মেডিসিন অ্যাডহেয়ারেন্স, সাইড এফেক্ট দূর করুন

মেনে চলতে হবে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ। পালন করতে হবে তাঁদের নির্দেশ। তবেই ঠিক থাকবে মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স, দূর হবে ওষুধের সাইড এফেক্ট। মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স এবং ওষুধের সাইড এফেক্ট বিষয়ে দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বললেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স
ডাঃ সুমাল্য সেন
ফলো করুন প্রেসক্রিপশন
মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স বা ঔষধ আনুগত্য কথাটাকে আমরা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি। প্রথমত ডাক্তারবাবু প্রেসক্রিপশনে যেটা লিখছেন, সেটা একটা ভাগ এবং দ্বিতীয় ভাগটি হল সেটা ফলো করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ডাক্তারবাবু বললেন একটি ওষুধ দিনে দু’বার খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করার পর খেতে হবে। সকালে এবং রাতে। ডাক্তারবাবু মুখে বললেন এবং প্রেসক্রিপশনেও লিখলেন। কথাটা হয়তো পেশেন্ট ঠিকমতো শুনতে বা বুঝতে পারলেন না। এরফলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসলে ডাক্তারবাবু লেখেন ফার্মাসিস্টের উদ্দেশ্যে। তিনি পেশেন্টকে ঠিকমতো বুঝিয়ে দেন। পেশেন্ট যদি সেটা বুঝতে না পারেন তাহলে পুরোটাই ভুল হয়। তাই পেশেন্টদের ঠিক ভাবে প্রেসক্রিপশন ফলো করতে হবে, বুঝে নিতে হবে।

আরও পড়ুন-বুমেরাং সমালোচনা, দুরবস্থা ডবল ইঞ্জিন বিজেপি রাজ্যের শিক্ষায় শীর্ষে বাংলা

কেন গুরুত্বপূর্ণ
চিকিৎসার জন্য অ্যাডহেয়ারেন্স প্রচণ্ড রকমের গুরুত্বপূর্ণ। হসপিটালে বা ক্লিনিকে ডাক্তারবাবুকে দেখানো হলে ডাক্তারবাবু কিছু নির্দেশ দেন। সেটা ওষুধ দেওয়া হতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনার কথাও বলা হতে পারে। মোট কথা ডাক্তারবাবু যেটা বলবেন পেশেন্টকে সেটা মেনে চলতে হবে। ডাক্তারবাবু শুধুমাত্র নির্দেশ দিতে পারেন। বাকিটা সামলাতে হবে পেশেন্টকে। তবেই রোগের মোকাবিলা করা সম্ভব। ক্রনিক ডিজিজ থাকলে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় ডাক্তারবাবুর নির্দেশ মেনেই। না হলে কিন্তু অসুখ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। ধরা যাক কারও গলার সমস্যা। ডাক্তারবাবু তাঁকে এক সপ্তাহের মতো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিলেন। সেটা মেনে চলতে পারলে ভাল। কিন্তু অনেকেই সেটা করেন না। ৩-৪ দিনে একটু সুস্থ হলে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। এর ফলে কিন্তু পেশেন্ট রোগ মুক্ত হলেন না। পরবর্তী সময়ে আবার সমস্যায় পড়তে পারেন। এইভাবে অনেকেই নিজের এবং পারিপার্শ্বিক সমাজের ক্ষতি করে ফেলেন।

আরও পড়ুন-বাংলাই মডেল বলল এবার নীতি আয়োগ, নাকাশিপাড়া আইটিআইকে কেন্দ্রের স্বীকৃতি

নন-অ্যাডহেয়ারেন্স কারা
যে সমস্ত পেশেন্ট নিয়ম মেনে ওষুধ খান না, ডাক্তারের নির্দেশ অমান্য করেন তাঁরাই নন-অ্যাডহেয়ারেন্স। এর পিছনে আছে নানা কারণ। পেশেন্ট এবং ডাক্তারবাবুর মধ্যে যদি ঠিকঠাক কমিউনিকেশন না থাকে, তাহলে রোগ নির্মূল করা অসম্ভব। মেন্টাল ডিজঅর্ডার বা মানসিক সমস্যা থাকলে পেশেন্ট অনেক সময় ডাক্তারবাবুর নির্দেশ মেনে চলতে পারেন না। পরিবারে শিক্ষার অভাব থাকলে নন-অ্যাডহেয়ারেন্সের সম্ভাবনা প্রবল। কিছু কিছু ওষুধের সাইড এফেক্ট থাকে। সেটা হলে পেশেন্ট ওষুধ খাওয়া চালু রাখেন না। ধরা যাক কোনও একটা ওষুধ খেয়ে গা বমি ভাব করছিল। পেশেন্ট ওষুধ বন্ধ করে দিলেন। এইভাবে তিনি নন-অ্যাডহেয়ারেন্স হয়ে যান। সামাজিক অর্থনৈতিক সমস্যাও বড় কারণ। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। কিছু কিছু মানুষ আছেন, তাঁরা দামি ওষুধ কিনতে পারেন না। হয়তো ওষুধের দাম ৬০০ টাকা। তাঁর পকেটে ৬০ টাকা আছে। ১০ দিনের জায়গায় তিনি দু’দিনের ওষুধ কিনলেন এবং সেটা খেয়েই বন্ধ করে দিলেন। অর্থাৎ কোর্স কমপ্লিট করলেন না। এইভাবে তিনি নন-অ্যাডহেয়ারেন্স হয়ে যান।

আরও পড়ুন-জলদাপাড়ায় পর্যটকের গাড়িতে গন্ডারের হামলা, উদ্ধার হল চিতা

শতকরা হিসেব
ভুলে যাওয়ার কারণে নয়-অ্যাডহেয়ারেন্স হন ৩০ শতাংশ মানুষ। অন্যান্য বিষয়কে গুরুত্ব দেন ১৬ শতাংশ মানুষ। ১১ শতাংশ মানুষ মনে করেন পরের ডোজটা খাব না। ইনফরমেশন জানেন না ৯ শতাংশ মানুষ। ইমোশনাল ফ্যাক্টর থাকে ৮ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে।
নিজের সুবিধামতো ওষুধ নয়
যে সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে অনেকদিন বা সারা জীবন ওষুধ খেয়ে যেতে হয়, সেই ক্ষেত্রে পেশেন্টরা নিজের সুবিধামতো মডিফাই করে নেন। এর ফলে অ্যাডহেয়ারেন্স রেট লো হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মানসিক অসুস্থতার কথা, শ্বাসনালির রোগ, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। এইসব রোগের ক্ষেত্রে পেশেন্টরা অনেক সময় ওষুধ কম খান। নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেন। একটু ভাল থাকলে ওষুধ বন্ধ করে দেন। এই ক্ষেত্রে দুটো রোগ খুবই কমন। যক্ষ্মা এবং এইচআইভি ইনফেকশন। ডাক্তারের নির্দেশ যথাযথভাবে মেনে চললে বা অ্যাডহেয়ারেন্স থাকলে এই দুটো রোগ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হতে পারে। এইচআইভির ক্ষেত্রে ৯৫% অ্যাডহেয়ারেন্স থাকতে হবে। বাধ্যতামূলক।

