন ক্রমশ খারাপ হচ্ছে তখন এই বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা রাজ্যবাসীর পাশে না দাঁড়িয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে ভোট প্রচারে ব্যস্ত। বন্যাদুর্গত মানুষকে ছেড়ে অন্য রাজ্যে গিয়ে রাজনীতি করায় হিমন্তের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব অসম তৃণমূল কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দল।

আরও পড়ুন: এই যুদ্ধ কতদিন চলবে কেউ জানে না, প্রস্তুত থাকতে হবে: ন্যাটো প্রধান

অন্যদিকে অসমের মতোই মেঘালয়ের বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ (Heavy Rainfall in the Northeastern Region) । সেখানে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যাদুর্গত হয়ে পড়েছেন ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। মেঘালয়ের মৌসিনরাম ও চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক কার্যত ভেসে গিয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। একটানা বৃষ্টিতে অরুণাচল প্রদেশের বেশকিছু এলাকাতেও ধস নেমেছে। নিচু এলাকায় বসবাসকারী বহু মানুষকে প্রশাসন আগেই সরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও বহু ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। জলে ভেসে গিয়েছে বহু গবাদি পশুও।

এর পাশাপাশি ত্রিপুরাতেও এবার ৬০ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে আগরতলা-সহ রাজ্যের একাধিক শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তার উপর রাজ্যের বিজেপি সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে জলবন্দি মানুষকে সাহায্য করার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগরতলা শহর থেকে দ্রুত জল নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিজেপি সরকার। প্রবল বৃষ্টিতে এই রাজ্যে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। প্রশাসনের তরফে গৃহহীনদের কোনও সাহায্য করাও হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Latest article