মা হওয়া নয় মুখের কথা

সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন? এর জন্য জরুরি পূর্বপ্রস্তুতি এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্ক্রিনিং। পাকাপোক্ত প্ল্যানিং সঙ্গে অ্যান্টি নেটাল কেয়ারই সুস্থ শিশুর জন্মের চাবিকাঠি। গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভকালীন চেক আপ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সাবধানতা ও যত্ন ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পল্লব গাঙ্গুলি। লিখছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

শিশুর জন্ম দেওয়া মুখের কথা নয়। দশমাস একটি প্রাণকে গর্ভে ধারণ করার মধ্যে যেমন আনন্দ রয়েছে তেমনই রয়েছে ভয়। একটু অসতর্ক হলেই বিপদ। সেই কারণেই প্রাচীনকালে যখন চিকিৎসা ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না তখন প্রসবের সময় আসন্ন হলে গর্ভবতী নারীকে সাধ আয়োজন করে তাঁর পছন্দের খাবারগুলো খাইয়ে দেওয়া হত, কারণ অনেক সময়ই মা আর ফিরতেন না। কিন্তু যুগ বদলেছে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের দাক্ষিণ্যে সন্তানপ্রসব আজ আর কোনও জটিল বিষয় নয়। এখন বাবা-মা হওয়ার আগে পাকাপোক্ত প্ল্যানিং করেই ময়দানে নামছেন দম্পতিরা, বিশেষ করে হবু মা। ঠিকঠাক প্রেগন্যান্সি প্ল্যানিং এবং অ্যান্টি নেটাল কেয়ারে কী কী খেয়াল রাখবেন জেনে নেওয়া যাক।

আরও পড়ুন-দ্য আর্চিস

পূর্বপ্রস্তুতি
সন্তান নেওয়ার আগে তিনটে পরীক্ষা করতেই হবে।
যিনি সন্তান নেবেন প্রথমেই দেখতে হবে সেই হবু মা রুবেলা ইমিউন কি না।
তিনি থ্যালাসেমিয়ার কেরিয়ার কি না।
আর হবু মা-র কোনও সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ আছে কি না, যেমন এইচআইভি বা হেপাটাইটিস বি ইত্যাদি।
এই বেসিক পরীক্ষাগুলো করার পর যদি দেখা যায় হবু মা থ্যালাসেমিয়ার কেরিয়ার তাহলে সঙ্গে সঙ্গে হাজব্যান্ডের থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করতে হবে।
রুবেলা ইমিউন না থাকলে তাকে রুবেলা ভ্যাকসিন দিতে হবে। রুবেলা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তিনি আগামী তিন থেকে চারমাস সন্তানধারণ করতে পারবেন না। কারণ প্রেগন্যান্সির মধ্যে যদি রুবেলা হয় তাহলে গর্ভস্থ শিশুর ম্যালফর্মেশন হতে পারে।

আরও পড়ুন-বি.শৃঙ্খলা তুঙ্গে, যোগীরাজ্যে ৫৫ বছর বয়সী মহিলার শ্লী.লতাহানি, যুবককে বেঁ.ধে মা.রধর গ্রামবাসীর

এবার যদি সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ঠিকঠাক থাকে তাহলে এই সময় থেকেই ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করতে হবে। এতে যখন তিনি গর্ভধারণ করবেন তখন তাঁর শরীরে আর ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি দেখা দেবে না।
এরপরবর্তী ধাপে পরীক্ষা করে দেখতে হবে হবু মায়ের অ্যানিমিয়া বা ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে কি না। সেই অনুযায়ী তখন আয়রন সাপ্লিমেন্ট বা ভিটামিন ডি দেওয়া হবে। অর্থাৎ পরিকল্পনার পরে তিনি যখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে আসছেন তখন সেই চিকিৎসকের লক্ষ্য থাকবে সেই হবু মাকে সবরকম ক্লিনিকাল সাপোর্ট দিয়ে রাখা যাতে তিনি সুস্থ সন্তান গর্ভে ধারণ করতে পারেন।
এখন বহু মেয়েই ধূমপান করেন, অ্যালকোহল নেন। সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনার পরে এই সময় থেকেই ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যেস থাকলে তা বন্ধ করে দিতে হবে।