আরও পড়ুন-গ্রামবাসীরা নিশীথকে তাড়ালেন ঘাড়ধাক্কা দিয়ে, সুকান্তও বিপাকে

নষ্ট হতে পারে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
কী রোগের জন্য ওষুধ খাওয়া হচ্ছে, সেটা আগে দেখতে হবে। যদি কারও হাই ব্লাড প্রেসার থাকে এবং ওষুধ না খান, তাহলে পরবর্তী সময়ে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা প্রমাণিত। যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে, তিনি যদি ডাক্তারবাবুর নির্দেশ মেনে ওষুধ না খান, তাহলে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
রোগী এবং ডাক্তারবাবুর সম্পর্ক
অসুস্থতা দূর করতে হলে সবার প্রথমে রোগী এবং ডাক্তারবাবুর সম্পর্ক ঠিকঠাক রাখতে হবে। দু’জনকেই পালন করতে হবে সদর্থক ভূমিকা। পেশেন্ট যাতে সমস্তটা বোঝেন, সেই উদ্যোগ নিতে হবে ডাক্তারবাবুকে। এখানে তাড়াহুড়োর কোনও জায়গা নেই। পেশেন্টকেও মেনে চলতে হবে ডাক্তারবাবুর নির্দেশ, পরামর্শ। এছাড়াও কিছু ইনডাইরেক্ট মেথড ফলো করা যায়। যেমন, পেশেন্টের সামনে কিছু প্রশ্ন সাজিয়ে দেওয়া, পিল কাউন্ট করা, নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তারবাবুর কাছে যাওয়া হচ্ছে কি না দেখা, পেশেন্টের ক্লিনিক্যাল রেসপন্স ইত্যাদি। মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স বজায় রাখার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি বিভাগ। মেডিকেশন অ্যাডহেয়ারেন্স বজায় রাখতে পারলে চিকিৎসা-ব্যবস্থার সার্বিক মান আরও অনেক উন্নত হয়।

আরও পড়ুন-ওড়িশায় গাড়ি দুর্ঘটনা, বাংলার সাত শ্রমিক হত, পাশে মুখ্যমন্ত্রী

ওষুধের সাইড এফেক্ট
ডাঃ সৌগত সরকার

পরস্পর সম্পর্কযুক্ত
ওষুধ ব্যবহার করা হয় রোগীর শরীর ভাল রাখার জন্য। কিন্তু প্রত্যেকটা ওষুধেরই কিছু অবাঞ্ছিত এবং অপ্রত্যাশিত প্রভাব আছে, যেগুলো রোগীর হোক, আমরা কখনওই চাই না। আসলে সেগুলো ওষুধের সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তাকেই বলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা সাইড এফেক্ট।
উপকারিতা এবং ক্ষতি
অসুস্থতার জন্য ওষুধ খেতেই হয়। বেশ কিছু অসুস্থতা আছে যাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগ বলা হয়। এমনকী সেগুলোর জন্য অনেক রোগীকে জীবনভর ওষুধ খেতে হয়। যেমন, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ ইত্যাদি। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। যখন ডাক্তারবাবু রোগীকে ওষুধ লিখে দেন, তখন ওষুধের উপকারিতা এবং ক্ষতি দুটোর ন্যায্য তুলনামূলক বিচার করেন। যে বেস্ট মেডিসিন রোগীর কোনও ক্ষতি করবে না, সেটাই সাধারণত লেখা হয়। তা সত্ত্বেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। যদি হয়, ডাক্তারবাবু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
একটানা ওষুধ খাওয়ার ফলে
ডাক্তারবাবুর পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়া অবশ্যই নিরাপদ। যদি একটানা ওষুধ খেয়ে কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারবাবু সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। তিনি বিচার করে দেখবেন এটা ওষুধ রিলেটেড ঘটনা, নাকি অন্য কোনও শরীর খারাপ। তার উপরে তিনি ভাবনাচিন্তা করবেন।

