প্রতিবেদন : উৎসবের আকাশে দুর্যোগের ভ্রুকুটি। যে আশঙ্কা নিয়ে বহুদিন ধরে চলছে জল্পনা, সেই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জন্মের লগ্ন উপস্থিত প্রায়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার কালীপুজোর দিনই সে বঙ্গোপসাগরের বুকে জন্ম নেবে। তারপর বাঁক নিয়ে সে এগিয়ে আসবে উপকূলের দিকে। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের ৭টি জেলা প্রবল ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়তে পারে। সেই বিপর্যয় থেকে রাজ্যবাসীকে রক্ষা করতে এখন থেকেই কোমর বাঁধছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন-ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ
সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এদিন সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ২৫-২৬ ভরা কোটালের সময় যাতে কোনও প্রতিমা নিরঞ্জন না করা হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলায় জেলাশাসকরা পরিস্থিতির অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারবেন। এব্যাপারে তাদের সবরকমের স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার এই ঝড়ের মোকাবিলা করতে নবান্নে বেলা সাড়ে ১২টায় বসতে চলেছে একটি বিশেষ বৈঠক। তাতে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপার, প্রশাসনিক আধিকারিকরা এবং জেলাশাসকরা।
আরও পড়ুন-উন্নয়নে মুছে যাবে বিজেপি
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সিত্রাংয়ের তাণ্ডবের কথা মাথায় রেখে সবক’টি জেলাতেই সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে ইতিমধ্যে। সেই সঙ্গে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি এই ৭টি জেলায় মোট ১২টি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে শুক্রবার থেকেই। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ ও সন্দেশখালিতে থাকবে ২টি টিম। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় থাকছে ৩টি টিম। সেগুলি মোতায়েন করা হচ্ছে কাকদ্বীপ, কুলতলি ও গোসাবায়।
আরও পড়ুন-দীপাবলির আলো জ্বালালেন মুখ্যমন্ত্রী
পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১, রামনগর-২ ও হলদিয়া এই ৩ জায়গায় থাকবে ৩টি বাহিনী। বাকি ৪টি টিম মোতায়েন করা হবে কলকাতা, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলি জেলায়। আপাতত প্রাথমিক যে আভাষ মিলেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় শনিবার থেকেই আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে দেবে। সঙ্গে হালকা বৃষ্টিও হবে। বইবে দমকা হাওয়াও। রবিবার থেকে কলকাতা সহ উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলাতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। সোমবার উপকূলবর্তী দুই জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ওই দিন দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর সময় যতই গড়াবে ততই বৃষ্টি ও ঝড়ের বেগ বাড়বে। মঙ্গল ও বুধবার অতি ভারী বৃষ্টির মুখে পড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাই। সঙ্গে থাকবে ঝোড়ো হাওয়া।
আরও পড়ুন-খিদেয় ভুগছে ভারত, এটাই বিজেপির একমাত্র সাফল্য
সোমবার থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকছে। সোমবার কালীপুজোর দিনে অমাবস্যার কোটাল থাকায় সেদিন সুন্দরবনের নদীগুলিতেও জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকছে।