মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো। সেই ঝাড়গ্রাম শুধু স্বাভাবিকই নয়, উন্নয়নের দৌড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে অন্য জেলাগুলোর ওপর। তার সেই উন্নয়নের খতিয়ানই আজকের প্রতিবেদনে।
lপরিকাঠামো : ১৩.৮ মেগাওয়াট গ্রাউন্ড মাউন্টেড গ্রিড কানেক্টেড সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যানেট স্থাপন করা হয়েছে, যার লক্ষ্য জঙ্গলমহলে সেচের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো। এটি একটি সর্বকালের রেকর্ড গড়ে ফেলেছে। সুবর্ণরেখা নদীর ওপর জঙ্গলকন্যা সেতু তৈরি করেছে এক মাইলফলক। এটি ঝাড়গ্রামকে পশ্চিম মেদিনীপুরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। ঝাড়গ্রামে প্রথম বৈদ্যুতিক শ্মশান তৈরি হয়েছে। হয়েছে বৈতরণী প্রকল্পের মাধ্যমে ১.৮ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছে। এটি চালু হয়ে গিয়েছে ২০২২ সালেই। এসবিএসটিসি ঝাড়গ্রামে বাস টার্মিনাসের পরিকাঠামো উন্নয়ের কাজ শেষ করেছে।
আরও পড়ুন-হাইকোর্টে রামধাক্কা বিরোধী দলনেতার
lজলস্বপ্ন : পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১.৯৯ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। বিনপুর, গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম, জামবনি, সাঁকরাইল ইত্যাদি আটটি ব্লকে ২২ হাজার ২১৩ জনকে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
lরাস্তা : ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি-রোগরা রোড এবং দহিজুড়ি-বিনপুর-সিলদা-হাটিয়ারি রোডের কাজ শেষ হয়েছে। এবং রামগড়-পিংবনি রোডের কাজ চলছে জোরকদমে।
আরও পড়ুন-আজ গ্রাম বাংলায় গণতন্ত্রের উৎসব
lশিক্ষা : আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে উচ্চশিক্ষাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঝাড়গ্রামে সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। শুধু মহিলা কলেজের প্রয়োজন মেটাতে দু হাজারের বেশি আসনের একটি মহিলা কলেজ তৈরি করা হয়েছে। গোজাশিমূল উচ্চ বিদ্যালয় এখন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিণত হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নত করতে নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে। ঝাড়গ্রামে প্রথম মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে গত বছরেই। নভেম্বরে সেিটর উদ্বোধন করা হয়। প্রথম বর্ষের ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মোট ১০০ জন শিক্ষার্থীকে নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-‘কোথায় সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী’ ক্ষোভপ্রকাশ করলেন কুণাল ঘোষ
lসামাজিক প্রকল্প : জেলার মহিলাদের স্বনির্ভর করছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ২.৬ লাখ মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। ঐক্যশ্রী পেয়ে উপকৃত ১১.৫ হাজার ছাত্রছাত্রী। স্বাস্থ্যসাথীর দৌলতে জেলার মানুষ নিশ্চিন্ত। ৩.৪৮ লক্ষ পরিবার এই কার্ড পেেয়ছেন। ১২.২১ লাখ পেয়েছেন খাদ্যসাথী। ২.১১ লাখ পেয়ে গিয়েছেন জাতিগত শংসাপত্র। জেলায় আদিবাসীদের সংখ্যা অনেক। তাঁদের মধ্যে জয় জোহার পেয়ে গিয়েছেন ২২.৬৯ হাজার মানুষ। তফসিলি বন্ধু পেয়েছেন ৭.০৮ হাজার মানুষ। মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে কন্যাশ্রী। ৪৩.৯ হাজার মেয়ে কন্যাশ্রী পেয়ে উপকৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন-মঞ্চে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ‘বারবধূ’
lদুয়ারে সরকার : পশ্চিববঙ্গ সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অভিনব ভাবনা দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এই দুয়ারে সরকারের ষষ্ঠ পর্বে ঝাড়গ্রামে এখনও পর্যন্ত ৪১৫৮টি শিবির হয়েছে। যেখানে ২,২৮,০৭০ জন হাজির হয়েছিলেন।
lসামাজিক কাজ : কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড তৈরি হয়েছে। এই বোর্ড কুড়মি সম্প্রদায়ের জন্য লোধাশুলিতে একটি কমিউনিটি হল তৈরি করছে।
lকৃষি : চাষের জন্য জলের জোগান নিশ্চিত করতে লোধাশুলিতে একটি খাল কাটা হয়েছে। এই খালের দৌলতে কৃষিকাজে বিপুল গতি এসেছে। এর সঙ্গে ধাতমুল, জয়বনি, ইন্দ্রবনি ও নাহোরিয়া গ্রামের মানুষদের আয়ের এক নতুন উৎস তৈরি করা হয়েছে।