আরও পড়ুন-বিজেপি রাজ্যে প্রিন্সিপালকে পুড়িয়ে মারল ছাত্র

থাকবেই থাকবে
সমস্ত ওষুধ, যেগুলো মার্কেটে পাওয়া যায়, প্রত্যেকটারই কোনও না কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবেই থাকবে। তবে রোগীদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাব আলাদা হতে পারে। এটি রোগীর শারীরিক গঠন, কী ধরনের অসুখ এবং ব্যবহৃত ওষুধের উপর নির্ভর করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রকমফের
বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হয়। এটাকে একদম জেনেরালাইজ করা যায় না। কোনও মলম ব্যবহার করলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একরকম, ইঞ্জেকশন ব্যবহার করলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আর একরকম। আবার ওষুধ ব্যবহার করলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আর একরকম। যে সমস্ত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, সেই সমস্ত ওষুধ দেওয়ার আগে ডাক্তারবাবুরা কাউন্সেলিং করে দেবেন, বলে দেবেন এই এই সমস্যা হতে পারে। সমস্যা হলে যোগাযোগ করবেন। ওষুধ খাওয়ার পরে সত্যিই যদি কোনও কষ্ট হয় তখন ডাক্তারবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
এক এবং একাধিক
ওষুধ দিয়ে আমরা অসুখ দূর করতে চাই, তাই ওষুধের ব্যবহার করা হয়। যখন আমরা কোনও ওষুধ প্রয়োগ করি তখন সেটা একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, একটি পার্টিকুলার অর্গানে, ওই পার্টিকুলার রোগের জন্য কাজ করবে ধরে নেওয়া হয়। এখন ওই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়াটি একাধিক অর্গানে ঘটতে পারে। যেমন কিছু উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের কাশির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেটি একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। যা দিয়ে ওষুধটি উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

আরও পড়ুন-বাংলাভাগের দাবি ওড়ালেন দিলীপ

কমও নয় বেশিও নয়
আমরা সব সময় চাই রোগীকে বেনিফিট দিতে, তার রোগমুক্তি ঘটাতে। এবারে, শুধু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে যদি ওষুধ প্রয়োগ না করা হয়, অথবা ওষুধটা কম ডোজে দেওয়া হয়, তাহলে রোগীর রোগ কিন্তু ভাল হবে না। ডাক্তারবাবুরা যখন কোনও ওষুধ লেখেন, তখন সব সময় সঠিক ডোজ দেন। তার কমও নয়, বেশিও নয়। যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকু। ধরা যাক কোনও রোগীর শারীরিক সমস্ত অর্গান ঠিক আছে, আর একজন রোগীর দু-একটা অর্গান ভাল নেই (কিডনি রোগ বা লিভারের রোগ আছে), সেক্ষেত্রে তাঁর ওষুধের ডোজ আলাদা হতেই পারে। এটা ডাক্তারবাবু তুলনামূলক বিচার করে, ডোজ ক্যালকুলেশন করে তারপরে দেন।

আরও পড়ুন-ছোটবেলার ক্লাবে ফিরবেন মেসি, ইঙ্গিত আগুয়েরোর

নতুন রোগ কী দুর্ভোগ
একটি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, একটি নতুন রোগ হিসাবে মনে হতে পারে। তার জন্য রোগী সেই ডাক্তারবাবু বা অন্য কোনও ডাক্তারবাবুর কাছে যেতেই পারেন। ডাক্তারবাবুরা রোগীর ডিটেলস হিস্ট্রি নিয়ে রাখেন। রোগী যে সমস্ত ওষুধ খেয়েছেন বা খাচ্ছেন, সেটা দেখে ডাক্তারবাবুরা বুঝে নেবেন, যে রোগের জন্য রোগী এসেছেন, সেটা চলতে থাকা কোনও ওষুধের কারণে হয়নি তো? যদি হয় ডাক্তারবাবু ওষুধের বেস্ট পসিবল অল্টারনেটিভ ওষুধ দিয়ে দেবেন এবং ওই ওষুধ বন্ধ করতে বলবেন, অথবা ডোজ অ্যাডজাস্ট করে দেবেন। রোগীদের জন্য একটা কথা, যখন কোনও ডাক্তারবাবুর কাছে যাবেন, অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ, সমস্ত ওষুধের একটা বিস্তারিত বর্ণনা দেবেন। সবচেয়ে ভাল হল সেগুলো নিয়ে যাওয়া এবং দেখানো। এর ফলে ডাক্তারবাবুর বুঝতে সুবিধা হবে কোন ওষুধ থেকে সমস্যা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-ছোটবেলার ক্লাবে ফিরবেন মেসি, ইঙ্গিত আগুয়েরোর