আরও পড়ুন-আজ ডার্বি

যিনি ইতিমধ্যেই সন্তানসম্ভবা
যিনি অপরিকল্পিতভাবে সন্তান নিয়েছেন। অর্থাৎ প্রেগন্যান্ট জানার পর চিকিৎসকের কাছে এসছেন। তখন তাঁকে ফলিক অ্যাসিড দেওয়া শুরু করে দেন চিকিৎসক। যেটা খুবই এসেনশিয়াল।
এর পাশাপাশি পাইরিডক্সিন জাতীয় ওষুধ এবং ভিটামিন বি গ্রুপের ওষুধও প্রেসক্রাইব করেন চিকিৎসক। এই ধরনের ওষুধগুলো মায়ের বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া প্রতিরোধ করে।
এর সঙ্গে তাঁর কিছু রুটিন টেস্ট করানো জরুরি। যা সাধারণত চিকিৎসকই বলে দেন। যেমন— কমপ্লিট হিমোগ্রাম, ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, এসজিওটি, এসজিপিটি, ফাস্টিং ব্লাডসুগার, থাইরয়েড, সেরোলজি ইত্যাদি স্ক্রিনিং করানো হয়। এর সঙ্গে ব্লাড গ্রুপটাও দেখে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন-তৃণমূলের তিন দাবিতে সংসদ আবার উত্তাল

৮ থেকে ১২ সপ্তাহ
সন্তানসম্ভবা মায়ের ফার্স্ট ডেট অফ লাস্ট পিরিয়ডের সময় থেকে আট থেকে বারো সপ্তাহের মধ্যে (কারণ অনেকেই একটা পিরিয়ড মিস করেও বুঝতে পারেন না, দেরি করে আসেন) একটা ইউএসজি করা জরুরি, যার নাম ডেটিং স্ক্যান। এর থেকে ডেট অর্থাৎ গর্ভস্থ ভ্রূণের বয়স এবং সেই শিশুর অবস্থান বা পজিশন ভাল করে বুঝতে পারা যায়।
হবু মায়ের বয়স ৩৫ বছর বা তার বেশি হলে ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারেই একটা ক্রোমোজোমাল স্ক্রিনিং করা জরুরি। একটি খরচসাধ্য পরীক্ষা কিন্তু করে নিলে ভাল। এতে শিশুর ক্রোমোজোমাল সমস্যা যেমন ডাউন সিনড্রোম, এডওয়ার্ড সিনড্রোম, পাটাউ সিনড্রোম ইত্যাদি থাকলে তা ধরা পড়ে। যদি বারো সপ্তাহ পেরিয়ে যায় কোনওভাবে তাহলে তখন কোয়াড্রিপল স্ক্রিনিং করা যেতে পারে। এতেও ত্রুটি ধরা পড়বে। যদিও এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক নয়।
উপসর্গ
এইসময় একেবারে প্রথমদিকে নশিয়া অর্থাৎ একটা গা-গুলোনো বমিভাব এবং বমি হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে মর্নিং সিকনেস— সেটা দেখা যায়।
টুইন প্রেগন্যান্সি হলে এই উপসর্গ আরও বেশি হয়। এই সময় কারও কারও এমন বমি হয় যে হাসপাতালে ভর্তি করে স্যালাইনও দিতে হতে পারে।
এই ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ফলিক অ্যাসিড যেন বন্ধ না হয় এবং ডিহাইড্রেশন যেন না হয়ে যায়। এছাড়া এইসময় খুব দ্রুত ব্লাড প্রেশার ফল করে। ঘুম থেকে উঠতে গিয়ে হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গেল। তাই সতর্কতা খুব জরুরি। অনেকেরই এই সময় খুব অ্যাসিডিটিও হয়। মুখের স্বাদ বদলে যায়। যে-খাবারটা এতদিন দারুণ ভাল খেতেন দেখা গেল প্রেগন্যান্সিতে আর মুখেই তুলতে পারছেন না।
এবার হবু মায়ের ইতিহাসে যদি হাই রিস্ক কিছু না থাকে বা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কোনও হাই রিস্ক না থাকে তাহলে আয়রন এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট শুরু করতে হবে চোদ্দো সপ্তাহ থেকে। বিভিন্ন চিকিৎসক তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী এটা শুরু করেন। যদি রোগী অ্যানিমিক হন বা তাঁর ভিটামিনের অভাব থাকে তাহলে সেইসব ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট শুরু করে দেন চিকিৎসক।

