‘আমি নই, আমরা’ এই মূলমন্ত্রে এগিয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস, মেদিনীপুরের মঞ্চ থেকে সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা

সকাল থেকেই মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সাংগঠনিক সভায় উপচে পড়া ভীড়। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপেক্ষায় ছুটে এসেছে মানুষ।

Must read

সকাল থেকেই মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সাংগঠনিক সভায় উপচে পড়া ভীড়। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপেক্ষায় ছুটে এসেছে মানুষ। এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জুন মালিয়া ও অভিনেতা সাংসদ দেব।

এদিন মঞ্চে উঠেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারীদের জয়গান করে বলেন, ‘আজকাল মেয়েরা সব কাজ করে, যে রাধে সে চুলও বাঁধে। সেলফ হেল্প গ্রূপকে অভিনন্দন। প্রশাসন ও মিডিয়াকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমি ঠিক করেছি যে যে জেলা প্রশাসনিক সভা করতে যাবো সেখানে বুথ কর্মীদের সাথেও মিলিত হব কারণ তারাই আমাদের দলের সম্পদ। মঞ্চে থাকলে হাতেগোনা কয়েকজন। নিচে থাকে লক্ষ্য কর্মী। আসল কর্মী তারাই। এটা মনে রাখলেই ভারত নয় বিশ্ব জয় হবে।’

আরও পড়ুন-আজ শ্রেয়সদের সামনে লখনউ, জিতলেও নিশ্চিত নয় প্লে-অফ

সাধারণ মানুষের নেতাদের ওপর ক্ষোভ নিয়ে এদিন তিনি বলেন, ‘নেতা কি গাছ থেকে পরে? নেতা কাজের মধ্যে তৈরী হয়। আমি সেই কর্মী পছন্দ করি যে রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে মানুষ বলে আমি ফর্ম ফিলাপ করতে পারছিলাম না, উনি আমার এটা করে দিলেন তাই আমি সব সুবিধা পেলাম। যারা কুকর্ম করে তাদের মানুষ ভালোবাসে না। আর মানুষ ভালো না বাসলে আমি কেন ভালোবাসবো। আমি খুব রাফ এন্ড টাফ মানুষ। মেদিনীপুর জেলা স্বাধীনতা সংগ্রামের জেলা, রঘুনাথ মুর্মুর জেলা, বিরসা মুন্ডার জেলা। মেদিনীপুর জেলা নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। মেদিনীপুরের থেকে ইতিহাস জানতে হবে। এই জেলার মানুষ আপনারা।’

আরও পড়ুন-মুম্বই জয়ে আশা বেঁচে হায়দরাবাদের

সরকারের তরফে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে মমতা বান্দ্যোপাধ্যা এদিন বলেন, ‘জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এত পরিকল্পনা কোথাও করা হয়নি। ট্রাইবালদের জন্য পেনশন আছে, বয়স্ক ও বিধবা পেনশন ও চালু করে দিয়েছি। না পেলে দুয়ারে সরকার আবার ২১শে মে থেকে শুরু হবে। যারা এখনো বঞ্চিত আছেন তারা দরখাস্ত দেবেন। আমি চাই মেদিনীপুরে বড় বড় বাজার তৈরী হোক, যাতে বাইরে যেতে না হয়।মেদিনীপুরে সিনেমাহল হবে, আমি চাই এখানে বড় শপিংমল হবে| আসানসোলে আমাদের একটা সাইকোল কারখানা ছিল। সাইকেল কর্পোরেশন বামফ্রন্ট তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। কাল এখানে সাইকেল কারখানা করার কথা দিয়ে গিয়েছে। কর্মসংস্থান হবে।’

আরও পড়ুন-ওআইসি-র মন্তব্যের প্রতিবাদ ভারতের

কেন্দ্রীয় সরকারের আশাকর্মীদের ওপর বিরুদ্ধাচরণ নিয়ে এদিন সোচ্চার হন মমতা। এছাড়া জ্বালানির দাম নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। কেন্দ্র আইসিডিএস-এর টাকা বন্ধ করেছে, কেন্দ্রের থেকে ৯২হাজার কোটি টাকা পায় রাজ্যে| মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকার আশাদের টাকা বন্ধ করে দিল। আমরা ব্যবস্থা করলাম। কেন্দ্রের টাকা মানে আপনি কাজ করেন, সেই ট্যাক্সের টাকা তুলে নিয়ে যায়। সব নিজের ওখানে জমা করে। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গ্যাসের দাম। যেন সমুদ্রের ঢেউ উঠছে। দামের ঢেউ উঠছে। গ্যাস সমুদ্র। সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট লুট করছে।ডিজেলের দাম বাড়লে সব দাম বাড়ে। প্রয়োজনীয় ৮০০ ওষুধের দাম আবার বাড়িয়েছে। এই সরকার মানুষ মারার সরকার। ১৭ লক্ষ কোটির ওপর কাটমানি যদি সরকার খায় তাহলে তার জন্য মানুষকে কত খেসাতর দিতে হয়। ১০০ দিনের কাজ যারা করছে তাদের টাকা বন্ধ করে রেখে দিয়েছে। ১০০দিনের কাজের টাকা ৫মাস ধরে টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র| ধর্ণা তৈরী করুন রাজনৈতিক ভাবে। রাজ্যসরকারের বকেয়া দাও, নাহলে তোমরা বিদায় নাও। আগামী দিন তো দেশটাকেই বিক্রি করে দেবে। কয়েকটা মিডিয়াকে বলে দেওয়া হয় কোন নিউজ করবে আর কোনটা না। আপনাদের ধন্যবাদ যে আপনারা আমাদের পাশে আছেন। সাথে আছেন। উন্নয়নের প্রথম মিটিং আমি মেদিনীপুর দিয়ে শুরু করলাম। এরপর বাকি জেলায় যাবো।’

আরও পড়ুন-এডস আক্রান্তকে আজীবন চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হয়

দেশের স্মরণীয় ব্যক্তিদের কথা সকলকে মনে করিয়ে দিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২৬শে মে নজরুলের জন্মদিন ব্লকে ব্লকে পালন করবেন। ২২শে মে রামমোহনের ২৫০ বছরের জন্মদিন। পালন করবেন। যতক্ষণ নতুন ব্লক কমিটি না হচ্ছে যারা আছে তাদের নিয়েই মিটিং করতে হবে। দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। আমি নই, আমরা। এই কোন কেউকেটা হয়ে যায়নি। সবাইকে নিয়েই দল চালাতে হয়। সকলের দুঃখ দুর্দিনে পাশে থাকা মূলমন্ত্র হবে। একটা এমএলএ মানে সকলকে নিয়েই চলতে হবে। অন্যথা এক সেকেন্ডে কেটে দেব। যারা মানুষের কাজ করবে তাদের আমি পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করব। বাকিদের ঘরে বসে থাকতে বলবো।তৃণমূল কংগ্রেস আমার সৃষ্টি, এটা বৃথা যেতে পারে না। নেতাজি বলেছিলেন দিল্লি চলো। তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। কিন্তু আমি বলবো আমি না, আমরা। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে দিল্লিও পার পাবে না। জয় আপনাদের হবেই। এছাড়া সংখ্যালগু ছেলেমেয়েদের আগে আনতে হবে। ছাত্রযৌবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

Latest article