তিল থেকে তাল
কিছু ওষুধ খুব নিরাপদ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সবসময় নয়। এই নিরাপদ আমার জন্য হলেও অন্যজনের জন্য নাও হতে পারে। ওই ধরনের মেডিসিন কোন রোগী ছোটখাটো সমস্যার (মাথাব্যথা, অ্যাসিডিটি, শরীরের ব্যথা, সাধারণ সর্দি-কাশি ইত্যাদি) জন্য, নির্দিষ্ট ডিউরেশন জন্য (তিন থেকে পাঁচদিন) ব্যবহার করতেই পারেন। তবে কখনওই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। সেলফ প্রেসক্রিপশনে ওষুধ খেয়ে কেউ সুস্থ না হলে দ্রুত ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এইসব ছোটখাটো রোগ হতে পারে কোনও বড় রোগের সূচনা। অর্থাৎ তিল থেকে তাল হতে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
একটা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অন্য একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া/ অসুখ বাড়িয়ে দিতে পারে। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। কিছু প্রেসারের ওষুধ আছে, যেগুলো অনেকদিন ধরে খেলে একটু পা ফোলা ভাব আসতেই পারে। ধরুন, এরপর আপনি কোনও ব্যথার ওষুধ খাচ্ছেন। সেই ব্যথার ওষুধে অনেক সময় পা ফোলা ভাব বেড়ে যায়। আপনার ফোলা ভাব আগেই ছিল, সেই ফোলা ভাবটা আরও বেড়ে গেল। এইভাবে একটা ওষুধ অন্য ওষুধের সাইড এফেক্টকে বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার ধরুন, একজন রোগীর কিডনির রোগ আছে, আর উনি ব্যথার জন্য পেইন কিলার খাচ্ছেন। এটি কিডনি রোগকে আরও খারাপ করতে পারে।

আরও পড়ুন-ট্রাফিক গার্ডের ওসির জন্যই সঠিকসময় পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী!

অসমাপ্ত অ্যান্টিবায়োটিক
যখন অ্যান্টিবায়োটিক-এর কোর্স কমপ্লিট করা হয় না বা ডোজ কম দেওয়া হয়, তখন যে ব্যাকটিরিয়ার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকটা দেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যাকটিরিয়াটার ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স স্ট্রেন’ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে
ডাক্তারবাবুর পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে, ঠিক ডোজে এবং ঠিক সময়মতো। যখনি কোনও ডাক্তারবাবুর কাছে যাবেন, বর্তমানে ব্যবহৃত প্রেসক্রিপশন, রিপোর্ট এবং সমস্ত ওষুধ নিয়ে যেতে হবে। সেগুলো দেখালে উনি ঠিকমতো ওষুধ লিখে দেবেন। আগে ওষুধ খাওয়ার পর যদি কোনও অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে ডাক্তারবাবুকে জানাতে ভুলবেন না। ওষুধ খেয়ে যদি কোনও সমস্যায় ভোগেন, দ্রুত ডাক্তারবাবুর সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। বলতে হবে, কী সমস্যা হচ্ছে। তাহলে উনি বুঝতে পারবেন এটা ওষুধ সম্পর্কিত সমস্যা নাকি অন্য কোনও সমস্যা। যখন কোনও ওভার দ্য কাউন্টার মেডিসিন ব্যবহার করা হবে, সেই ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের জন্য ওভার দ্য কাউন্টার মেডিসিন ব্যবহার করতে হবে। অন্য কারও (নন-মেডিক্যাল ব্যক্তির) পরামর্শমতো বা অন্য ব্যক্তির মেডিসিন খাওয়া যাবে না। যদি আপনি অনেকগুলি ওষুধ খাওয়ার মধ্যে থাকেন, তাহলে আপনি ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজিস্টের সঙ্গে কনসাল্ট করতে পারেন। তাতে আপনার ওষুধের সংখ্যা কমে যেতে পারে। উল্লেখ্য, কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি ওপিডি প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শুক্রবার চলছে। যেখানে আপনি এই ধরনের পরিষেবা পেতে পারেন।

Latest article