আরও পড়ুন-রাজ্য জুড়ে চালু ৮ম দুয়ারে সরকার প্রথম দিনেই বিপুল সাড়া

১৪ থেকে ২৪ সপ্তাহে
এই পিরিয়ডে অ্যানোম্যালি স্ক্যান করতে হবে। এটাও আর একধরনের ইউএসজি-ই বা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি টেস্টই যা গর্ভস্থ শিশুর সূক্ষ্মতম অর্গানগুলোকেও দেখতে পাবে।
এই স্ক্যান বলে দেবে শিশুটির কোনও গঠনগত ত্রুটি রয়েছে কি না। যেমন এই স্ক্যানে ধরা পড়ল গর্ভস্থ শিশুর এমন একটা অ্যানোম্যালি রয়েছে যে জন্মেই তার মৃত্যু হতে পারে বা এমন একটি ত্রুটি নিয়ে জন্মাতে পারে যার কোনও চিকিৎসা নেই। যদি এমন অ্যানোম্যালি থাকে যে জন্মানোর পর শিশুর সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে বাবা-মা-ই সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা কী করতে চান। অ্যাবরশন এখন ২৪ সপ্তাহের মধ্যে করা সম্ভব। ধীরে-সুস্থে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ধরা যাক কোনও শিশুর এই টেস্টে খুব ছোট্ট ত্রুটি ধরা পড়ল যেমন শিশুটির পা সামান্য বাঁকা তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটির জন্ম দেবেন মা এবং পরবর্তীতে তার চিকিৎসা করাবেন।
এই সময় মা পুষ্টিকর খাবার খাবেন। ওআরএস-এর জল খেতে হবে। সারাদিনে প্রচুর জল খাবেন অর্থাৎ হাইড্রেটেড থাকবেন।
হালকা ব্যায়াম, হাঁটাচলা, বাড়ির সাধারণ কাজকর্ম সব করবেন। প্রেগন্যান্সি মানেই বিশ্রাম— এই ধারণা রয়েছে বহু মানুষের মধ্যে। এটা ভুল ধারণা। সারাদিন কাজের মধ্যে থাকতে হবে।
শুয়ে থাকা একেবারেই নয় যদি না তাঁর কোনও বড়ধরনের সমস্যা থেকে থাকে। সেই পরামর্শ চিকিৎসকই দেবেন। মনে রাখা জরুরি প্রেগন্যান্সি কোনও রোগ নয়, এটা সম্পূর্ণ একটি হেলদি ফিজিওলজিক্যাল কন্ডিশন। তাই আনন্দ করে, কাজকর্মের মধ্যে থেকে, বই পড়ে, সিনেমা দেখে, অফিস গিয়ে সময়টা সবার সঙ্গে এনজয় করে কাটাতে হবে। একে বলা হয় মায়েদের হ্যাপি পিরিয়ড। তবে ছোটখাটো সমস্যা থাকবেই যেমন গা-হাত-পা ব্যথা, পেটের বাঁদিকে টান ধরা, মাসল ক্রাম্প ধরা ইত্যাদি যা নিয়ে ভাবার কারণ নেই।

আরও পড়ুন-জয়ে ফিরল মোহনবাগান

২৭ ও ২৮ সপ্তাহে
সাতাশ সপ্তাহে টিটেনাস, ডিপথেরিয়া এবং পাটোসিস বা হুপিং কাফ— এই তিনটে ভ্যাকসিন দিতে হবে এর সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়। কারণ এই সময় মায়ের ইমিউনিটি কমে যায় তাই গাইডলাইন অনুযায়ী বলা হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন দেওয়া ভাল।
আটাশ সপ্তাহে একটা হিমোগ্লোবিন টেস্ট করতে হবে। যিনি অ্যানিমিক ছিলেন তিনি তখনও অ্যানিমিক রয়েছেন কি না সেটা দেখতে এই টেস্ট জরুরি। এই পিরিয়ডে ব্লাড সুগার টেস্টও করতে হবে কারণ অনেকের ক্ষেত্রেই এটা দেখা যায় প্রথমে হয়তো সুগার ছিল না কিন্তু এই সময় সুগার ধরা পড়ে। এটাকে বলে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা প্রেগন্যান্সি ইনডিউসড ডায়াবেটিস বলে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চার জন্মের পরেই এই ডায়াবেটিস আর থাকে না।
থাইরয়েড টেস্ট করতে হবে কারণ এই ক্ষেত্রেও প্রথমে হয়তো থাইরয়েড ছিল না কিন্তু এই সময় থাইরয়েড ধরা পড়ল। এবার সেই অনুযায়ী মেডিসিন চলবে। এই গোটা সময়টার মধ্যে প্রতিমাসে একবার করে অ্যান্টিনেটাল কেয়ার ভীষণ জরুরি। অর্থাৎ চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্সকে দেখাতে হবে। গর্ভকালীন রুটিন চেকআপ যাকে বলে।
এই সময় মায়ের ব্লাড প্রেশার, পালস, হার্ট সাউন্ড, বেবির পজিশন, তার গ্রোথ মোটামুটি ঠিকঠাক আছে কি না ইত্যাদি ক্লিনিক্যাল এগজামিনেশনের মাধ্যমে দেখবেন বিশেষজ্ঞ।
২৮ থেকে ৩৪ সপ্তাহে
মায়ের ক্লিনিকাল এগজামিনেশন হয়ে গেলে এই পিরিয়ডে শিশুর একটা গ্রোথ এগজামিনেশন করতে হয়। মাতৃগর্ভে তার বাড়বৃদ্ধি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সে মায়ের শরীর থেকে খাদ্য এবং পুষ্টি ঠিকমতো পাচ্ছে কি না, অক্সিজেন পাচ্ছে কি না। সেটা দেখা হয়।
যদি সেই পরীক্ষায় দেখা যায় গর্ভস্থ শিশু একটু ছোট অর্থাৎ সময়সীমা অনুযায়ী তার বাড়বৃদ্ধি হয়নি তাহলে কিন্তু ধরে নিতে হবে সে ঠিকমতো খাদ্য, পুষ্টি বা অক্সিজেন পাচ্ছে না। আবার অনেক সময় এই স্ক্রিনিংয়ে দেখা যায় বেবি খুব বড়সড় হয়ে গেছে এটা অনেক সময় মায়ের সুগার, ব্লাড প্রেশার থাকলে হয়। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন চিকিৎসক। কারণ এটার উপরেই নির্ভর করছে শিশুটির প্রসব বা ডেলিভারি জনিত কমপ্লিকেশন বা জটিলতা।
যে গর্ভস্থ শিশুর ওজন বাড়েনি ছোট সে তো এমনিতেই অক্সিজেন পাচ্ছে না তাহলে ধরে নিতে হবে নর্মাল ডেলিভারি সে বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারবে না বা নর্মাল লেবারে তাকে রাখা যাবে না। আবার উল্টোদিকে যদি গর্ভস্থ শিশু স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বড় হয়ে গেছে তার নর্মাল ডেলিভারির সম্ভাবনা খুবই কম এক্ষেত্রে মায়ের পেলভিসের মাপ কত তার উপর নির্ভর করবে নর্মাল ডেলিভারি সম্ভব কি না। এটা হচ্ছে ডেলিভারির প্রস্তুতির সময়।

আরও পড়ুন-তৃণমূলের মহিলাদের সংঘবদ্ধ শপথ: টানা ৪৫ দিনের কর্মসূচি, পাড়ায় বৈঠক, তুমুল উৎসাহ

যদি সব ঠিক থাকে মায়ের সুগার, প্রেশার, থাইরয়েড নেই, শিশুর গ্রোথ ঠিকঠাক, মায়ের ভ্যাকসিন সব নেওয়া তখন ডেলিভারির জন্য এগোতে হবে। চিকিৎসক সবসময় চান সাঁইত্রিশ সপ্তাহ শেষ হলে তবেই যেন ডেলিভারি হয়। অর্থাৎ সাঁইত্রিশ সপ্তাহ থেকে একচল্লিশ সপ্তাহের মধ্যে হতে হবে। এটাই ডেলিভারির ঠিক সময়। নর্মাল ডেলিভারি এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
অনেক সময় চল্লিশ সপ্তাহ পেরোনোর পরেও লেবার পেন হচ্ছে না তখন অনেক সময় কৃত্রিম ভাবে পেন তুলিয়ে ডেলিভারি করান চিকিৎসক। একে বলে ইন্ডাকশন অফ লেবার। তবে এর চেয়ে নর্মাল ডেলিভারির জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য ভাল।
সিজারিয়ান সেকশন
সিজারিয়ান সেকশন নানা কারণে হয়। প্রথমত মায়ের খুব বেশি প্রেশার বা সুগার বেড়ে রয়েছে সেই ক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশনে যেতে হবে কারণ এক্ষেত্রে নর্মাল ডেলিভারিতে শিশুর জীবনহানির সম্ভাবনা থাকে। যদিও ইদানীং কারণ ছাড়াই সিজারিয়ান সেকশন বেশি হচ্ছে। প্রসবযন্ত্রণা ভুগতে চাইছেন না অনেক মা-ই। বেশি বয়সে সন্তান হচ্ছে ফলে সিজার ছাড়া উপায় থাকছে না। বেবি খুব ছোট সেইক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশনে যাচ্ছেন চিকিৎসক। আবার সন্তান জন্মের নির্দিষ্ট শুভদিন বেছে নিচ্ছেন বাবা-মা-পরিবার, ফলে সিজার করা ছাড়া গতি নেই। তবে সিজার এখন খুব নিরাপদ একটি পদ্ধতি। এর ফলে মা এবং শিশুর মৃত্যুর হার খুব কমছে।

Latest article